নির্বাচন, করিডোর ও মব ভায়োলেন্স নিয়ে যা বললেন সেনাপ্রধান – BanglaNewsBDHub.com |

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo



আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান দেশের ভবিষ্যৎ পথ নির্ধারণের অধিকার একটি নির্বাচিত সরকারেরই রয়েছে। গতকাল বুধবার ঢাকা সেনানিবাসের সেনা প্রাঙ্গণে অফিসার্স অ্যাড্রেসে সেনাপ্রধান বেশ কিছু প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে নির্বাচন ছাড়াও করিডোর, বন্দর, মব ভায়লেন্স, সংস্কারসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। সেখানে উপস্থিত সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্রমতে, সেনাপ্রধান বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জন্য একটি মানবিক করিডোর প্রতিষ্ঠার মতো সংবেদনশীল এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে আসা উচিত। এখানে জাতীয় স্বার্থ দেখতে হবে। যা করার জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেই করতে হবে। যা-ই করা হোক না কেন, পলিটিক্যাল কনসেনসাসের (রাজনৈতিক ঐকমত্য) মাধ্যমে সেটা হতে হবে। সেনাবাহিনী কখনও জাতীয় সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ করে- এমন কোনও কাজে জড়িত হবে না এবং অন্যদেরও তা করতে দেবে না।

গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় উদ্বোধনী ভাষণে জেনারেল ওয়াকার জাতীয় স্থিতিশীলতা রক্ষায় সশস্ত্রবাহিনীর সেবা এবং অঙ্গীকারের প্রশংসা করেন। তবে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, ৫ আগস্ট থেকে সেনাবাহিনীর অব্যাহত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কিছু মহল তাকে এবং বাহিনী উভয়কেই অন্যায্যভাবে লক্ষ্যবস্তু করে তুলেছে।

‘মব ভায়োলেন্স’ বা উচ্ছৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ বিশৃঙ্খলা বা আক্রমণের বিরুদ্ধেও কঠোর বার্তা দিয়ে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সেনাবাহিনী এখন আরও কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। সংঘবদ্ধ জনতার নামে বিশৃঙ্খলা বা সহিংসতা আর সহ্য করা হবে না।

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশিদের হাতে দেওয়া নিয়ে সাম্প্রতিক আলোচনা ও বিতর্কের বিষয়েও কথা বলেছেন সেনাপ্রধান। এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এখানে স্থানীয় মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাদের মতামত প্রয়োজন হবে। রাজনৈতিক সরকারের মাধ্যমে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

সংস্কার প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, কী সংস্কার হচ্ছে, কীভাবে হচ্ছে, এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। এ বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো পরামর্শ বা আলোচনা করা হয়নি।

সামনে ঈদুল আজহা। মানুষ যেন নিরাপদে ও উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতে পারে, সে ব্যাপারে সহযোগিতা করতে বলেছেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সেনাপ্রধান সব পর্যায়ের সেনাসদস্যদের নিরপেক্ষ থাকার এবং ভবিষ্যতে নির্বাচনী দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের নির্দেশ দেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সহযোগিতা করছি। সহযোগিতা করে যাব।’

জাতীয় ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে সেনাপ্রধান বলেছেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার যেকোনো প্রচেষ্টা অথবা আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করার যেকোনো প্রচেষ্টার কঠোর জবাব দেওয়া হবে। সশস্ত্রবাহিনী চুপ করে থাকবে না। আমরা একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। সব পরিস্থিতিতে এই ঐক্য বজায় রাখতে হবে। ঐক্যের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করে জেনারেল ওয়াকার সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর মধ্যে ঐক্যের আহ্বান জানান।

অফিসার্স এড্রেসে ঢাকায় অবস্থানরত সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা এতে অংশ নেন। ঢাকার বাইরে কর্মরত অনেক কর্মকর্তা ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। এছাড়া শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত কর্মকর্তারাও ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

  • নির্বাচন
  • বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
  • সেনাপ্রধান
  • মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।