নূরুল হুদাকে হেনস্তায় সরকার দায় এড়াতে পারে না : আসক – BanglaNewsBDHub.com |

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo



সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে ‘মব’ (উচ্ছৃঙ্খল জনতার বিশৃঙ্খলা) তৈরি করে হেনস্তা ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। রবিবার (২২ জুন) রাতে রাজধানী ঢাকার উত্তরার বাসায় ঢুকে একদল লোক তাকে বের করে আনেন এবং জুতার মালা পরিয়ে দেন। ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পরে তাকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, পরে বিএনপির করা একটি মামলায় নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ঘটনায় সরকারের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই’’ বলে মনে করছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। সোমবার (২৩ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ মন্তব্য করে আসক।

আসকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ জাতীয় পরিস্থিতিতে ইতোপূর্বেও (সরকারের তরফ থেকে) এ ধরনের বিবৃতি লক্ষ্য করা গেলেও কার্যত দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার কোনো নজির দেশের জনগণ দেখতে পারেনি। কাজেই এ ধরনের ঘটনাগুলোতে সরকারের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দুয়েকবার সতর্কতা উচ্চারণ করা হলেও সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের সংঘবদ্ধ সহিংসতার বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকর ও জোরালো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। বরং আপাতদৃষ্টিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তা এসব সহিংস গোষ্ঠীগুলোর অপকর্মে পরোক্ষভাবে প্রভাব জোগাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা রাষ্ট্রের একজন নাগরিক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাকে এভাবে সংঘবদ্ধ সহিংস গোষ্ঠীর দ্বারা হামলার শিকার করে লাঞ্ছিত করা শুধুমাত্র ব্যক্তির অপমান নয়, এটি রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও আইনের শাসনের প্রতি অবমাননার সামিল।

কে এম নুরুল হুদাকে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি বে-আইনি সমবেত হয়ে গলায় জুতার মালা পড়িয়ে মারধর করে এবং পরে তাকে পুলিশের কাছে সোর্পদ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে প্রকাশিত এই দৃশ্য শুধু একজন ব্যক্তির প্রতি নয়, বরং দেশের সংবিধান, মানবাধিকারের ন্যূনতম মূল্যবোধ ও আইনের শাসনের প্রতি সরাসরি আঘাতের নামান্তর।

আসক মনে করে, নাগরিকের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, সম্মান ও ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার বাংলাদেশ সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদে সুরক্ষিত। অতীত দায়িত্ব বা রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে কেউ আইন অমান্য করেছেন কি না, তা নির্ধারণের এখতিয়ার কেবলমাত্র আদালতের, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর নয়। একজন নাগরিকের বিরুদ্ধে যদি কোনো গুরুতর অভিযোগ থেকেও থাকে, তা নিষ্পত্তির একমাত্র পথ হচ্ছে সংবিধান ও প্রচলিত আইনের নির্ধারিত প্রক্রিয়া।

উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দুষ্কৃতকারী ব্যক্তিরা যদি এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটিয়ে থাকে, তা বিচারহীনতার একটি বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত তৈরি করে। যা ভবিষ্যতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথকে আরও জটিল করে তুলতে পারে এবং আইনের শাসনের পরিবর্তে মব সংস্কৃতিকে যেন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার প্রচ্ছন্ন সংকেত দেয়।”

প্রসঙ্গত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, নূরুল হুদা সাদা একটি টি-শার্ট ও লুঙ্গি পরা। তাকে ঘিরে রয়েছেন একদল লোক। তারা নূরুল হুদাকে একটি জুতার মালা পরিয়ে রেখেছেন। এক ব্যক্তিকে জুতা দিয়ে তাকে আঘাত করতেও দেখা যায়। পাশেই পুলিশ দাঁড়ানো। ভিডিওতে আরও দেখা গেছে, কেউ কেউ নূরুল হুদার দিকে ডিম ছুড়ে মারছেন এবং নানাভাবে তাকে হেনস্তা করা হচ্ছে। সূত্র জানিয়েছে, হেনস্তার পর নূরুল হুদাকে পুলিশে দেওয়া হয়।

 

  • আসক
  • নূরুল হুদা
  • হেনস্তা
  • মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।