বাংলাদেশের সকল আইনসৃঙ্খলা বাহিনীদের আমাদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ।
এ কেমন বাংলাদেশ ছিল শুধুমাত্র একজন মানুষের ভয়ে দেশের সাধারণ মানুষ বাইরে বেরতে পারবে না । এদের যেন ছাড়া না হয়।
কিশোর গ্যাংদের উপর নজর রাখা প্রয়োজন।
=============
২০২৪ সালে মানুষের কবজি কেটে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে নিজেকে ‘কবজি কাটা গ্রুপের’ প্রধান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন আনোয়ার
আধিপত্য বিস্তারের জেরে বিভিন্ন সময়ে অন্তত সাত জনের কবজি কেটে ‘উল্লাস’ করা এবং সেসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আলোচনায় আসা ঢাকার মোহাম্মদপুরের সন্ত্রাসী মো. আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
‘কবজি কাটা গ্রুপের’ প্রধান আনোয়ার ওরফে শুটার আনোয়ার ওরফে কবজি কাটা আনোয়ারকে সোমবার ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে আদাবর থেকে তার দুই সহযোগী মো. ইমন (২০) ও মো. ফরিদকেও (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি সামুরাই, দুটি ছুরি, ৮ কেজি গাঁজা এবং একটি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-২ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি খালিদুল হক হাওলাদার বলেন, গ্রেপ্তারের পর আনোয়ার তিনজনের কবজি কাটার কথা স্বীকার করেছেন। তবে র্যাবের তদন্তে তার বিরুদ্ধে ৭ জনের কবজি কাটার তথ্য মিলেছে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, “আনোয়ারের গ্রুপের স্টাইল হলো, যে ব্যক্তির ওপর হামলা করা হবে তার আশপাশের রাস্তায় কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি করা। এরপর তারা যানজট কমাতে সহযোগিতা করার নামে কৃত্রিম ব্লক সৃষ্টি করে। পরে আনোয়ার এসে টার্গেট করা ব্যক্তির ওপর হামলা করে। তার সামনে ও পেছনে একাধিক টিম থাকত।”
বাগেরহাট থেকে জীবিকার সন্ধানে ঢাকায় আসা ৩৬ বছর বয়সী আনোয়ার যেভাবে অপরাধে জড়িয়েছেন, তার বর্ণনায় অতিরিক্ত ডিআইজি খালিদুল বলেন, “আনোয়ার ২০০৫ সালে জীবিকার সন্ধানে ঢাকায় আসে। ঢাকায় এসে বিশুদ্ধ খাবার পানি পরিবহন করা আনোয়ার প্রথমে ছিনতাই ও বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি শুরু করে। ২০২৪ সালে মানুষের কবজি কেটে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে নিজেকে ‘কবজি কাটা গ্রুপের’ প্রধান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে।
‘কবজি কাটা’ আনোয়ারের দুই সহযোগী ইমন ও ফরিদ।
“কবজি কাটার ভিডিও টিকটকে ছড়িয়ে পড়লে ওই গ্রুপের অন্যতম সদস্য বিল্লালসহ আরও কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়। এরপর আনোয়ার নিজের লেবাস পরিবর্তন করে আত্মগোপনে থেকে গ্রুপটি পরিচালনা করে আসছিল।”
তিনি আরও বলেন, “কবজি কাটা আনোয়ার গ্রুপ নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি এবং আধিপত্য ধরে ররাখতে এলাকার কিশোরদের মাদক, অস্ত্র ও অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে ব্যবহার করে আসছিল। অপরাধ জগৎ থেকে উপার্জিত টাকার মাধ্যমে সে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়ে উঠে।”
আনোয়ারের মদতদাতাদের বিষয় জানতে চাইলে র্যাব কর্মকর্তা খালিদুল বলেন, “আনোয়ারের পেছনে দীর্ঘদিন লেগেছিলাম। আমাদের কাছে তথ্য আসে মোহাম্মদপুরের এক্সেল বাবু নামের এক ব্যক্তি তাকে মদত দিচ্ছে, সে আড়ালে থেকে আনোয়ারকে ছত্রছায়া দেয়।”
র্যাবের ভাষ্য, মোহাম্মদপুর, আদাবর ও রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় মাদক, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির রাজত্ব গড়ে তুলেছে কবজি কাটা গ্রুপ। এই রাজত্ব গড়তে গিয়ে আনোয়ার ৭ জনের কবজি কাটাসহ বহু মানুষকে কুপিয়ে আহত ও পঙ্গু করেছে।
৫ অগাস্টের পর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে যৌথ বাহিনীর অভিযানে পাঁচ শতাধিক ছিনতাইকারী গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি খালিদুল বলেন, মোহাম্মদপুরে অপরাধের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা হবে।
ওই এলাকায় অপরাধীদের মদতদাতাদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “৫ অগাস্টের পর একটি রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়। এই পরিবর্তনের জের ধরে সন্ত্রাসীরা তৎপর হয়ে ওঠে। ৫ অগাস্টের পর মোহাম্মদপুরে যে পরিমাণ অপরাধ বেড়েছিল যৌথভাবে অভিযান করে জেনেভা ক্যাম্পসহ মোহাম্মদপুরের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। মোহাম্মদপুর ও আদাবর কেন্দ্রিক কোনো সন্ত্রাসী ও গডফাদারের স্থান হবে না।”