
ছবি: যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা প্রেস সচিব মাহফুজুল আলম
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে পরিচিত মাহফুজুল আলম (অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুযায়ী তার পদের ক্রীড়া উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা) মিরপুর শেরে-এর প্রেসিডেন্ট বক্সে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। ই-বাংলা স্টেডিয়াম। তবে মাহফুজুল আলম এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
গত ৩০ ডিসেম্বর ফরচুন বরিশাল ও দরবার রাজশাহীর মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে এবারের বিপিএল শুরু হয়েছে। সূত্র জানায়, মাহফুজ ও তার সঙ্গে থাকা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা ওইদিন সভাপতি বক্স ফারুক আহমেদের সঙ্গে কিছু বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনার বিষয়ে কথা বলেন। বিপিএলের উদ্বোধনী দিনে।
টিকিট নিয়ে বিভ্রান্তি, গ্যালারিতে আবু সাঈদ কর্নার তৈরিতে বিলম্ব এবং দর্শনার্থীদের বিনা মূল্যে পানি পান করার জন্য মনোমুগ্ধকর কর্নার এবং আহত ১০০ জনকে সৌজন্যমূলক টিকিট পেতে বিলম্বের বিষয়ে তারা বোর্ড সভাপতির কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। জুলাই-আগস্ট আন্দোলন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী প্রথম আলোকে বলেন, এসব অব্যবস্থাপনায় ক্ষুব্ধ বিসিবি সভাপতি নিজেই। তবে কথাবার্তার একপর্যায়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সচিব মাহফুজ উত্তেজিত হয়ে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক, সাবেক প্রধান নির্বাচক ও বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে অভদ্র আচরণ করেন। তিনি ফারুককে আরও বলেন, ‘আমরা জানি আপনি কীভাবে বিসিবি সভাপতি হলেন।’
কথা কাটাকাটি শেষ হওয়ার আগেই উপস্থিত অন্যরা তাদের শান্ত করেন। এ সময় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ছাড়াও বিপিএলের টাইটেল স্পন্সর ডাচ-বাংলা ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা ও বিসিবির লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া প্রেস সচিব মাহফুজুল আলমমাহফুজ আলমের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে
বিসিবির এক কর্মকর্তা ফারুক আহমেদের অশালীন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রেস সচিবের এমন আচরণ বিসিবি সভাপতির জন্য বিব্রতকর এবং ক্রীড়া উপদেষ্টার ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন হচ্ছে। সবাই রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে রাষ্ট্রপতির বাক্সে আসেন। সেখানে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার গ্রহণযোগ্য নয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে মাহফুজের দাবি, তিনি বোর্ড সভাপতির সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেননি। গতকাল প্রথম আলোকে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো. খেলা শুরু হওয়ার সময় শহীদ আবু সাঈদ স্ট্যান্ডের ব্যানার টানানো হয়নি। এমসি কর্মসূচি শুরু করলেন, পাখিগুলো এখনো খাঁচায় আনা হয়নি- এমন অব্যবস্থাপনা আমরা অনেক দেখেছি। তা ছাড়া টিকিট ইস্যুতে গেট ভাঙা একটি কলঙ্কজনক ঘটনা। আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলছিলাম। এটা প্রত্যাশিত ছিল না. সবকিছু ভালো হতে পারতো। এসব অপপ্রয়োগের জন্য ক্রীড়া উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে মানুষের গালিগালাজ শোনা গেছে।
মাহফুজের সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তি রাষ্ট্রপতির বাক্সে দাঁড়িয়ে পুরো ঘটনাটি মোবাইল ফোনে রেকর্ড করেন। বিসিবির লোকজন তা দেখে সঙ্গে সঙ্গে তার কাছ থেকে মোবাইল ফোনটি নিয়ে রিবুট করে তাকে ফিরিয়ে দেয়।
ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে বিসিবি সভাপতির কাছ থেকে এসব বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া তার এখতিয়ারের মধ্যে আছে কি না জানতে চাইলে মাহফুজ বলেন, ‘শুধু আমি নই, যারা ছিলাম তারা সবাই এর (বিপিএল আয়োজন) সঙ্গে জড়িত। শিরোনাম একটি সমস্যা নয়. এবারের বিপিএল বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সব বৈঠকেই এসব ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিসিবি সভাপতির সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে মাহফুজ বলেন, উত্তপ্ত কিছু ঘটেনি। কথোপকথন স্বাভাবিক ছিল। উভয় পক্ষই আবেগঘন কথা বলেছে। অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি।
“আমরা জানি আপনি কীভাবে বিসিবি সভাপতি হলেন” – ফারুক আহমেদকে তিনি এমন কিছু বলেননি বলে দাবি করেন, “এমন কিছু ঘটেনি। কেউ যদি ভুল ব্যাখ্যা করে, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’
জানা গেছে, মাহফুজের সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তি প্রেসিডেন্সিয়াল বক্সে দাঁড়িয়ে পুরো ঘটনাটি মোবাইল ফোনে রেকর্ড করেন। বিসিবির লোকজন তা দেখার পর সঙ্গে সঙ্গে তার কাছ থেকে মোবাইল ফোনটি নিয়ে রিবুট করে তাকে ফিরিয়ে দেয়।
ভিডিও টেপ করা ব্যক্তি একটি মনোনীত পাস ছাড়াই রাষ্ট্রপতির বাক্সে প্রবেশ করেছিলেন। শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে তাকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করেছে বিসিবি।
সূত্র: প্রথম আলো