নড়াইলে গণধর্ষণের পর মুখে বিষ ঢেলে বাসনা মল্লিক (৫০) নামে এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যকে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে রিংকু মল্লিক বাদী হয়ে সদর থানায় চারজনকে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় আরও দুজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন নড়াইল সদরের দৌলতপুর গ্রামের গুলমান মোল্যার ছেলে মো. ফারুক মোল্যা (৫০), আইয়ুব আলীর ছেলে রাজিবুল মোল্যা (৩০), সাত্তার মল্যার ছেলে চঞ্চল মোল্যা (৩৫) ও শহিদ মল্যার ছেলে শফিকুল মোল্যা (৩৩)। এদের মধ্যে প্রধান আসামি ফারুক মল্যাকে শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে মাগুরা জেলার শালিখা থানার হরিশপুর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বাসনা মল্লিককে স্থানীয় যুবক রাজিবুলের ফোন আসে এবং টিসিবির মালামাল পৌঁছে দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে পাওনা টাকা নিতে যায়। মাইজপাড়া ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের মোক্তার মোল্যার বাড়িতে আসামিরা জোরপূর্বক ৩ ঘণ্টা আটকে রেখে ইউপি সদস্যকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী ভাসানা মল্লিক বিষয়টি জানাতে হুমকি দিলে অভিযুক্তরা তাকে মারধর করে এবং তার মুখে বিষ ঢেলে দেয়। আত্মসম্মানের ভয়ে বাড়ি ফিরে কাউকে বলেনি। পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে তাকে যশোরের ধলগ্রাম বাজারে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
পরে অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন বিকেলে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় তিনি তার ছেলে রিংকু মল্লিককে তার ওপর নির্যাতনের বর্ণনা ও জড়িতদের নাম বলেন। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরদিন শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় নিহতের স্বজনরা লাশ দাহ করেন।
নিহত বসনা মল্লিক নড়াইল সদরের মাইজপাড়া ইউনিয়নের ১, ২, ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য এবং ওই ইউনিয়নের পোড়াডাঙ্গা গ্রামের নেপাল মল্লিকের স্ত্রী।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় ইউপি সদস্যের ছেলে বাদী হয়ে মাকে গণধর্ষণ ও বিষপানে হত্যার অভিযোগে মামলা করেছেন। আমরা ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেফতার করেছি। ঘটনার সাথে জড়িত বাকিদের তদন্ত সাপেক্ষে গ্রেফতার করা হবে।