
গত জুনের তুলানায় জুলাই মাসে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে। কারা হেফাজতে মৃত্যু ঘটেছে দ্বিগুন। সাম্প্রদায়িক হামলা বেশি হয়েছে। রাজনৈতিক সহিংসতার সূচকও জুলাইয়ে ছিল ঊর্ধ্বমুখী। গতকাল বৃহস্পতিবার মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই মাসে ৪৮টি রাজনৈতিক সহিংসতা ঘটেছে। এতে ৯ জন নিহত ও ৫৯৩ জন আহত হয়েছেন। দুষ্কৃতকারীদের হামলায় নিহত হয়েছেন চারজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মারা গেছেন একজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে মারা গেছেন দুইজন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে একজনের। ভয়ে পালাতে গিয়ে মারা গেছেন একজন। পুলিশ পরিচয়ে অপহরণ করা হয়েছে একজনকে। কারা হেফাজতে মারা গেছেন ১০ জন। গত জুন মাসে কারা হেফাজতে মারা গিয়েছিলেন পাঁচজন।
জুলাই মাসে সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা বেড়েছে। ৩০ জন সাংবাদিক নির্যাতন, হামলা, ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। মামলা হয়েছে তিনজনের নামে। গ্রেপ্তার হয়েছেন দুজন। সাইবার নিরাপত্তা আইনে একজনের নামে মামলা হয়েছে ও একজন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন ৬ বাংলাদেশি। ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে একজনকে। সীমান্তে বিএসএফ পুশইন করেছে ১ হাজার ৫৬১ জনকে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দুটি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে। তিনটি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে ১৫টি। এক নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন একজন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই মাসের সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা। সরকারি হিসাব অনুযায়ী এতে ৩৫ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দেওয়া এবং ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সরকারের সমন্বয়হীনতা ও ব্যর্থতা ছিল।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ১৬ জুলাই সহিংসতা ও প্রাণহানি ঘটেছে। গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল এবং রাষ্ট্র এ ঘটনার দায় এড়াতে পারে না।
প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়, জুলাই মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানকালে গুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশি হেফাজতে, নির্যাতনে ও ভয়ে পালাতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ মাসে রাজনেতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে।