
খাগড়াছড়িতে অষ্টম শ্রেণির এক কিশোরী শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)। দেশে নারী ও শিশুর নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে বলে মনে করছে সংস্থাটি। শুক্রবার (১৮ জুলাই) এক বিবৃতিতে এ কথা জানায় এমজেএফ।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, দেশে নারী ও শিশুর নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে। সামাজিক লজ্জা ও ভয়ের কারণে ভুক্তভোগী প্রথমে মুখ না খুললেও আত্মহত্যার চেষ্টার মাধ্যমে তার মানসিক বিপর্যয়ের গভীরতা সামনে আসে। ১২ জুলাই খাগড়াছড়ির ওই কিশোরী শিক্ষার্থী বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে পরিবারের জিজ্ঞাসাবাদে নির্যাতনের নির্মম সত্য উদ্ঘাটিত হয়।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে দেশে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১ হাজার ৫৫৫ জন নারী ও কন্যাশিশু। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার ৩৫৪ জন, যার সিংহভাগই শিশু ও কিশোরী। কেবল জুন মাসেই ধর্ষণের শিকার ৬৫ জন, যার মধ্যে ৪৩ জনই শিশু। এমনকি ধর্ষণের পর প্রাণ হারিয়েছে তিনজন, যাদের দুজনই শিশু।
এমজেএফ মনে করে, নারী ও শিশুর প্রতি এমন বর্বরতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এমজেএফ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়, এ ঘটনায় যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হয়। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মানসিক ও শারীরিক পুনর্বাসনের জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় সব সহায়তা অবিলম্বে নিশ্চিত করতে হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে আর কালক্ষেপণের সুযোগ নেই। এখনই সময় কার্যকর আইন প্রয়োগ, জনগণকে সচেতন করা এবং পারিবারিক-সামাজিক মূল্যবোধের ভাঙন রোধে সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়ার। না হলে আরও বহু শিশুর শৈশব পুড়ে ছাই হবে।
এমজেএফ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, এই অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই পারে ভবিষ্যতের ধর্ষকদের রুখে দিতে এবং সমাজে ন্যায়বিচার ও নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে। এখনই সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার।