
সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে করা একটি মামলার শুনানিতে বিচারিক কাজে অসহযোগিতা করায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের ডিসি তারেক জুবায়েরকে ব্যাখ্যা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহের আদালত এ আদেশ দেন। এতে আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে তারেক জুবায়েরকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। রোববার সংশ্লিষ্ট আদালত সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, গত ২৪ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলাটি শুনানি ছিল ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহর আদালতে। ওইদিন সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে ডিএমপির অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের ডিসি তারেক জুবায়ের তার মোবাইল থেকে সংশ্লিষ্ট বিচারককে ফোন করেন। এ সময় তিনি আসামি খায়রুল হককে আদালত ভবনের নিচে প্রিজন ভ্যানে রেখেই মামলাটি শুনানির জন্য পীড়াপীড়ি করতে থাকেন।
আদেশে আরও বলা হয়েছে, এ সময় সংশ্লিষ্ট বিচারক, আদালতের ভাবমূর্তি রক্ষায় এবং বিচারিক কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হতে বিরত রাখার জন্য ওই প্রস্তাব নাকচ করেন। পরে আসামিকে আদালতে উপস্থাপনে বিলম্ব হলে সন্ধ্যা ৭টা ১৪ মিনিটে বিচারক তারেক জুবায়েরকে ফোন করেন। এসময় তিনি জানতে চান, আসামিকে আদালতে আনতে কতক্ষণ লাগতে পারে। জবাবে তারেক জুবায়ের বিচারককে বলেন, তিনি তা জানাতে পারবেন না। এসময় বিচারক আনুমানিক সময় জানাতে অনুরোধ করার পরও তারেক জুবায়ের অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা ও ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে কথা বলতে বিচারককে পরামর্শ দেন।
আদেশে আরও উল্লেখ করা হয়, তারেক জুবায়েরের বিচারিক কার্যধারা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসির অধীন হওয়া সত্ত্বেও দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটকে মামলা সংক্রান্ত বিচারিক তথ্য প্রদানে অস্বীকার করে ধৃষ্টতাপূর্ণ ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন। যা পুলিশ প্রবিধান ও পুলিশ আইনসহ প্রচলিত আইন পরিপন্থি এবং বিচারিক কার্যধারায় অসহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড সুস্পষ্টভাবে পেনাল কোডের ১৭৬, ১৭৯ ও ২২৮ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়া বিচারিক কাজে অসহযোগিতা করা স্পষ্টত আদালত অবমাননার শামিল। এ কর্মকাণ্ডের জন্য তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার জন্য বিষয়টি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি বরাবর কেনো প্রেরণ করা হবে না সে মর্মে আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হলো।
গত ২৪ জুলাই সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে যুবদল কর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
সূত্র : ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন (অনলাইন)