
প্রতীকী ছবি
ধর্ষণের আলামত নষ্ট করার অভিযোগে বগুড়ার ধুনট থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্দু বালার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। বুধবার বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক জিয়া উদ্দিন মাহমুদ এই আদেশ দেন। ওসি কৃপা সিন্দু বালা বর্তমানে গাজীপুর শিল্প পুলিশে কর্মরত রয়েছেন।
বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২-এর সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মোজাম্মেল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ধুনট উপজেলায় এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনার আলামত নষ্ট করার অভিযোগে আদালত তাঁর বিরুদ্ধে এই আদেশ জারি করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার ওই স্কুলছাত্রীর বাবা-মা দুজনই কলেজের প্রভাষক। তাঁদের অনুপস্থিতির সুযোগে নিজ বাড়িতে একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হয় ওই শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে ধুনট থানায় মামলা করেন। ওই মামলা নথিভুক্ত (রেকর্ডকারী) কর্মকর্তা ও তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন ধুনট থানার তৎকালীন ওসি কৃপা সিন্ধু বালা। মামলার আলামত হিসেবে ধর্ষকের ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে গায়েব করে চার্জশিট দাখিল করেন তিনি।
পরে বাদী আদালতে নারাজি আবেদন করলে আদালত মামলাটি পুনরায় তদন্ত করার জন্য বগুড়া পিবিআইকে দেন। পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন তদন্ত শেষে ৭ অক্টোবর ধর্ষণের আলামত ধ্বংস করার অভিযোগে ওসি কৃপা সিন্ধু বালাকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ৮ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট গৃহীত হয় এবং কৃপা সিন্দু বালার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
তথ্যমতে, ২০২২ সালের ২ আগস্ট ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর মা বগুড়ার পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগে উল্লেখ করেন, তদন্ত চলাকালে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামি মুরাদুজ্জামান মুকুলকে গ্রেপ্তার করেন এবং তাঁর কাছ থেকে ধর্ষণের ভিডিও ও মোবাইল ফোন জব্দ করেন। এরপর তদন্তকারী কর্মকর্তা একই বছরের ১৪ মে তাঁকে ডেকে ধর্ষণের ভিডিওগুলো দেখান এবং জানান, উদ্ধার হওয়া ভিডিওগুলো সিডি করে উদ্ধার করা ফোনের সঙ্গে পরীক্ষার জন্য সিআইডিতে পাঠানো হবে।
কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তা জব্দ তালিকায় এবং আলামত ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো তালিকায় উদ্ধার হওয়া ভিডিওর সিডি পাঠানোর বিষয়টি উল্লেখ না করে শুধু উদ্ধার হওয়া দুটি মোবাইল ফোন পাঠিয়েছেন।
বাদী অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, পরে তিনি জানতে পেরেছেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা ফোন দুটি পাঠিয়ে সব তথ্য ধ্বংস করেছেন। ফলে উক্ত ফোন দুটি থেকে কোনো ভিডিও পাওয়া যাবে না বলে তাঁরা মনে করছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা টাকার বিনিময়ে আসামিকে রেহাই দেওয়ার জন্য ভিডিওর কথা উল্লেখ না করে দায়সারাভাবে চার্জশিট দাখিলের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি।