‘জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের একটি প্রতিবেদনে সারা পৃথিবী বদলে গেছে’

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর হওয়া সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

ঢাকা : প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের একটি প্রতিবেদনে সারা পৃথিবী বদলে গেছে। আর কত সমর্থন চাই আমরা? একেবারে অক্ষরে অক্ষরে বলে দিয়েছে কোথায়, কীভাবে মেরেছে। এর থেকে বের হওয়ার তো কারো কোনো উপায় নেই।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর হওয়া সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে ঘিরে যে অপপ্রচার চলছিল, এই এক প্রতিবেদনে সব সমাপ্ত। এখন তারা বলতে পারবে কিন্তু কোনো আওয়াজ বের হবে না। আরও অন্য যেসব প্রতিষ্ঠান প্রতিবেদন তৈরি করেছে, তাদের প্রতিবেদনে অত্যন্ত জোরালোভাবে তাদের (আওয়ামী লীগ) অপরাধের কথা ওঠে এসেছে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সেদিন আয়নাঘরে গেলাম। মানুষ কত নির্মম হতে পারে, বীভৎস দৃশ্যের সৃষ্টি করতে পারে, নৃশংস হতে পারে, এর চেয়ে বড় নমুনা বোধ হয় আর পাওয়া যাবে না। আমাদের শুধু দেখতে কষ্ট লেগেছে। কিন্ত যারা বছরের পর বছর সেখানে থেকেছে তাদের কথা চিন্তা করুন। তাদের প্রতিটি বর্ণনা, তাদের অভিজ্ঞতা গুম-তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সমর্থন রয়েছে। এই দুই সমর্থনের ভেতর দিয়ে আমরা যদি নতুন বাংলাদেশ গড়তে না পারি, এটা আমাদের কর্মের দোষ ছাড়া আর কি বলব? আমরা এ সুযোগ হারাতে চাই না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সারা পৃথিবী জুড়ে আমাদের একটা বড় রকম সমর্থন গড়ে উঠেছে। যে কারণে অপরপক্ষ সুবিধা করতে পারছে না। পদে পদে ব্যাহত হচ্ছে। বহু গল্প করছে, গল্প টেকাতে পারছে না। শেষমেষ তো ট্রাম্পকে নিয়ে গল্প, সে অপপ্রচার চালাতে গিয়েও চালাতে পারল না।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘যত ছোট রাষ্ট্র, বড় রাষ্ট্র, মাঝারি রাষ্ট্র, ধনী রাষ্ট্র, সবাই সমর্থন দিয়েছে। কারো কোনো রকম দ্বিধা নাই। তাদের কথা শুনলে আমি অবাক হই। আমরা যখন বসি, বিস্তারিত জানার আগে বলে, আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। এ পর্যন্ত তারা সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে এবং ক্রমাগতভাবে তাদের সমর্থন বাড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক মহলও আমাদের জিজ্ঞেস করে তোমাদের অর্থনৈতিক দিক থেকে আমরা সাহায্য করতে পারি কিনা। সংস্কারের ব্যাপারেও আমরা সাহায্য করব, তোমাদের কি দরকার। তোমাদের এ সংস্কারটা দরকার। তা না হলে এই যে পরিবর্তন, এটা টিকিয়ে রাখা যাবে না।’’

আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন, সহযোগিতা এবং শুভেচ্ছা, এটা আমাদের জন্য একটা মস্ত বড় সম্পদ উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘‘আমরা তাদের বলি আমাদের এই স্বপ্ন, আমরা এই করতে চাই, ওই করতে চাই। তারা বলে তোমরা করতে পার, আমাদের কোনো সমস্যা নাই। আমরা আছি তোমাদের সঙ্গে।’’

ড. ইউনূস বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে যে নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার গঠন হবে সেটার ব্যাপারে কেউ প্রশ্ন তুলবে না। সেটার ব্যাপারে আইনকানুন সবার জানা থাকবে, এটা নড়চড় করার উপায় কারো থাকবে না।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ আমাদের সেই দ্বিতীয় পর্ব শুরু। আপনারাই এ দ্বিতীয় পর্বের স্রষ্টা, আপনাদের সহযোগিতা করার জন্য আমরা নিয়োজিত থাকব।’

তিনি বলেন, ‘এ সংস্কার কমিশনের যারা, তারা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন সংস্কারটা যেন এমনভাবে হয়, ভবিষ্যতের প্রজন্মরা যাতে আমাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা সবার স্বপ্ন যে আমরা এমনভাবে মজবুতভাবে (আইন) বানাব… যা সবাই মেনে চলবে। এই মেনে চলার মাধ্যমে আমরা একটা সুন্দর সমাজ, সুন্দর রাষ্ট্র উপহার দিতে পারব। সে উদ্দেশ্যেই আজকের সভা।

বাংলানিউজবিডিহাব/জিএস/এইচআই

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।