স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:৪৯
নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্ট এসোসিয়েশনে ব্যবসায়ী হাজী মোহাম্মদ সামস এর সংবাদ সম্মেলন – ছবি : বাংলানিউজবিডিহাব
ঢাকা: হাজী মোহাম্মদ সামস। বাড়ি নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায়। ১৯৭৮ সাল থেকে বিদেশে ছিলেন। প্রবাস জীবন শেষ করে দেশে এসে ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় পরিবারসহ বসবাস করেন। কিন্তু একটি সন্ত্রাসী বাহিনী প্রতিনিয়ত চাঁদা দাবি করছে এবং চাঁদার টাকা না দিলে পুরো পরিবারের সদস্যসহ জানে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ওই ব্যবসায়ী।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্ট এসোসিয়েশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সামস বলেন, ২০২৪ সালের মার্চ থেকে নরসিংদীর পলাশে অবস্থিত শাহজালাল সার কারখানার মালামাল প্রক্রিয়াজাত করে বিদেশে রফতানি করে এমন প্রতিষ্ঠান উসরা কনস্ট্রাকশনে উপদেষ্টা হিসেবে কাজ শুরু করি। এরপর মানিক নামে স্থানীয় একজন কন্ট্রাক্টর নিয়োগ করি। মানিক শুধুমাত্র শ্রমিক সরবরাহ করেন। এর কিছুদিন পর তৌহিদুল ইসলাম সিটু নামে আরেকজন মানিকের পরিবর্তে কাজ শুরু করে। তবে সিটুকে আমরা কখনোই নিয়োগ করি না। আমরা মানিককে নিয়োগ করেছি। মানিক সাব কন্ট্রাক্টর হিসেবে সিটুকে নিয়োগ করে থাকতে পারেন।
সামস বলেন, গত ৫ আগষ্টের পর সিটু আমাকে নানাভাবে হুমকি ধামকি দিতে থাকে। শ্রমিকদের দিয়ে নানাভাবে হয়রানি করতে থাকে। আকার ইঙ্গিতে বুঝায় যে, আমি যেন কোম্পানির কাজ ছেড়ে চলে যাই। আমি কাজ ছাড়লে তাদের বড় ধরণের লাভ হবে- এমন আশা তাদের। যেমন ২০ জন শ্রমিক খাটিয়ে ৫০ জন বলা এবং ১০০ টাকার খরচ বাড়িয়ে ১০০০ টাকা দেখানো ইত্যাদি লাভ হতে পারে তাদের। এসব করতে না পেরে প্রথমে পলাশ থানার ওসিকে ফিট করে আমার কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। বিষয়টি মালিক পক্ষ জানালে জানায়, এক টাকাও দেওয়া হবে না। এরপর ওই ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি। এ ঘটনার পর সিটু ও মানিক মিলে অনবরত হুমকি দিতে থাকে। হুমকি সহ্য করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। হুমকির বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করা আছে। এ সংক্রান্ত জিডিও রয়েছে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে সিটু ও মানিক মিলে দেড় কোটি টাকা চাঁদা দাবি করছে। তাদের দাবি, আমার কাছে এই টাকা পায়। অথচ আমি মানিকের কাছে লেনদেন বাবদ ৯০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকার মতো পেয়ে থাকি। কিন্তু সেই টাকা না দিয়ে উল্টো আমার কাছে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। এমনকি তারা হুমকিতে বলেন, সিটু বিএনপি নেতা এবং সাংবাদিক। তাই কেউ তার কিছুই করতে পারবে না- বলে জানায় মানিক। সিটু থাকেন ঢাকার উত্তরায়।
তিনি জানান, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বসুন্ধরার বাসার সামনে ৫০-৬০ লোক নিয়ে এসে হুমকি ধামকি দিতে থাকে। এদিন আমি পলাশে ছিলাম। আমাকে না পেয়ে আমার পুরো পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যান। এরপর পলাশেও আমার ওপর হামলা করেন। তারা জানায়, কারখানা ছাড়বি এবং টাকা দিবি। না দিলে তোরা কেউ বাঁচতে পারবি না। এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করে প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন তিনি। বর্তমানে তিনি নিজ বাসায় যেতে পারছেন না। এ অবস্থায় নিজের পরিবারের নিরাপত্তা দিতে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।
এছাড়া এসব বিষয় নিয়ে তিনি আদালতে মামলার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন বলে জানান ব্যবসায়ী সামস।
এ বিষয়ে জানতে তৌহিদুল ইসলাম সিটুকে ফোন করা হলে কোন রেসপন্স মেলেনি। অন্যদিকে মানিকের নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
বাংলানিউজবিডিহাব/ইউজে/আরএস