
নড়াইলের কালিয়ায় ৩০টি বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পুরুষশূন্য গ্রামটিতে এখন চরম আতঙ্ক দিন কাটাচ্ছেন নারী ও শিশুরা। শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে গ্রামটিতে গিয়ে দেখা যায় কোনো কোনো বাড়িতে আগুনের ধোয়া এখনও উড়ছে, অনেক বাড়ির সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, একাধিক বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়েছে। লুটপাট করা হয়েছে ঘরের নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কার কার ও আসবাবপত্র।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার দিকে কালিয়া উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ফরিদ মোল্যা (৫৭) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। হত্যা পরবর্তীতে প্রতিপক্ষের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও অর্ধশতাধিক বাড়িতে লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে । ওই রাতেই পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথ অভিযানে সংঘর্ষের সাথে জড়িত স্থানীয় উভয় পক্ষের ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত কাঞ্চনপুর গ্রামের আজগর মোল্যার মেয়ে অনামিকা বলেন, ফরিদ মোল্যা নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেন। ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক পিকলু, সাহেব মোল্যা, ইকবাল মোল্যা, কামরুল কাজি, কামাল কাজি, মোস্তাক শেখ, বুলু শেখ, খালিদ শেখ, জামির মল্লিক, জনি মল্লিক, কালু শেখের বাড়িসহ ৫০টি বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট করে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। এখনো হুমকি দিচ্ছেন, আমরা আতঙ্কে আছি, বাড়িতে থাকতে পারতেছি না।
কাঞ্চনপুর গ্রামের মিলন মোল্যার পুত্রবধূ ডলি বেগম বলেন, ভয়ে গ্রাম এখন পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার পর আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। কাল রাত থেকে না খেয়ে আছি। নারী ও শিশুদের নিয়ে চরম আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আততাফ মোল্যা মুঠো ফোনে বলেন, ওদের বাড়ির মালজিনিস ওরা ও ওদের আত্মীয়-স্বজনরা নিয়ে গেছে শুনেছি। আর বাড়িঘর কারা ভাঙচুর করেছে, আগুন দিয়েছে সেটা আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ফরিদ মোল্যার মৃত্যুর ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে বাড়ি ভাঙচুরের অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা আছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে।