উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সামরিক রাইফেল দিয়ে গুলি করে মুগ্ধকে হত্যা করা হয়

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo

নিহত মীর মুগ্ধ। ছবি: সংগৃহীত।

ঢাকা: জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৮ জুলাই উত্তরায় বিক্ষোভকারীদের মধ্যে পানি বিতরণের সময় ২৫ বছর বয়সী ছাত্র মীর মুগ্ধকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওইদিন উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যবহৃত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সামরিক রাইফেল থেকে মীর মুগ্ধের মাথায় গুলি করা হয়েছিল।

মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার (ওএইচসিএইচআর) বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ‘বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টের বিক্ষোভের সঙ্গে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন’ শীর্ষক তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তরায় সেদিন পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি’র বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে, ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য থেকে জানা গেছে যে, বিএনএস সেন্টার, আজমপুর, উত্তরা পূর্ব পুলিশ স্টেশন এবং মাইলস্টোন কলেজসহ উত্তরার বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনী অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করেছিল। সকালে একটি বড় বিক্ষোভের আগাম খবর পেয়ে ১৮ জুলাই সকালে র‌্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, বিজিবি, আনসার ও সশস্ত্র আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সহায়তায় পুলিশ বাহিনী উত্তরার বিএনএস সেন্টারে অবস্থান নেয়।

সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ এবং র‌্যাব বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। ওএইচসিএইচআর একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণে জানতে পেরেছে যে, একটি পুলিশ সাঁজোয়া যান বিক্ষোভকারীদের একটি দলকে ধাওয়া করছিল এবং পুলিশ অফিসাররা গাড়ি থেকে জনতার ওপর গুলি চালাচ্ছিল।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘দুপুরের পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে ওঠে। প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশ ও র‌্যাবকে বিভিন্ন অবস্থান থেকে সামরিক রাইফেল থেকে বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রাণঘাতী গুলি চালানোর বর্ণনা দিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ ও ছবিগুলো নিশ্চিত করে যে,উত্তরা থানার ছাদ থেকে পুলিশ গুলি চালাচ্ছিল।’ শত শত বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হন এবং গুলিবিদ্ধ বেশ কয়েকজন মার যায়। নিকটবর্তী একটি হাসপাতালে ৯১ জন আহত রোগী চিকিৎসা নিয়েছে এবং ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, যার মধ্যে পাঁচজন শিক্ষার্থী ছিলেন। চিকিৎসা বিবরণ ও তথ্য বিশ্লেষণ করে ওএইচসিএইচআর নিশ্চিত হয়েছে যে, পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যদের ব্যবহৃত প্রাণঘাতী গুলিতে তারা মারা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,‘নিহতদের মধ্যে মীর মুগ্ধও ছিলেন। ২৫ বছর বয়সী ছাত্র মুগ্ধ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে পানি বিতরণ করছিলেন। পড়ন্ত বিকেলের দিকে রাইফেল থেকে তার মাথায় প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করা হয়েছিল।’

ওএইচসিএইচআর একটি ভিডিও পেয়েছে যাতে দেখা গেছে যে, রবীন্দ্র সরণিতে মীর মুগ্ধকে বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে গুলি করার সময় ও স্থানটি রেকর্ড করা হয়েছে।

বাংলানিউজবিডিহাব/জিএস/এসআর

ওএইচসিএইচআর
জাতিসংঘের প্রতিবেদন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক
মীর মুগ্ধ হত্যা
সামরিক রাইফেল দিয়ে গুলি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।