গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর বমি হয় সম্পূর্ণ বিস্তারিত জানতে পারবে এই প্রবন্ধের মধ্যে। গর্ভধারণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রথম লক্ষণ হল বমি হওয়া। এটি সাধারণত চতুর্থ থেকে ৬ষ্ঠ সপ্তাহের দিকে শুরু হয়। ষষ্ঠ সপ্তাহের দিকে শুরু হয়ে বাকি সপ্তাহ পর্যন্ত বমি হয়ে থাকে, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ১২তম সপ্তাহের পর থেমে যায়। অর্থাৎ গর্ভধারণের ছয় সপ্তাহ পর থেকে ৪২ দিন পর্যন্ত মাঝে মধ্যে বমি হতে পারে।

তাহলে বলা যেতে পারে, গর্ভধারণের ৬ষ্ঠ সপ্তাহের শনিবার অথবা শুক্রবারের মধ্যে বমি হওয়া শুরু হতে পারে। গর্ভবতী হওয়ার ৪২ দিন পর থেকে বমি হওয়া শুরু হয়। এবং গর্ভবতী হওয়ার ৪২ পর বমি হাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।

গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর বমি হয়

গর্ভবতী হওয়ার তথ্যবিস্তারিত
বমি হয় – গর্ভবতী হওয়ার৬ষ্ঠ সপ্তাহ বা ৪২ দিন পর থেকে
বমি বন্ধ হয় – গর্ভবতী হওয়ার১২তম সপ্তাহের পর, ৪২ দিন পর থেকে

 

গর্ভধারণের শুরুর দিকে ক্ষুধামন্দা, অরুচি, বমি ভাব সাধারণ উপসর্গের মধ্যেই পড়ে। প্রথম ১২ সপ্তাহের মধ্যে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে চারজনেরই এই উপসর্গ দেখা দেয়। এ সময় পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেয়া প্রয়োজনযে খাবারের গন্ধে আপনার সমস্যা হয় সেগুলো পরিহার করুন।

এ সময় বমি না হলেও একটু দুর্বলতা অনুভব করতেই পারেন। তাই যতটা সম্ভব বিশ্রাম নেয়ার চেষ্টা করুন। দুর্বলতার সাথে সাথে আরও অন্য ধরণের কিছু অস্বস্তিও এ সময় হতে পারে, যেমন – বার বার প্রস্রাবের বেগ পাওয়া, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ও স্তনে ব্যথা অনুভব করা।

সেই ক্ষেত্রে, খুব ভালো হয় যদি আপনি একজন ভালো প্রসূতি-বিশেষজ্ঞের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে সাক্ষাৎ করে নিন।

গর্ভাবস্থায় বমি হওয়ার কারণ

  • গর্ভাবস্থায় শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মর্নিং সিকনেস বা বমি হয়।
  • গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজনের কারণে সকালের অসুস্থতা বা বমি বমি ভাব হতে পারে।
  •  গর্ভাবস্থায় যদি টেনশনে থাকেন বা খুব বেশি টেনশনে করে থাকেন তাহলেও বমি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • গর্ভাবস্থায় অধিক চর্বিযুক্ত খাবার খেলেও বমি বমি ভাব বাড়তে পারে বা বমি হতে পারে।
  •  ত্রিশ বছর বয়সের পর গর্ভধারণ করলে বমি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে বমি হতে পারে।
  • এমনকি আপনার ওজন বেশি হলেও এই সমস্যা হয়।
  • গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ভাজা খাবার বা তৈলাক্ত খাবার খেলে বমির সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।
  • জেনেটিক সমস্যা আপনার পরিবারের কারো এই সমস্যা থাকলে আপনার এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
  •  কারো যদি মোলার প্রেগন্যান্সি থাকে তাহলে গর্ভাবস্থায় বমির সমস্যা তীব্র হতে পারে।
  • হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি সংক্রমণ থাকলে গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব বৃদ্ধি পেতে পারে এবং বমি হতে পারে।
  • আপনার যদি সকালের অসুস্থতা অর্থাৎ মর্নিং সিকনেস পারিবারিক ইতিহাস বা পরিবারের কারো থাকে তবে আপনারও এই সমস্যা হতে পারে।
  •  অনেকে বলে থাকেন যে মেয়ে শিশুর গর্ভবতী হলে মর্নিং সিকনেসের সম্ভাবনা বেশি।
  • অপুষ্টি গর্ভবতী মহিলাদের বমির অন্যতম প্রধান কারণ। একজন মহিলার গর্ভাবস্থায় অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি পুষ্টির প্রয়োজন হয়। গর্ভাবস্থায় সঠিক ও পর্যাপ্ত পুষ্টি না পেলে বমির সমস্যা প্রবল হতে পারে।
  • কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের মতে, গর্ভে কন্যাশিশু থাকলে মর্নিং সিকনেস বা বমি হওয়ার সমস্যা বেশি হয়।

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষন

আপনি নিচের দেওয়া লক্ষণগুলো যদি আপনার থেকে থাকে তাহলে আপনি বুঝবেন আপনি অন্তঃসত্ত্বা

  • বমি বমি ভাব
  • খাবার রুচি মারাত্মকভাবে কমে যাওয়া
  • গলা ও মুখ শুকিয়া যাওয়া
  • পানির পিপাসা লাগা
  • ওজন কমে যাওয়া
  • তল পেটের বা পাশে ব্যথা করা

আরো জানতে পারোঃ

কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন?

বমির সাথে নিচের কোনো লক্ষণ থাকলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন— গর্ভবতী এবং সদ্য মায়েদের জন্য যে কোন টিপস পেতে ফোন করুন ১৬২২৭ এই নাম্বারে।

  • রক্তবমি হলে
  • পেটে ব্যথা থাকলে
  • জ্বর থাকলে
  • শরীর প্রচণ্ড দুর্বল লাগলে
  • মাথাব্যথা থাকলে
  • প্রস্রাবের সময়ে ব্যথা হলে
  • ওজন কমে গেলে
  • প্রস্রাবের রঙ অনেক গাঢ় হলে অথবা ৮ ঘন্টার বেশি সময়ের মধ্যে প্রস্রাব না হলে
  • ২৪ ঘন্টার মধ্যে যা খাচ্ছেন কিংবা পান করছেন তার সবকিছুই বমি হয়ে গেলে
  • মাথা ঘুরালে অথবা দাঁড়ানোর সময়ে অজ্ঞান হয়ে যাবেন এমনটা মনে হলে