
নারীর যৌনাবেদনময়ীতা সৌন্দর্যের চেয়ে অনেক বেশিকিছু, তবে এটা একটা আপেক্ষিক বিষয়। কোনো পুরুষের কাছে যেটা যৌনাবেদনময়, অপরের কাছে সেটা যৌনাবেদনময় না-ও হতে পারে। কিংবা এর বিপরীত ঘটনাও ঘটতে পারে। যে বিষয়গুলোকে আকর্ষণীয় ভাবা হয়, তার সঙ্গে সামাজিক অবস্থান ও আর্থিক স্থিতিশীলতার একটি শক্ত ও গভীর সম্পর্ক আছে। ভালো পোশাক, সাজসজ্জা কিংবা সুস্থ থাকার জন্য আমরা অর্থ ব্যয় করা থাকি। নারীরা আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিদের সবসময় অসচ্ছলদের তুলনায় বেশি আকর্ষণীয় হিসেবে ভাবে। নারীরা এমন ব্যক্তিদের প্রতি আকৃষ্ট হয়, যে সব ব্যক্তি নারী ও তাদের সন্তানদের স্বস্তি ও আরামদায়ক জীবনের নিশ্চয়তা দিতে পারবে। নারীরা বিশ্বাস করে, সহজাত মহত্ত্ব রয়েছে এমন পুরুষরাই বেশি আকর্ষণীয়। তবে, আকর্ষণ ও যৌনাবেদন ঠিক এক জিনিস নয়। যৌনাবেদন একটি আপেক্ষিক বিষয়।
অনেক অ-যৌন গুণাবলি রয়েছে যা একজন নারীকে অবিশ্বাস্যভাবে যৌনাবেদনময়ী করে তোলে। পুরুষ যে কারণে কোনো নারীকে যৌনাবেদনময়ী মনে না করে, সেই একই কারণে অন্য পুরুষ সেই নারীকে যৌনাবেদনময়ী মনে করতে পারে এবং তার সঙ্গে ভালো সময় কাটাতে পারে। যদি আপনি কোনো কারণে যৌনাবেদনময়ী মনে করেন, তাহলে আপনার চিন্তাভাবনা একটু পুনর্মূল্যায়ন করা উচিত। প্রত্যেককে তার নিজের কথা বলতে হবে, কিন্তু সঠিক কারণে একজন নারীকে উপলব্ধি করতে না পারলে আফসোস থেকে যাবে।
এক. হাঁটার ভঙ্গি
নিতম্বের দোল খাওয়ায় ডুবে যাওয়ার ছবিটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। এ বিষয়টা নিয়ে কথা হচ্ছে না। এটা আসলে নারীর হাঁটাচলার ভঙ্গি নিয়ে কথা নয়। এটা আসলে নারীর ঘরে প্রবেশে তাৎক্ষণিকভাবে পুরুষ সঙ্গীর দৃষ্টি আকর্ষণ, সে বিষয়টি নিয়ে বলা। এটা হল নারীর গৃহে প্রবেশের কম্পন, যা পুরুষের চোখে সাধারণত দৃষ্টিগোচর হয় না; বিষয়টি সম্পূর্ণ এমন যে পুরুষ সঙ্গী নারীর উপস্থিতি অনুভব করতে পারে।
দুই. নারীর চোখ পুরুষের দিকে নজর দেয় না, বরং পুরুষের মনোজগতে উঁকি দেয়
মানুষ সবসময় বাছ-বিচার করে। নিজেদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে এই জিনিসগুলো মানুষ রপ্ত করে। বাইরে থেকে যে কাউকে বিচার করা সহজ। অন্যদিকে, কারো অন্তর্সত্তাকে বিচার করা সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। কোনো নারী পুরুষকে বিচার করে না। নারী সাধারণত পুরুষকে অবলোকন করে। তবে এ নারীর অবলোকন কোনো পুরুষের ভেতরের জগতকে গভীরভাবে নাড়া দিতে পারে।
তিন. নারীর সব কাজে থাবে তার আত্মবিশ্বাস
আত্মবিশ্বাসী হওয়া এক জিনিস, যে কেউ আত্মবিশ্বাসী হতে পারে। কিন্তু এটাই নারীকে যৌনাবেদনময়ী করে না। আত্মবিশ্বাস থাকা মানেই সেই নারী আত্মবিশ্বাসের যোগ্য এবং এটাই নারীকে যৌনাবেদনময়ী করে তোলে। একজন নারীর মধ্যে সবচেয়ে যৌনাবেদনময়ী গুণ হল তার আত্মবিশ্বাসের যথার্থতা। আত্মবিশ্বাসী নারীর চেয়ে যৌনাবেদনময়ী আর কিছুই নেই। এমন নারীকে দেখলেই বোঝা যাবে- তার আত্মবিশ্বাসী হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে।
চার. সবসময় কাছের মানুষদের সহায়তার জন্য সময় বের করেন
আপনি কি একজন যৌনাবেদনময়ী নারী খুঁজে পেতে চান? এমন একজন নারী খুঁজে বের করুন যিনি যত্নশীল। এমন একজন নারী যিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে উদারতার পরিচয় দেন। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের প্রয়োজনে এমন নারী কখনই খুব বেশি ব্যস্ত থাকেন না কিংবা ব্যস্ততা দেখান না। তিনি সবসময় তাদের জন্য থাকেন। তবে এমন নয়- তিনি তাদের উপকার করার জন্য করছেন। বরং তিনি স্বাভাবিকভাবেই যত্ন নিতে আগ্রহী, তাই তিনি করছেন।
