
খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় প্রাণিসম্পদ অফিসের মাধ্যমে সরবরাহকৃত সরকারি ‘গুডফক্স’ ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর অর্ধশতাধিক গরু ও ছাগলের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। প্রাণিসম্পদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালকের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মৃত ও অসুস্থ পশুর নমুনা সংগ্রহ করেছে। বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে উপজেলার ১ নম্বর রামগড় ইউনিয়নের লামকুপাড়া গ্রামে গিয়ে স্থানীয় খামারিদের বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তদন্ত দলটি।
তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা. মো. সাহাব উদ্দিন। তার সঙ্গে ছিলেন বিভাগীয় ভেটেরিনারি সায়েন্টিফিক কর্মকর্তা ডা. জপু চক্রবর্তী, ডা. তাহমিনা আক্তার, খাগড়াছড়ি জেলা ভারপ্রাপ্ত ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা. মনিরুল ইসলাম, রামগড় উপজেলা প্রাণিসম্পদ (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল ও উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. রুবায়েতুল ইসলাম।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল রামগড় ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে খামারিদের শতাধিক গরু ও ছাগলকে ‘গুডফক্স’ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়। ভ্যাকসিন প্রদানের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই এসব পশুর গায়ে জ্বর, চামড়ায় গুটি ও ক্ষতের মতো লক্ষণ দেখা দেয় এবং একে একে মারা যেতে থাকে। এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক গরু-ছাগল মারা গেছে, আরেকটি বড় অংশ গুরুতর অসুস্থ।
ভ্যাকসিন প্রয়োগের ফলে পশু মৃত্যুর অভিযোগ তুলে আতঙ্কিত খামারিরা গত ২৯ এপ্রিল ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মৃত ছাগল নিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। তারা সুষ্ঠু তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।
খামারিরা জানান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. রুবায়েতুল ইসলামের পরামর্শে তার দুই সহকারী জামাল উদ্দিন ও রমজান ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেন। তাদের অভিযোগ, হয়তো ভ্যাকসিনের মানজনিত ত্রুটি ছিল অথবা একই সিরিজের ভ্যাকসিন একসঙ্গে প্রয়োগ করায় এমন বিপর্যয় ঘটে।
লামকুপাড়ার খামারি লুৎফর রহমান বলেন, ভ্যাকসিন দেওয়ার পর ২০টি ছাগল ও ২টি গরু মারা গেছে। আমি কোরবানির জন্য গরু পালন করছিলাম, এখন পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে গেছি। আরো অনেকে একই অভিযোগ করেছেন। এ সময় তারা দোষীদের শাস্তি ও যথাযথ ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
তদন্ত কমিটির সদস্য ডা. জপু চক্রবর্তী বলেন, এ ধরনের ঘটনা আগে ঘটেনি। আমরা মৃত ও অসুস্থ পশুর নমুনা সংগ্রহ করেছি, সেগুলো ঢাকায় ভেটেরিনারি ল্যাবে পাঠানো হবে।
তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. সাহাব উদ্দিন বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে এসে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং নমুনা সংগ্রহ করেছি। পরবর্তী সিদ্ধান্ত বিভাগীয় দপ্তর থেকে নেওয়া হবে। অসুস্থ পশুগুলোর চিকিৎসা চলছে, তবে তারা এখনো ঝুঁকিমুক্ত নয়।