
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে স্থানীয়দের বাধায় পণ্ড হয়েছে প্রয়াত বাউল শিল্পী রশিদ সরকারের ‘সাধুর মেলা’।শুক্রবার দুপুরে পৌরসভার আজিমপুরে দুদিনের এ মেলায় স্থানীয়রা বাধা দিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
সিংগাইর থানা ওসি জাহিদুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার ফকির মওলা দরবার শরিফে রশিদ সরকারের সাধুর মেলাকে কেন্দ্র করে দরবারের ভক্ত ও স্থানীয়দের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে নিরাপত্তার কারণে রশিদ সরকারের স্ত্রী শিরিন রশিদ (৬০) ও বড় ছেলে সিংগাইর পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু নাঈম মো. বাশারের স্ত্রী শাহানারা আক্তারকে (৩৭) থানায় নিয়ে গেছে। থানা থেকে সাধুর মেলার কোনো অনুমতি নেই বলেও জানান ওসি।
দরবারের কয়েকজন ভক্ত বলেন, গোবিন্দলসহ স্থানীয় লোকজন তাদের ওপর চড়াও হন। এদিকে, ফেইসবুকে ছড়ানো একটি ভিডিওতে স্থানীয়দের লাঠি হাতে দেখা গেছে। দরবারের ভক্তদেরও দেখা গেছে পাল্টা অবস্থান নিতে।
দরবারের ভক্ত ও বাউল শিল্পী আনোয়ার সরকার বলেন, বাউল সম্রাট রশিদ সরকার জীবিত থাকা অবস্থায় প্রায় ২৫-৩০ বছর ধরে আজিমপুরে সাধুর মেলা অনুষ্ঠিত হয়। আজও মেলা উপলক্ষে শত শত ভক্ত এসেছিলেন। গোবিন্দল এলাকার লোকজনসহ অনেক লোকজন এসে মেলা বন্ধ করে দেয়।
দরবারের আশেকান জামিল খান বলেন, গোবিন্দল এলাকার লোকজনসহ বিএনপি নেতা মিঠু চেয়ারম্যান ও সাবেক একজন মেয়রও আসেন। এসে তারা মেলায় বাধা দেন। এসময় দরবারের ভক্তরাও উল্টো দিকে অবস্থান নেন।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান মিঠু বলেন, কীসের মেলা? এইডা হল গাঁজার মেলা। মেলায় পাঁচ টনেরও বেশি গাঁজা ফুরায়। এ গাঁজার মেলা হতে দেওয়া যাবে না। আজ স্থানীয়রা মিছিল নিয়ে গাঁজার মেলার ওখানে যায়। আমরা স্থানীয়দের ফেরত নিয়ে এসেছি। স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভে ছিল। আজ তারা সেখানে গিয়েছিল।
বাউল রশিদ সরকার ২০০৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হন। পরে আজিমপুর ফকির মওলা দরবার শরিফে মা-বাবা ও ওস্তাদ আনোয়ার দেওয়ানের পাশে তিনি সমাহিত হন।
প্রসঙ্গত, রশিদ সরকার প্রয়াত হওয়ার পর প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি মেলার আয়োজন হত তার বড় ছেলে সিংগাইর পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু নাঈম মো. বাশারের নেতৃত্বে। তবে ৫ অগাস্টের পর থেকে নাঈম বাশার আত্মগোপনে রয়েছেন।