পাঁচ. কতটা আবেগ নিয়ে নারী জীবনযাপন করে
আবেগ যৌনাবেদনময়ী। এটা সঠিক, আবেগ ছাড়া ভালোবাসা ম্লান হয়ে যায়। আবেগ ছাড়া জীবন ম্লান হয়ে যায়। (Passion is sexy. It just is. Without passion, love fades. Without passion, life fades.) জীবনে এমন একজন থাকবে- যে কাজের অনেক প্রতি আগ্রহী, এমনকি তা যদি জীবনের ক্ষেত্রেও সামান্যতম জিনিসও হয়। এটা অবশ্যই জীবনে খুব ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। কারণ নারীর আবেগপ্রবণতা, তার সঙ্গীকে সম্ভবত আরও আবেগপ্রবণ হয়ে উঠতে সহায়তা করে। আবেগপ্রবণতা নারীকে যৌনাবেদনময়ী করে।
ছয়. নারী তার সঙ্গীকে কীভাবে ভালো মানুষ হতে আগ্রহী করে তোলে
যৌনাবেদনের একটি শক্তি আছে। এটা দ্বারা আমাদের চালিত। এটা আমাদের প্রভাবিত করে। যৌনাবেদন এমন একটি শক্তি- যা আমাদের উত্তেজিত করে এবং আকর্ষণ করে। এমনকি এটা আমাদের অনুপ্রাণিত করে। বরং সঙ্গী হারানোর ভয় যে কোনো মানুষকে নিখুঁত ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে অনুপ্রাণিত করে। অবশ্যই নারীর উদারতা ও উদ্দীপ্ত কথা তার সঙ্গীকে ব্যাপকভাবে সাহায্য করে। আসলে নারীকে তার সঙ্গীর জন্য কতটা প্রয়োজন- তা একজন ব্যক্তিকে পূর্ণাঙ্গ সত্তা হিসেবে বেড়ে উঠতে উদ্বুদ্ধ করে।
সাত. নারী যেভাবে শোনে
একজন ভালো শ্রোতা হওয়া কতটা যৌনাবেদনময়ী হতে পারে, তা বোঝা কোনো নারীর কঠিন হতে পারে। এটা বুঝতে পারা যায়। তবে সবসময় এটা বুঝতে পারা যায় না। বছরের পর বছর ধরে মানুষের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ ও কথোপকথনের পর বুঝতে পারা যায়, বেশিরভাগ মানুষই শোনে না। তারা কেবল শোনার জন্য শোনে না; তারা কেবল প্রতিক্রিয়া জানাতে যথেষ্ট পরিমাণে শোনে। বেশিরভাগ সময় লোকজন কথা বলে, তারা আসলে পরবর্তী সময় কখন কথা বলতে পারবে, সে জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে। একজন ভালো শ্রোতা হওয়া কতটা যৌনাবেদনময়ী, তা আপনি ততক্ষণ পর্যন্ত বুঝতে পারবেন না, যতক্ষণ না আপনি বুঝতে পারেন- এ গুণটি অবিশ্বাস্যভাবে বিরল।
আট. সে যেভাবে বিনিময় করে
এটা আসলে ভাগ-ভাটোয়ারার কাজ নয়, বরং নারী কোন পদ্ধতিতে কিংবা কীভাবে বিনিময় বা আদান-প্রদান করে- সে বিষয়টি আসলে এটা। নারী ভাগ নেয় না, কারণ সে মনে করে, এটা করেই তার সঠিক কাজ। অথবা নারী ‘শেয়ারিং ইজ কেয়ারিং’ শুনে বড় হয়েছে। কিংবা কোনো বাধ্যবাধকতা থেকে এসব করতে নারী বাধ্য হয়। যখন নারী স্যান্ডউইচ, আইসক্রিমের বাটি কিংবা কম্বল শেয়ার করে, তখন নারী সেই জিনিসগুলো তার সঙ্গীর সঙ্গে শেয়ার করে এমনটা নয়; বরং সে অভিজ্ঞতা শেয়ার করে; সে তার জীবন তার সঙ্গীর সঙ্গে শেয়ার।
নয়. নারী যেভাবে ভালোবাসে
নারী তার সঙ্গী যা তাকে দিয়েছে তার জন্য ভালোবাসে না, সে তার সঙ্গীকে শুধু অভিজ্ঞতা শেয়ারিংয়ের জন্য ভালোবাসে না। শুধু সঙ্গী নারীকে অনুভব করে কিংবা নারী তার সঙ্গীকে অনুভব করে- এ জন্য শুধু ভালোবাসাবাসি নয়। নারী তার সঙ্গীকে ভালোবাসে, কারণ যখন নারী তার সঙ্গীর অন্তরের দিকে তাকায় তখন সে বুঝতে পারে তার সঙ্গী ভালোবাসার যোগ্য একজন ব্যক্তি। এর মানে তোমার নারী সঙ্গী তোমাকে তোমার জন্য ভালোবাসে; এমনভাবে ভালোবাসে যা খুব কমসংখ্যকই করে বা কখনোই করবে না। সে তোমাকে আজীবন ভালোবাসে।
ভাষান্তর : ইমামুল ইসলাম (বিদেশি পত্রিকা অবলম্বনে)