ক্রিকেটারদের সঙ্গে ৩ ঘণ্টার বৈঠকে যেসব আলোচনা হলো জানালেন বিসিবি প্রধান

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo

সামনেই নেদারল্যান্ডস সিরিজ এবং এশিয়া কাপ। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সাড়তে ব্যস্ত ক্রিকেটাররা। এর মধ্যেই আজ রাজধানীর একটা পাঁচ তারকা হোটেলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠকে করেছেন ক্রিকেটাররা। তাতে উপস্থিত ছিলেন বিসিবির পরিচালকরাও। ক্রিকেটারদের সঙ্গে কোচিং স্টাফের সদস্যরা, পিচ কিউরেটর, লজিস্টিক সাপোর্টের সদস্যরাসহ ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট প্রায় সকলেই উপস্থিত ছিলেন।

মূলত দেশের ক্রিকেটের সমস্যা ও সেসব সমস্যা সমাধানে মতামত চাওয়া হয়েছে বৈঠকে। সেই সঙ্গে ক্রিকেটারদের ডোটিং, দুর্নীতি, স্পট ফিক্সিংয়ের মতো ঘটনা থেকে দূরে থাকার বিষয়টি বুঝিয়ে বলা হয়েছে।

লম্বা সময়ের বৈঠক শেষে সংবাদ মাধ্যমে কথা বলেছেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তিনি বলেন, ‘আজকে দুটি বড় কাজ করেছি আমরা। জাতীয় দলে যারা খেলোয়াড় রয়েছেন, সাদা ও লাল বলে যারা খেলছে সঙ্গে যারা সাপোর্ট স্টাফ আছেন, কোচরা রয়েছেন, আমরা সবাই একত্রিত হয়েছিলাম। বোর্ডের পরিচালকরা এখানে ছিলেন। আমাদের প্রোগ্রামের নাম ছিল শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার। আমরা মনে করি, আমাদের যে দল মাঠে খেলে তারা একটা দল, যারা ডাগআউটে বসে তারা একটা দল আর আমরা যারা বোর্ডে কাজ করি তারা একটা দল।’

‘এই তিন দলের পারফরম্যান্স কী, আমরা সকলের কাছে আটটি প্রশ্ন করেছিলাম, সেগুলোর উত্তর নিয়ে আমরা ডাটা এনালাইসিস করেছি। শেয়ার করেছি কীভাবে আরও উন্নতি করতে পারি। আরেকটা সেশন ছিল ইনটিগ্রেটি ইউটিন নিয়ে। আমাদের দেশের ক্রিকেটকে রক্ষা করার জন্য আমাদের কী কী করণীয়, সেই লক্ষ্যে আমরা মনোযোগ দিয়েছি। আমাদের চার্টারে রয়েছে ইনটিগ্রিটি অব দিস গেম, ইনটিগ্রিটি বলতে বোঝাচ্ছে কীভাবে আমরা খেলাটিকে রক্ষা করব, কীভাবে এন্টি ডোপিং করা হবে, এখন ডোপিং একটা বড় ব্যাপার।’

‘আমাদের জাতীয় দল কেবল দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বা আইসিসি ইভেন্টেই খেলছে না, এশিয়ান গেমসে খেলছে, হয়তো একদিন অলিম্পিকে খেলবে। সেজন্য এন্টি ডোপিং, সেইফ গাইডিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আইসিসির গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করে আসা অ্যালেক্স মার্শাল আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। আমরা তার থেকে একটা দিকনির্দেশনা পেয়েছি কীভাবে বহুল জনপ্রিয় খেলাটাকে রক্ষা করতে পারি এবং তিনি আমাদের ধারনা দিয়েছেন কীভাবে দল তৈরি করতে হবে।’

প্রতি তিন মাস পরপর এমন বৈঠক আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেছেন বিসিবি সভাপতি, ‘সবচেয়ে বড় কথা হলো আমরা খেলোয়াড়দের কতটুকু সাহায্য করতে পারছি। সেই সহায়তায় এই মুহূর্তে কতটুকু ঘাটতি রয়েছে, ঐ জায়গাটা কীভাবে পূরণ করব যাতে আমাদের ক্রিকেটাররা নিশ্চিন্তে মাঠে খেলতে পারে। আমরা আজকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রতি তিন মাস পরপর এরকম একটা সেশন করবো ক্রিকেটারদের সঙ্গে। আমাদের জায়গা থেকে যে সমস্ত জায়গায় উন্নতির দরকার রয়েছে ক্রিকেটারদের সহায়তার জন্য সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি।’

‘আমরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার ভাবি খেলোয়াড়দের, যারা মাঠে খেলে। তাদের দেখভাল করা আমাদের দায়িত্ব। সেজন্য চিকিৎসাকে বোঝাচ্ছি না, মাঠে কোচরা যে দেখভাল করেন, সেটিই সবকিছু নয়। এখানে লজিস্টিক, পিচ কন্ডিশন, অনুশীলন সুবিধা, চিকিৎসাসহ সব বিষয়ে কতটুকু সহায়তা করতে পারছি, সেসব বিষয়ে ক্রিকেটাররা মন খুলে লিখেছেন, সাজেশন দিয়েছেন সকলে। সেখান থেকে জানতে পারছি আমরা আসলে কোথায় অবস্থান করছি। সে অনুযায়ী আমরা কাজ করবো।’

‘মজার বিষয় হলো আমাদের যে আলোচ্যসূচি ছিল, তার বাইরেও ক্রিকেটাররা এসে লাফিয়ে লাফিয়ে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে কথা বলেছে, তারা তাদের মনের কথাগুলো প্রকাশ করছিল, এটাই সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার। তখন মনে হচ্ছিল আমরা একটি টিম, এই টিম একসঙ্গে কাজ করলে সামনের দিকে যে এগিয়ে যেতে পারব, তার একটি প্রতিচ্ছবি আজ দেখেতে পেরেছি।’

‘খেলোয়াড়দের সঙ্গে আরও আলোচনা হয়েছে কীভাবে পারফরম্যান্স বাড়ানো যায় আরও উন্নতি করা যায় সেসব বিষয় নিয়ে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে একেকজন খেলোয়াড় হিউজ পাওয়ার হাউজ। তারা কীভাবে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হতে পারেন সেই আত্মবিশ্বাস দেওয়া হয়েছে, আলোচনা হয়েছে।’

‘আমরা জরিপ করেছি, খেলোয়াড়রা তাদের মনের কথা লিখেছে। সবথেকে ভালো লেগেছে মনের কথা লেখার পরেও আজ তারা শারিরীকভাবে এসেছে। তাদের সমস্যাগুলো, সফলতাগুলো শেয়ার করেছে। তারা এটাও বলেছে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড থেকে তারা যে যে সহায়তা পাচ্ছে তাতে তারা খুশি। আরও কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে উন্নতি করা যায়। তবে দিনশেষে এটা আজকে বোঝাতে পেরেছি যে, হারলে শুধু খেলোয়াড়রাই হারে না, কর্মকর্তারাও হারে, আমরা একটা দল।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।