
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন ‘একাত্তরের প্রহরী ফাউন্ডেশন-যুক্তরাষ্ট্র’। গত ৫ আগস্ট রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে ‘একাত্তরের প্রহরী ফাউন্ডেশন-যুক্তরাষ্ট্র’-এর সভাপতি ড. নুরুন নবী ও সাধারণ সম্পাদক স্বীকৃতি বড়ুয়া সাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের সকল আদর্শ ও ত্যাগকে কটাক্ষ করে এমন জঘন্য ‘ঘোষণাপত্র’ জাতিকে হেয় করার শামিল। ‘এবং যেহেতু’, ‘এবং সেহেতু’-রূপ ভাষা ব্যবহার করে এই সরকার প্রমাণ করেছে, তাদের পক্ষে যুক্তি দেখানোর কোনো সঠিক উপাত্ত ও তথ্যই নাই।
বিবৃতিতে বলা হয়, তারা ‘দুই হাজারের অধিক’ লোক মারা গিয়েছেন বলে এতদিন যে কাল্পনিক বাণী ছড়িয়ে আসছিলেন তা থেকেও তারা সরে গেছেন। এই ঘোষণাপত্রে তারা বলছেন- ‘রাজপথে নারী-শিশুসহ প্রায় এক হাজার মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে’, যদিও বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী এই সংখ্যা পাঁচশতের মতো হতে পারে বলে বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই সরকার আমাদের মহান সংবিধানকেও কটাক্ষ করে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। তারা ঘোষণায় বলেছে- ‘যেহেতু স্বাধীন বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণয়ন পদ্ধতি, এর কাঠামোগত দুর্বলতা ও অপপ্রয়োগের ফলে স্বাধীনতা-পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধের জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছিল এবং গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা ক্ষুণ্ণ করেছি ’; অথচ আমরা জানি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বের অনেকগুলো আধুনিক দেশের জাতীয় সংবিধানের রূপরেখা, কাঠামো এবং নির্মাণপদ্ধতি বিচার বিশ্লেষণ করেই সকল দল ও মতের সাথে আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন করেছিলেন।
তারা বলেন, ২৮ দফার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী ও আদিম রাষ্ট্রের দিকেই ঠেলে দেয়ার পাঁয়তারা করছে এই সরকার ও তাদের সহযোগী রাজনৈতিক দলেরা।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে খুন, ধর্ষণ, লুটপাট, মবোক্রেসি, দখল, সামাজিক অপমান এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছড়িয়ে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে এই সরকার। সংবাদ মাধ্যমে তাদের মনোনীত ব্যক্তিদের বসানোই শুধু নয়- গোটা মিডিয়া হাউস-ই দখল করে নিচ্ছে তারা। প্রতিদিন সাংবাদিকদের নির্যাতন করা হচ্ছে। দেড় হাজারের বেশি সাংবাদিক আজ কারাবন্দি, বিনা অপরাধে। এই সরকারের ভিত্তি এতোটাই শূন্যের কোটায় যে, তারা সরকারি খরচে বাস-ট্রেন-লঞ্চ দিয়ে তাদের জনসভায় লোক ভাড়া করছে! এর চাইতে লজ্জা আর কী হতে পারে !
বিবৃতিতে বলা হয়, তিরিশ লাখ শহিদের রক্তধারার বিজয় সমুন্নত রাখতে এই প্রজন্মের সামনে একটি পথই খোলা আছে, তা হলো একাত্তরের বিজয়ের চেতনায় প্রিয় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।