অপারেটিং সিস্টেম কি – অপারেটিং সিস্টেম হল এক ধরনের সিস্টেম সফটওয়্যার যার মাধ্যমে, ইউজার এবং কম্পিউটারের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন এবং ইন্টারফেস তৈরি করা যায়।
এছাড়াও, OS বা অপারেটিং সিস্টেম (full form of OS) হলো পুরো কম্পিউটারের একটি প্রধান প্রোগ্রাম, যার মাধ্যমে কম্পিউটারের অন্যান্য প্রোগ্রাম গুলিকে সঞ্চারিত করা যায়।
অপারেটিং সিস্টেম এর প্রকারভেদ
1. Batch Operating System
এই অপারেটিং সিস্টেমটি বর্তমানে আর ব্যবহার হয় না অনেক আগেই এই OS টি ব্যবহার করা হতো । বিশেষ করে মেইনফ্রেম কম্পিউটার এ এই অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হতো। এই operating system গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো ইউজার এবং কম্পিউটারের মধ্যে সরাসরি কোন যোগাযোগ ছিল না।
2. Multiprogramming Operating System
অনেক প্রোগ্রাম যখন একসাথে CPU দ্বারা execute হয় তখন তাকে মাল্টিপ্রোগ্রামিং অপারেটিং সিস্টেম বলে। অর্থাৎ multiprogramming operating system এর কাজ হল একটি কম্পিউটারে একসাথে অনেক প্রোগ্রাম পরিচালনা করা।
3. Multiprocessing Operating system
Multiprocessing নাম শুনে হয়তো আপনারা বুঝতে পারছেন এর মানে কি এর অর্থ হলো অনেকগুলো প্রসেসর। অর্থাৎ একাধিক প্রসেসর ব্যবহার করে কম্পিউটারে কাজ দ্রুত করার জন্য এ ধরনের প্রসেসর গুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এবং এক বা একাধিক central Processing unit (CPU) নাকি কম্পিউটার সিস্টেমে অবস্থান করে।
4. Real Time Operating System
real-time অপারেটিং সিস্টেম খুব অল্প সময়ের মধ্যে ইনপুট গুলোকে Process process প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেমে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রক্রিয়াকরণ আবশ্যক না হলে এই সিস্টেম ব্যর্থ হবে। রিয়েল টাইম অপারেটিং সিস্টেম এর উদাহরণ হল Airline traffic control systems, Network multimedia system, Robot ইত্যাদি।
5. Distributed Operating System
যে অপারেটিং সিস্টেম একাধিক কম্পিউটার সিস্টেমের মধ্যে Communication অর্থাৎ নিয়ন্ত্রণ করা হয় তাকে ডিস্ট্রিবিউটেড অপারেটিং সিস্টেম বলে। এক বা একাধিক কম্পিউটার সিস্টেমের মধ্যে একটি টি অপারেটিং সিস্টেম কাজ করে এবং তাদের মধ্যে communities করে। কম খরচে এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়।
6. Time Sharing Operating System
Time Sharing মানে হচ্ছে টাইম শেয়ার করা। তো এই ধরণের অপারেটিং সিস্টেমের কাজ হল CPU প্রত্যেক ব্যবহারকারীকে টাইম নির্ধারণ করা।
অপারেটিং সিস্টেমের বৈশিষ্ট্য
অপারেটিং সিস্টেম এর বৈশিষ্ট্যগুলো নিচে আলোচনা করা হলো
• অপারেটিং সিস্টেম বা OS তাহলে একটা সিস্টেম সফটওয়্যার।
• কম্পিউটার সিস্টেমের সমস্ত কাজ কিভাবে পরিচালনা করতে হবে তা অপারেটিং সিস্টেমের প্রোগ্রামে করা থাকে।
• Operating System কম্পিউটার হার্ডওয়ার এবং ব্যবহারকারীর মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করে।
• প্রত্যেকটি কম্পিউটারে প্রথমে অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করতে হয় কারণ OS ছাড়া কম্পিউটারে কাজ করা সম্ভব নয়।
• OS কম্পিউটারের বিভিন্ন ধরনের resource এবং information কে সুরক্ষা প্রদান করে।
• সমস্ত অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার ক চালানোর দায়িত্ব operating system এর।
কিছু অপারেটিং সিস্টেমের তালিকা
এখানে যে সকল অপারেটিং সিস্টেমের নামগুলি বলা হয়েছে, এই সকল অপারেটিং সিস্টেম সবথেকে বেশি ব্যবহৃত হয়।
- Windows OS
