‘নির্বাচনের কথা বললে উপদেষ্টাদের মুখ কালো হয়ে যায়’

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo

ঢাকা: ‘নির্বাচনের কথা বললে উপদেষ্টাদের মুখ কালো হয়ে যায়’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটিসদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচনি ব্যবস্থার যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন, তার জন্য তিন মাস সময়ই যথেষ্ট। সুতরাং নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার আসার সুযোগ দিন। নির্বাচিত সরকার ছিল না বলে ’৭১ সালে আমাদের যুদ্ধ করতে হয়েছিল। আবার কেন নির্বাচিত সরকারের জন্য আমাদের তর্ক-বিতর্ক করতে হবে।’

‘নির্বাচনের কথা বললে উপদেষ্টাদের মুখ কালো হয়ে যায়। মনে হয় আমরা কোনো অন্যায় দাবি করছি। আমরা কোনো অন্যায় দাবি করছি না। বিএনপিকে ক্ষমতায় বসান, সেটাও বলছি না। দয়া করে কিংস পার্টি গঠন করবেন না। যারা রাজনীতি করতে চায়, তারা সরকার থেকে বেরিয়ে রাজনীতি দল গড়ে তুলুক’— বলেন মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘একটি পার্লামেন্ট সংস্কার করবে। সেই পার্লামেন্টকে আসার ব্যবস্থা করে দিন। শুধু শুধু সময় ক্ষেপণ করবেন না। ছয় মাসেই বোঝা গেছে আপনাদের দৌঁড় কতটুকু। তবুও আপনাদেরকে সম্মান করি। আমরা সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ঐক্য চাই। ছাত্র-জনতার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য অত্যন্ত প্রয়োজন। আশা করি এই পথে আপনারা কেউ দেয়াল তৈরি করবেন না।’

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা মানুষকে উজ্জীবিত করেছে। সারা পৃথিবী জানে বাঙালি লড়াইয়ের জাতি। তারা প্রতিরোধ করতে জানে। মুক্তিযুদ্ধ যদি না হতো তাহলে দেখা যেত এক মাস পরে ভারতে যারা পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে তারা দেশে ফিরত এবং শেখ মুজিবরকে প্রধানমন্ত্রী বানানো হতো। আমরা দেশ বাঁচাতে এবং মা-বোনদের ইজ্জত রক্ষার্থে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশে কেন, পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্রে এরকম দুর্নীতি করেছে কোনো দল, এটার প্রমাণ পাওয়া যাবে না। বিএনপি এবং ছাত্র-জনতার ত্যাগের ফলে আমরা আবার নতুন করে গণতন্ত্র পূর্ণ প্রতিষ্ঠার সুযোগ পেয়েছি। সুতরাং আমাদের উচিত এই সময়ে সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকা।’

ভারতের উদ্দেশে হাফিজ বলেন, ‘তাদের পছন্দের নেত্রী বিদায় হওয়াতে তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। এখন বাংলাদেশের মধ্যে প্রবেশ করে আম গাছ কেটে নিয়া যায়, বাংলাদেশের সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার চেষ্টা করে। ভুলে যাবেন না ৭১ সালে যুদ্ধ করে আমরা এ দেশ স্বাধীন করেছি।’

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি অত্যন্ত সম্মানী ব্যক্তি, আপনাকে আমরা সম্মান জানাই। আপনার কোনো সফলতা দেখতে পাচ্ছি না। তবুও আপনাকে আমরা সম্মান জানাব। কিন্তু নাবালকের কথায় আপনি চলবেন না।’

হাফিজ বলেন, ‘বাংলাদেশে নতুন একটি কথা শোনা যাচ্ছে প্রোক্লেমেশন। মনে হচ্ছে দেশটা এই প্রথম স্বাধীন হল। এখানে যারা উপস্থিত রয়েছেন তারা ৭১ সালের সেই দিনের কথা মনে করুন। যারা হাসতে হাসতে জীবন দিয়েছেন। জীবনটা একেবারেই তুচ্ছ। এটা প্রত্যেকটি মুক্তিযোদ্ধার মনের কথা। আমরা যুদ্ধ করেছি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। মানবিক, মানবতা, সাম্য— এ লক্ষ্য ধারণ করে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। আর এখন আসছে প্রোক্লেমেশন! জনগণ এটা বোঝেই না।’

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজীজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ফজলুর রহমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ আরও অনেকে।

বাংলানিউজবিডিহাব/এজেড/এমপি

নির্বাচন
বিএনপি
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ
মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।