
প্রতীকী ছবি
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় গত শনিবার রাতে মো. মোজাম্মেল হোসেন (৫০) নামের মাদকাসক্ত এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি উপজেলার সনমানিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণগাঁও গ্রামের মো. সিরাজউদ্দিনের ছেলে।
সনমানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য তৌহিদুজ্জামান সরকার তপন বলেন, মোজাম্মেল হোসেন একজন বনেদি পরিবারের সন্তান। একসময় তিনি জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে চাকরি করতেন। অনেক বছর আগে সেই চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। বেশ কয়েক বছর ধরে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। মাদকের টাকা জোগাড় করতে না পারলে মাঝেমধ্যে লোকজনের বাড়ি থেকে টুকিটাকি জিনিসপত্র চুরি করতেন। ৫-৭ দিন আগেও তাঁর পরিবারের সদস্যরা এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তা পরামর্শ করতে এসেছিলেন তাঁর কাছে।
স্থানীয়রা জানান, গত শনিবার ভোরে উপজেলার সনমানিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণগাঁও গ্রামের মতিউর রহমানের বসতঘর থেকে বেশ কিছু হাঁড়ি-পাতিল ও আসবাব চুরি করে চটের বস্তায় ভরে নিয়ে যাচ্ছিলেন মোজাম্মেল। এ সময় স্থানীয় জনগণ এত ভোরে বস্তায় কী নিয়ে যাচ্ছেন, এটি জানতে চাইলে তিনি অসংলগ্ন জবাব দেন। এ সময় তাঁর বস্তা খুলে হাঁড়ি-পাতিল ও আসবাব দেখতে পেয়ে স্থানীয় জনতা তাঁকে বেধড়ক মারপিট করেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হলে বিকেলে তাঁকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
তবে সনমানিয়া ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. ওমর ফারুক জানান, মোজাম্মেল হোসেন এলাকায় একজন চিহ্নিত মাদকসেবী হিসেবে পরিচিত। তাঁর সঙ্গে স্থানীয় মাদক কারবারিদের টাকাপয়সা লেনদেনসংক্রান্ত বিরোধ থাকায় পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের বড় ছেলে ফাহাদ প্রধান দাবি করেন, তার বাবাকে চুরির অপবাদ দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বাবার হত্যাকারীদের বিচার চান।
এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, মোজাম্মেলের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া বাদী হয়ে রোববার রাতে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ ৪-৫ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে কাপাসিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।