‘দেশের জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারের অন্তরের কথা বুঝতে পারছে না’ – BanglaNewsBDHub.com |

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo



প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। তারা বলেন, দেশের মানুষ অন্তর্বর্তী সরকারের হৃদয় বোঝে না। তারা ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে। রাজনীতির বাইরে কোনো খেলা হবে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ পরিচালনা করতে হবে। শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সিপিবি আয়োজিত ‘ঢাকা সমাবেশে’ নেতারা এসব কথা বলেন।

নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা, নিত্যপণ্যের দাম কমানো, জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং লুটপাট, সাম্প্রদায়িকতা, আধিপত্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ বন্ধসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, সরকারের সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জনগণ ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে। সংস্কারের আগে, নাকি নির্বাচনের আগে এ নিয়ে অহেতুক বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। সংস্কার ও নির্বাচন পরস্পরবিরোধী নয়, একে অপরের পরিপূরক।

তিনি বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধান ও চার জাতীয় নীতি বাতিলের দাবি এবং জাতীয় সংগীত নিয়ে বিতর্ক জাতীয় ঐক্যে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে। ভিন্নমতকে আগের মতোই স্বৈরাচারের বন্ধু হিসেবে ট্যাগ করা হচ্ছে। এটি পতিত স্বৈরাচার, জঙ্গিবাদ ও নৈরাজ্যবাদী শক্তির পথ প্রশস্ত করছে।

দলটির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম নতুন ঐক্যফ্রন্ট গঠনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, শুধু স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদকে উৎখাত করলে চলবে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণঅভ্যুত্থানের জনগণের আশা-আকাঙ্খাকে উপলব্ধি করতে ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। সেই লক্ষ্য অর্জনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতসহ জাতীয় পার্টির বাইরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সব শক্তিকে ‘নতুন যুক্তফ্রন্ট’ গঠন করতে হবে।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা বলতেন উন্নয়নের জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা দরকার। এ জন্য ‘শেখ হাসিনার সরকার বারবার দরকার’। আর এখন অনেকেই বলতে চাইছেন, ‘সংস্কার পার্টির সরকার বারবার দরকার’। জনগণ এটা সহ্য করবে না। তাই প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে নির্বাচন করতে হবে।

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের হৃদয়ের কথা কেউ বোঝে না। তবে নানা কৌশলে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা চলছে। এই চেষ্টা ছাড়াই জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তিনি বলেন, এই সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে পারেনি। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণে জনজীবনে সংকট বেড়েছে। পতনশীল আওয়ামী সরকারের সিন্ডিকেট টিকিয়ে রেখে কোনো মূল্য নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। তাই রাজপথে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পাশাপাশি ক্ষমতা দখলের সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

সমাবেশ থেকে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- বৃহত্তর ঐক্য গড়ার লক্ষ্যে ১০ জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তির সঙ্গে মতবিনিময়, ২০ জানুয়ারি পল্টন হত্যা দিবসে টেকনাফ থেকে তেঁতুল শপথ গ্রহণ ও গণতন্ত্র পদযাত্রা কর্মসূচি এবং ২১ থেকে ২৭ জানুয়ারি হাজার কিলোমিটার পদযাত্রা।

শহীদ ক্ষেতমুজার নেতা প্রদীপ ভৌমিকের ছেলে সুজন ভৌমিকের নেতৃত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সিপিবির সহ-সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, সিপিবি প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন প্রমুখ। সমাবেশের শুরুতে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী গণসংগীত পরিবেশন করে। র‌্যালি শেষে একটি লাল পতাকা মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

  • অন্তর্বর্তী সরকার
  • জনগণ
  • বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি
  • মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।