- Mac OS
- Android OS
- iOS
- Linux OS
- Ubuntu
- MS-DOS
- Symbian OS
চিত্রভিত্তিক বা গ্রাফিক্যাল অপারেটিং সিস্টেমের বৈশিষ্ট্য :-
1. ইমেজ-ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমে কম্পিউটার চালু হওয়ার পর ডেস্কটপে বিভিন্ন প্রোগ্রাম আইকন বা চিহ্ন থাকে।2. প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলী বিভিন্ন আইকন এবং পুল ডাউন মেনু কমান্ড ব্যবহার করে কম্পিউটারে দেওয়া হয়।
3. কমান্ডের মেনু এবং প্রতিটি মেনুতে অনেকগুলি পুল ডাউন মেনু কমান্ড থাকে।
4. আইকন এবং পুল ডাউন মেনু কমান্ড মাউস দিয়ে সক্রিয় করা যেতে পারে।
5. যখন নতুন হার্ডওয়্যার বা সফ্টওয়্যার সংযুক্ত করা হয়, কম্পিউটার স্বয়ংক্রিয়ভাবে সনাক্ত করে যে এটি কোথায় সংযুক্ত আছে।
6. নেটওয়ার্কিং, শেয়ারিং এবং ইন্টারনেট সিস্টেম খুব কার্যকর।
7. এই ধরনের সিস্টেমে ব্যবহারকারীকে কোন কমান্ড মুখস্ত করার প্রয়োজন হয় না।
8. মাল্টিমিডিয়া সিস্টেম কার্যকর।
9. এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেমের জন্য কম্পিউটারে বেশি মেমরির প্রয়োজন হয়।
অপারেটিং সিস্টেম এর বিশেষ কাজ
চলুন অপারেটিং সিস্টেমের কাজ কি এ বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি।
একটি অপারেটিং সিস্টেম নিম্নলিখিত কাজগুলি সম্পাদন করে:
রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট: মেমরি, প্রসেসর এবং I/O ডিভাইসের মতো হার্ডওয়্যার রিসোর্স পরিচালনা এবং বরাদ্দ করা।
মেমরি ম্যানেজমেন্ট: প্রতিটি প্রোগ্রাম চালানোর জন্য যথেষ্ট আছে এবং প্রোগ্রামগুলি একে অপরের সাথে হস্তক্ষেপ করে না তা নিশ্চিত করার জন্য কম্পিউটারের মেমরি পরিচালনা করা।
প্রসেস ম্যানেজমেন্ট: বিভিন্ন প্রোগ্রামের এক্সিকিউশন পরিচালনা করা এবং প্রোগ্রামগুলির মধ্যে সিঙ্ক্রোনাইজেশনের একটি উপায় প্রদান করা।
ফাইল ম্যানেজমেন্ট: কম্পিউটারের স্টোরেজ ডিভাইসে সংগঠন, স্টোরেজ এবং ফাইল পুনরুদ্ধার পরিচালনা করা।
যোগাযোগ: হার্ডওয়্যার এবং সফ্টওয়্যার উপাদানগুলির পাশাপাশি বিভিন্ন সফ্টওয়্যার উপাদানগুলির মধ্যে যোগাযোগের জন্য ব্যবস্থা প্রদান করা।
অপারেটিং সিস্টেমের কিছু উদাহরণ হল Microsoft Windows, macOS এবং Linux।
অপারেটিং সিস্টেম এর কাজ
1. Memory Management
মেমোরি মানেজমেন্ট হল operating system একটি function যা primary memory কে পরিচালনা করে। মেমোরি মানেজমেন্ট প্রতিটি মেমোরির অবস্থান ট্র্যাক করে এবং কোন প্রক্রিয়ার জন্য কত মেমোরি consume হবে তা operating system সিদ্ধান্ত নেই।
2. Process Management
প্রসেসর ম্যানেজমেন্ট হল কম্পিউটারে প্রসেস কি ম্যানেজ করো। যখন কম্পিউটারে আপনি একাধিক কাজ করবেন যেমন ব্রাউজারে আপনি কোন কাজ করছেন এবং সেই সাথে আপনি টাইপিং করার জন্য ওয়ার্ড প্যাডে কাজ করছেন ,গান শোনার জন্য আপনি ভিডিও প্লেয়ার ওপেন করেছেন তো এই এই কাজ গুলো সঠিকভাবে করে প্রসেসর ম্যানেজমেন্ট। কম্পিউটারে কোন কাজের জন্য প্রসেসর কতক্ষণ কাজ করবে এ সমস্ত কাজগুলো করে থেকে OS ।
3.Device Management
আপনার কম্পিউটারে যে external device গুলো আছে যেমন কিবোর্ড, মাউস, স্পিকার, প্রিন্টার এই ডিভাইস গুলোকে ম্যানেজ করার কাজ হল অপারেটিং সিস্টেমের। অর্থাৎ কম্পিউটার সিস্টেমের যতগুলো ইনপুট আউটপুট ডিভাইস রয়েছে তাদের সাথে communication কাজ করে OS ।
4. File Management
কম্পিউটারের হার্ডডিক্স এর যতগুলো ফাইল সেভ রয়েছে , যত ডাটা রয়েছে এছাড়া ফাইল সেভ করা, কপি করা সমস্ত কাজ এই অপারেটিং সিস্টেম থেকে হয়।
5. Security
অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারের সুরক্ষা প্রদানের সাহায্য করে। কম্পিউটারের যেকোন ধরণর Virus, Malware , Hacker এর হাত থেকে রক্ষা করে অপারেটিং সিস্টেম। আপনার কম্পিউটারে যদি অটোমেটিক ভাইরাস চলে আসে অপারেটিং সিস্টেম কিন্তু সেটি কি রুখে দেই।
অপারেটিং সিস্টেমের সুবিধা :-
1. অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারকে কার্যকরী এবং ব্যবহারযোগ্য করে তোলে।
2. প্রসেসর ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করে।
3. মেমরি পরিচালনা করে, যেমন ডেটা, প্রোগ্রাম আনয়ন করে এবং প্রধান মেমরিতে চালায়।
4. ইনপুট/আউটপুট ডিভাইস পরিচালনা করে, যেমন প্রিন্টার, ফ্লপি ডিস্ক, হার্ড ডিস্ক, ইঁদুর, কীবোর্ড, মনিটর ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় করে।
5. ফাইলগুলি পরিচালনা করে, যেমন মেমরিতে সংরক্ষিত বিভিন্ন ফাইল এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে স্থানান্তর ও পরিবর্তন করতে সহায়তা করে।
6. অপারেটিং সিস্টেম নির্ধারণ করে কোন কম্পিউটারের কাজগুলি প্রথমে সম্পাদিত হবে ইত্যাদি
অপারেটিং সিস্টেমের গুরুত্ব :-
অন্যান্য সফটওয়্যার বা প্রোগ্রামের মতো অপারেটিং সিস্টেমও এক ধরনের সফটওয়্যার। কম্পিউটার সিস্টেমের জনপ্রিয়তার পিছনে অপারেটিং সিস্টেমের গুরুত্ব রয়েছে।
কম্পিউটার বুট করা থেকে কম্পিউটার বন্ধ করা পর্যন্ত সবকিছুই অপারেটিং সিস্টেম দ্বারা তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রিত হয়। অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারের ব্যবহারকে সহজ করে তোলে। ফলে সাধারণ মানুষের জন্য এখন কম্পিউটার ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে। বিশেষ করে গ্রাফিক্যাল অপারেটিং সিস্টেমের কারণে এটি সম্ভব।
অপারেটিং সিস্টেম হার্ডওয়্যার এবং সফ্টওয়্যারের মধ্যে সেতু তৈরি করে। কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ কাজ পরিচালনার জন্য দায়ী। অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীর পরিবর্তে হার্ডওয়্যার দিয়ে সমস্ত কাজ করার জন্য দায়ী।
একটি কম্পিউটারে সব ধরনের সফটওয়্যার থাকে কিন্তু এটি একটি অপারেটিং সিস্টেম ছাড়া কাজ করে না। কম্পিউটারের সমস্ত কার্য সম্পাদনে অপারেটিং সিস্টেম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে – কম্পিউটারে প্রক্রিয়াকৃত তথ্য সংরক্ষণ, ফাইল সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ, বিভিন্ন ধরণের ত্রুটি নির্ণয়, সিস্টেম বিতরণ, তত্ত্বাবধান, ইনপুট এবং আউটপুট অপারেশন, প্রোগ্রাম পরিচালনা।
একটি অপারেটিং সিস্টেম (OS) হল সফ্টওয়্যারের একটি সংগ্রহ যা কম্পিউটার হার্ডওয়্যার সংস্থান পরিচালনা করে এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামগুলির জন্য সাধারণ পরিষেবা প্রদান করে। অপারেটিং সিস্টেম হল কম্পিউটার সিস্টেমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধরনের সিস্টেম সফটওয়্যার।
এই পোষ্টের রিলেটেড পোস্ট | |
হোমপেজে | এখানে ক্লিক করো |
অপারেটিং সিস্টেম কি FAQ
[sc_fs_multi_faq headline-0=”h2″ question-0=”অপারেটিং সিস্টেম কি ?” answer-0=”অপারেটিং সিস্টেম হল এক ধরনের সিস্টেম সফটওয়্যার যার মাধ্যমে, ইউজার এবং কম্পিউটারের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন এবং ইন্টারফেস তৈরি করা যায়।” image-0=”” headline-1=”h2″ question-1=”প্রথম অপারেটিং সিস্টেমের নাম কি ?” answer-1=”UNIX” image-1=”” headline-2=”h2″ question-2=”পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম কোনটি ?” answer-2=”Windows 95″ image-2=”” count=”3″ html=”true” css_class=””]