ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৯ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:৩০
খুলনা: খুলনায় স্ত্রী হত্যার দায়ে লিটন কুমার দেবনাথ নামে এক পুলিশ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. কেরামত আলী এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত লিটন পুলিশের কনস্টেবল (ক নম্বর ৫৯৬)। তিনি খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার ১ নম্বর ওয়ার্ড পৌরসভার অভিলাষ দেবনাথের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলফাজ হোসেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২ মার্চ বিকেলে রূপসা উপজেলার শিয়ালী গ্রামের এক ডোবা থেকে অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় শিয়ালী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক মো. ফিরোজ বাদী হয়ে রূপসা থানায় অজ্ঞাত আসামিদের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, অজ্ঞাত ওই নারীর নাম আরজু আক্তার।
২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি অ্যাফিডেভিটের পর লিটন নাম পরিবর্তন করে আরজুকে বিয়ে করেন। ওই বছরের ১৯ অক্টোবর বদলি হয়ে তারা খুলনায় চলে আসেন এবং রূপসা উপজেলার পুঁটিমারী এলাকায় বাসা ভাড়া নেন। তাদের মধ্যে সব সময় পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত।
একপর্যায়ে স্ত্রী আরজু আক্তার বাবার বাড়ি চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আরজু চলে গেলে চাকরির ক্ষতি হতে পারে, এই আশঙ্কায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন লিটন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে আরজু আক্তারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন লিটন। মরদেহ যেন ভেসে না ওঠে, সে জন্য লোহার পাতসহ মরদেহ রূপসার আঠারো বেঁকী নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। হত্যার পর অপপ্রচার চালানো হয় স্ত্রী বাচ্চা রেখে পালিয়ে গেছেন। মরদেহ উদ্ধারের পর পরিবারের লোকজন আরজু আক্তারের বলে শনাক্ত করেন। তবে তা অস্বীকার করেন পুলিশ সদস্য লিটন কুমার দেবনাথ।
পরে ফরেনসিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে পুলিশ নিশ্চিত হয় মরদেহ আরজু আক্তারের। এ ঘটনায় লিটনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তখন তিনি খুলনায় কর্মরত ছিলেন। ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা পিবিআইয়ের পরিদর্শক লুৎফর রহমান লিটন কুমারকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট আলফাজ হোসেন।
বাংলানিউজবিডিহাব/এসআর
খুলনা
মৃত্যুদণ্ড
স্ত্রী হত্যা
স্ত্রী হত্যায় পুলিশ সদস্যের মৃত্যুদণ্ড