সাংবাদিক দম্পতি ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদের পক্ষে তাঁদের আন্তর্জাতিক আইনজীবী দল জাতিসংঘে অভিযোগ করেছে। দম্পতি আটককে ‘স্বেচ্ছাচারী’ অভিহিত করে গত বুধবার (২২ জানুয়ারি) আইনজীবীরা এই অভিযোগ করেন।
মানবাধিকার আইনজীবী কাওয়েলফিওন গ্যালাঘার ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেন, সমালোচকদের দমন করতে আইন ব্যবহারের হাস্যকর (অ্যাবসার্ড) উদাহরণ। দুঃখজনকভাবে, এর ফলে তাঁরা এখনো কারাগারে রয়েছেন। এ সাংবাদিক দম্পতির পক্ষে আন্তর্জাতিক আইনি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন গ্যালাঘার।
গত বছরের ২১ আগস্ট একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক সংবাদপ্রধান (হেড অব নিউজ) শাকিল আহমেদ ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা রুপা (চ্যানেলটির সাবেক প্রতিবেদক ও সংবাদ উপস্থাপক) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার হন। তাঁদের বিরুদ্ধে জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার অভিযোগে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। উত্তরা পূর্ব থানায় দণ্ডবিধির ৩০২, ১১৪ ও ১০৯ ধারায় এ মামলা করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর থেকে দম্পতিকে ১৫০ দিনের বেশি সময় ধরে কারাগারে রাখা হয়েছে। তাঁদের আইনি দল দাবি করেছে, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
লন্ডনভিত্তিক আইনজীবী গ্যালাঘার ভিওএকে বলেন, এটি সরকারের প্রতিশোধমূলক আইনের একটি উদাহরণ। সমালোচকদের দমন করতে আইনকে অপব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকতা এমন মানসিকতার জন্ম দিতে পারে এবং সে মানসিকতা আক্রমণ ও খুনের কারণ হতে পারে— এ ধরনের দাবি আইনগত দৃষ্টিকোণ থেকে অর্থহীন।
ইউএন ওয়ার্কিং গ্রুপ অন আর্বিট্রারি ডিটেনশনে অভিযোগ করে গ্যালাঘার আশা প্রকাশ করেন, ‘এ দম্পতির কারাবাসকে ‘স্বেচ্ছাচারী’ হিসেবে চিহ্নিত করবে জাতিসংঘের এ গ্রুপ। আমরা যা দেখছি তা হল, কোনো যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই তাঁদের পুরোপুরি অন্যায্যভাবে কারাগারে রাখা হয়েছে।’
দেশ ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টার সময় ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদকে তাঁদের মেয়েসহ গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁদের পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়। পরিবারটি টার্কিশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট টিকে-৭১৩-এ ইস্তাম্বুল হয়ে প্যারিসে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। তবে পুলিশের বিশেষ শাখার ছাড়পত্র না থাকায় ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের দেশত্যাগের অনুমতি দেয়নি।