গুজব ছড়িয়ে চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকায় (সিইপিজেড) অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে একটি মহল। দেশের পোশাক খাত অস্থিতিশীল হলে এখানে বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। কারখানার ওপর যাদের জীবিকা নির্বাহ করে তারা এসব করতে পারে না। একটি মহল সুপরিকল্পিতভাবে এসব গুজব ছড়াচ্ছে।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপকমিশনার (জনসংযোগ) রইছ উদ্দিন। সিএমপির পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম ইপিজেডে কয়েকটি ঘটনায় বিষয়ে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
রইছ উদ্দিন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু কুচক্রীমহল তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইচ্ছা করে গুজব ছড়িয়ে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকদের খেপিয়ে তুলে ইপিজেডে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। এর সঙ্গে বহিরাগতরাও যুক্ত হচ্ছে।
বুধ ও বৃহস্পতিবার তিন শিশুকে একটি নির্মীয়মাণ ভবনে আটকে রেখে ‘জবাই’ করার গুজবে চট্টগ্রাম ইপিজেডে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল নগর পুলিশ কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে আনুমানিক ১০-১৪ বছরের ওই তিন শিশুকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হাজির করা হয়। তারা পরবর্তীতে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে। রইছ উদ্দিন আরো বলেন, ২২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ইপিজেড ২ নম্বর সড়কের একটি নির্মীয়মাণ ভবনে তিন শিশু প্রবেশ করে।
নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও নির্মাণ শ্রমিকরা তাদের ধরে ফেলেন। পরবর্তীতে দুজনকে ছেড়ে দিলেও একজনকে আটকে রাখেন। ভবনের পার্শ্ববর্তী একটি কারখানার পঞ্চম তলার কিছু শ্রমিক সেটি দেখতে পেয়ে শিশুদের জবাই করার গুজব ছড়িয়ে দেয়। ছুটি শেষে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ভবনটিতে তাণ্ডব চালান এবং নির্মাণ শ্রমিকদের থাকার শেডসহ বিভিন্ন কিছুতে আগুন জ্বালিয়ে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, পরদিন বিকেলে শ্রমিকরা পুনরায় ওই ভবনটিতে শিশুদের খোঁজার নাম করে প্রবেশ করে দ্বিতীয় দিনের মতো তাণ্ডব চালান এবং বেপজা কার্যালয়েও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বেশ কিছু নথিপত্র জ্বালিয়ে দেন।বিক্ষুব্ধদের মারধরে বেপজার তিন কর্মকর্তা আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনের পর রবিউল, হাসান ও সাগর নামের ওই তিন শিশু সাংবাদিকদের জানায়, সল্টগোলা ক্রসিং, মাইলের মাথা এবং ফ্রি পোর্ট এলাকায় তাদের বাসা। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ভাঙা লোহা খুঁজতে ভবনটিতে প্রবেশ করেছিল তারা।
রবিউল নামক এক শিশু জানায়, তারা ভবনটিতে প্রবেশের পর শ্রমিকরা তাদের ধরে ফেলে। অন্য দুজনকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার পর তাকে ভেতরে নিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করে। পরে লোকজন সেখানে জড়ো হয়ে সেখানে এসে তাকে ছাড়িয়ে আনে।