
সিলেটের ওসমানীনগরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও জামায়াত নেতা পরিচয়ে উপজেলা ভূমি অফিসে অনৈতিক তদবির না রাখায় অফিস ঘেরাও ও মব সৃষ্টির হুমকির অভিযোগে এক যুবকের দুই মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সোমবার (২৯ জুলাই) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জয়নাল আবেদীন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত এই আদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত ওই যুবকের নাম মো. মাহবুবুর রহমান (৩২)। তিনি উপজেলার সাদীপুর ইউনিয়নের সাদিপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মাহবুবুর রহমান নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও জামায়াত নেতা পরিচয় দিয়ে তার পরিবারের একটি যৌথ ভূমির নামজারি করে দেওয়ার তদবির করে। তবে বিষয়টি অনিয়মতান্ত্রিক হওয়ার কারণে সেই কাজ করতে রাজি হননি ভূমি কর্মকর্তারা। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে তিনি উপজেলা সহকারী কমিশনারসহ (এসিল্যান্ড) অন্যান্য কর্মকর্তাকে চাপ প্রয়োগ করে তদবির করে আসছিলেন। তদবিরটি ছিল অনিয়মতান্ত্রিক। তবে কাজ না হওয়ায় মাহবুবর রহমান ছাত্রদের নিয়ে অফিস ঘেরাও করে ভাঙচুরের হুমকি দেয়। সোমবার ভূমি অফিসে উপস্থিত হয়ে কর্মকর্তাদের আবারও হুমকি দিলে তাকে আটক করা হয়।
এ সময় তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মুখোমুখি করা হলে সে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। জিজ্ঞাসাবাদে দণ্ডপ্রাপ্ত ওই যুবক জানায়, একই এলাকার ডা. আব্দুল লতিফ ও আমান আহমদ নামের ব্যক্তিদের প্ররোচনার তিনি এই কাজ করেছেন। পরে আদালত তাকে দণ্ডবিধি ১৮৬ ধারায় দুই মাসের কারাদণ্ড ও পাঁচশ টাকার অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করেন।
এদিকে ওসমানীনগর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আনহার আহমদ বলেন, এ নামে জামায়াতের কোনো কর্মী বা নেতা নেই। তাছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সারাদেশের সব কমিটির কার্যক্রম গতকাল রোববার সন্ধ্যায় স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশিক্ষণে থাকায় ইউএনও জয়নাল আবেদীন ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, মাহবুবুর নিজেকে সমন্বয়ক ও জামায়াত নেতার পরিচয় দিয়ে আগে ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের এবং সোমবার উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে অন্য কর্মকর্তাদের হুমকি ও সরকারি কাজে বাধা দিয়েছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে তিনি দোষ স্বীকার করেছেন। পাশাপাশি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও দুজনের নাম বলেছেন। তবে তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।