
একাত্তরের বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এস এম আনোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তারের পর ইউনুস সরকার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোয় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)।
রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটি জানায়, ৬৯ বছর বয়সী একজন বয়োজ্যেষ্ঠ নারীকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো বিচারিক স্বচ্ছতার পরিপন্থী ও মানবাধিকারের পরিপন্থী সিদ্ধান্ত—যা তাদের অত্যন্ত হতাশ করেছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১৯ জুলাই রাজধানীর রায়সাহেব বাজার এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার এক আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা। এ ঘটনার সাত মাস পর, ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি সূত্রাপুর থানায় আনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে অধ্যাপকের সম্পৃক্ততা থাকার কথা জানান।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা আনোয়ারা বেগমকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করলে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এইচআরএফবি জানিয়েছে, অধ্যাপক আনোয়ারা বেগম ২০২১ সালে অবসর নেওয়ার আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন এবং অতীতে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সংগঠনটি মনে করে, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৭ ধারা অনুযায়ী নারী ও প্রবীণ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে জামিন বিবেচনায় নেওয়ার সুযোগ ছিল, যা আদালত প্রয়োগ করেননি। আদালতের উপর সরকারের প্রভাব রয়েছে বলেও মনে করে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জুলাইয়ের-আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় যেভাবে একের পর এক মামলা দিয়ে শত শত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার ও কারাগারে পাঠানো হচ্ছে, তা মামলার গ্রহণযোগ্যতা ক্ষুণ্ন করতে পারে এবং প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের পথ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
সংগঠনটির মতে, যেকোনো অভিযোগ প্রমাণের জন্য নিরপেক্ষ তদন্ত অপরিহার্য। অবিলম্বে তাকে মুক্তিদানের আহ্বান জানিয়েছে এই মানবাধিকার সংগঠনটি