
অন্তর্বর্তী সরকারের উপযুক্ত নির্বাচন দেওয়ার ক্ষমতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, আমরা সামনের দিনে মহা বিপদের আশঙ্কা করছি। দেশ ভালোভাবে চলছে না। সবদিক থেকে সবকিছু বন্ধ হয়ে পড়েছে, সবকিছু ভেঙে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে রংপুর নগরীর সেন পাড়াস্থ স্কাইভিউ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের আরও বলেন, আমরা বারবার বলে আসছি, সরকারে থেকে দল গঠন করা যাবে না। অথচ এই সরকার দল গঠন করেছে। আইনগত বৈধতা না থাকলেও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় তারা দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সব জায়গায় তাদের প্রায়োরিটি দেওয়া হচ্ছে। সামনে নির্বাচন হলে কীভাবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে? এজন্য আমরা বিশ্বাস করি উপযুক্ত নির্বাচন দেওয়ার ক্ষমতা এই সরকারের নেই এবং এই সরকারের ইচ্ছেও নেই।
জিএম কাদের বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বুঝে করছেন নাকি না বুঝে করছেন জানিনা। কিন্তু উনি এবং ওনার সঙ্গে যারা তরুণ নেতৃত্ব, যাদেরকে উনি ওদের অভিভাবক ও নিয়োগকর্তা হিসেবে নিজেকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন, তারা মিলে দেশকে বিভক্ত করে ফেলছে। এই বিভক্তিটি দিনে দিনে খুব শক্তিশালী হচ্ছে এবং একজনের ওপর আরেকজনের সরাসরি একটি সংঘাতপূর্ণ পরিস্তিতির সৃষ্টি হয়েছে। সামনের দিকে সেটা বড় ধরনের সংঘাতের সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি।
জিএম কাদের দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ রাজনীতির উদাহরণ টেনে বলেন, সেখানে কালো এবং সাদা দুটো আলাদা শ্রেণির বিভক্তি করা হয়েছে। এদেশেও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একটা শক্তি আর ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে আরেকটা বিভক্তি করা হয়েছে।ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যারা তারা হোয়াইট এবং ফ্যাসিবাদের দোসর যারা তারা ব্ল্যাক। এই ব্ল্যাক এবং হোয়াইটের মধ্যে আইন প্রয়োগের ভিন্নতা দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।আমরা এসবের তীব্র নিন্দা জানাই।
জাতীয় পার্টি সব আন্দোলনে জনগণের পক্ষে ছিল উল্লেখ করে জাপা চেয়ারম্যান আরও বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সময় জাতীয় পার্টি জনগণের পক্ষে ছিল। এই হত্যাকাণ্ডে আমার ভাগ্নে মারা গেছে। শাপলা চত্বরের আন্দোলন আমরা সরাসরি হেফাজতকে সমর্থন দিয়েছিলাম। হেফাজতের মানুষকে পানি খাইয়েছি। ছাত্র আন্দোলনে আমাদের সর্বাত্মকসহযোগিতা ছিল।
বিগত নির্বাচন সম্পর্কে জিএম কাদের বলেন, আমার কোন প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে যেতে চাইনি। সেসব নির্বাচনে আমাদের যেতে বাধ্য করা হয়েছে। বর্তমানে আমাদের মিছিল-মিটিং করতে দেয়া হচ্ছে না। বাধার কারণে আমরা কাউন্সিল করতে পারছিনা। আমাদের নেতাকর্মীদের বিনা কারণে জেলে নিচ্ছে। বিনা বিচার ও চার্জশিটে নেতাকর্মীরা মাসের পর মাস জেল খাটছে।
এ সময় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইয়াসির, আজমল হোসেন লেবু, জেলা যুবসংহতির সভাপতি হাসানুজ্জামান নাজিম প্রমুখ।