বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও জনগণের প্রয়োজন অনুযায়ী সহায়তা প্রদানের জন্য প্রস্তুত থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জাতিসংঘ। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ মহাসচিবের উপমুখপাত্র ফারহান হক এই তথ্য জানান।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক বাংলাদেশে চলমান নতুন বিক্ষোভ ও সহিংসতার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। বিশেষ করে, স্বাধীনতাসংগ্রামের নেতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ এবং এতে সংঘটিত সহিংসতার বিষয়টি সামনে আনা হয়। সাংবাদিক জানতে চান, এ বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের কোনো মন্তব্য রয়েছে কি না।
ফারহান হক উত্তরে বলেন, জাতিসংঘের অবস্থান আগের মতোই থাকবে। তাঁরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার এবং নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর প্রতি আহ্বান জানান, যেন শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে কোনো সহিংসতা বা ক্ষতি না হয়।
অপর একটি প্রশ্নের জবাবে ফারহান হক জানান, সাবেক স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার গুলির নির্দেশের ঘটনায় প্রাণহানির ব্যাপারে জাতিসংঘ একটি তদন্ত দলের বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করা হয়। এ সম্পর্কে জাতিসংঘ মহাসচিবের মতামত জানতে চাওয়া হয়। ফারহান হক বলেন, তদন্ত দলের কাজ কী হবে তা দেখা প্রয়োজন এবং এ পর্যায়ে দলের সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করা সম্ভব নয়।
তিনি পরে বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও ক্ষমতার পালাবদলের পর প্রয়োজনীয় সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ আলোচনায় জবাবদিহি এবং মানবাধিকার বিষয়ক সহায়তার প্রাসঙ্গিকতা উঠে এসেছে।
ফারহান হক জানান, সাম্প্রতিক সহিংসতা ও অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তে সহায়তার জন্য জাতিসংঘের একটি দল আগামী সপ্তাহে ঢাকা সফরে যাবে। এই দলের উদ্দেশ্য হলো মানবাধিকার সুরক্ষা এবং বাংলাদেশে সফল উত্তরণের জন্য সহায়তা প্রদান করা।
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, জাতিসংঘের মহাসচিব কীভাবে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে একজন অংশীদার হিসেবে দেখে এবং বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা আনার জন্য জাতিসংঘের আরো কোনো ভূমিকা থাকবে কি না। একই সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভারতে বসে অপতথ্য ছড়ানো ও সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
ফারহান হক উত্তরে বলেন, “আমরা নিশ্চিত করতে পারি যে, আমরা প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ সরকারের এবং জনগণের সহায়তা দিতে প্রস্তুত। জাতিসংঘের উদ্দেশ্য হলো শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সহায়তা প্রদান করা।”