নাফিজ সরাফাত পরিবারের বাড়ি, জমি ও ১৮ ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ – BanglaNewsBDHub.com |

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo


প্রতীকী ছবি

পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ও তার পরিবারকে বাড়ি, জমি ও ১৮টি ফ্ল্যাট ক্রসের আদেশ দেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। পরে দুদকের আদালত পরিদর্শক আমির হোসেন সাংবাদিকদের এ আদেশের সত্যতা নিশ্চিত করেন। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।

আদালতে দাখিল করা দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, নাফিজ সরাফাতের পরিবারের যে সম্পদগুলো জব্দ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে নাফিজের নামে গুলশানে একটি ২০ তলা বাড়ি রয়েছে। গুলশানে একটি, ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকায় চারটি, নিকুঞ্জ উত্তর আবাসিক এলাকায় একটি এবং বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটির ৫০ শতাংশ ফ্ল্যাটের মালিক তার। নিকুঞ্জে দুটি, গাজীপুরের কালিয়াকোরে ১০ কাঠার মধ্যে দুটি, রাজউকের পূর্বাচল নিউ টাউন প্রজেক্টে সাড়ে সাত কাঠার মধ্যে একটি প্লট রয়েছে। এছাড়া বাড্ডার কাঁঠালদিয়ায় তার আড়াই কাঠা, গাজীপুর সদরে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ ও জোয়ার সাহারায় ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ জমি রয়েছে।

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাড়ে সাত কাটা জমিতে চারতলা বাড়ির ৫০ শতাংশ, পান্থপথে একটি, গুলশান লিংক রোডে একটি, মিরপুর ডিওএইচএসে একটি, শাহজাদপুরে একটি এবং একটি ফ্ল্যাটের ৫০ শতাংশ মালিক নাফিজের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা সহিদের। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। এছাড়া নিকুঞ্জে তিন কাটা জমি, বাড্ডার কাঁঠালদিয়ায় আড়াই কাটা নল (আবাদযোগ্য) জমি এবং গাজীপুর সদরে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ চালা (উচ্চভূমি) জমি তার নামে রয়েছে।

ছেলে চৌধুরী রহিব সাফওয়ান সরাফাতের নামে বনানীর তিনটি ফ্ল্যাট ও বারিধারায় চারটি ফ্ল্যাট বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান নাফিজ সরাফাতও সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি রইস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট পিএলসির মালিকানার সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধে ব্যাংক ডাকাতি ও শেয়ারবাজার থেকে টাকা লোপাটের অভিযোগ রয়েছে। বিতর্কিত ব্যবসায়ী নাফিজ সরাফাত ও তার পরিবারের এসব স্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার আবেদন করেন দুদকের তদন্তকারী দলের প্রধান উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, চৌধুরী নাফিজ সরাফাতসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, জালিয়াতি ও গ্রাহক জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তদন্ত চলছে।

নাফিজ, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা ও ছেলে রহিবের দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে এবং তারা পলাতক রয়েছে।

আবেদনে আরও বলা হয়, দুদক তদন্ত শুরু করার পর নাফিজ সরাফাত ও তার পরিবারের সদস্যদের সব স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর, হস্তান্তর, বন্ধক বা বেহাত করার চেষ্টা করা হয়। সেজন্য এসব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা দরকার।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নাফিজ ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া গত বছরের ১৬ আগস্ট নাফিজের বিরুদ্ধে ব্যাংক দখল ও পুঁজিবাজার থেকে ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগেও তদন্ত শুরু করে দুদক। বিগত সরকারের আমলে আর্থিক খাতে অনিয়ম-দুর্নীতি করে পার পাওয়া নাফিজ সরাফাতের পুঁজিবাজার বিও অ্যাকাউন্টও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান নাফিজ সরাফাত গত এক দশকে হোটেল ব্যবসা, বিদ্যুৎ, মোবাইল টাওয়ার, মিডিয়াসহ বিভিন্ন খাতে তার ব্যবসার প্রসার ঘটিয়েছেন। অনিয়ম ও ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে ফারমার্স ব্যাংক যখন বন্ধের পথে, 2017 সালে মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আসে। সে সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য মহিউদ্দিন খান আলমগীর চাপের মুখে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরের বছর চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন; পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তনের পর ফারমার্স ব্যাংকের নাম পরিবর্তন করে 2019 সালের জানুয়ারিতে পদ্মা ব্যাংক রাখা হয়।

  • আদেশ
  • ক্রোক
  • জমি
  • নাফিজ সারাফাত
  • পরিবার
  • সমতল
  • বাড়ি
  • মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।