পদত্যাগ না করায় পটুয়াখালীর বাউফল বাজেমহল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা পারভীন বেগমকে (৫৪) দুইবার মারধরের অভিযোগ উঠেছে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষক বর্তমানে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক পারভীন বেগম বাদী হয়ে মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে বাউফল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে ওই বিদ্যালয়ের চার সহকারী শিক্ষকের নাম উল্লেখ করেন তিনি।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শংকর দাস, মুশফিকা জাহান নুপুরসহ একদল প্রধান শিক্ষককে পদত্যাগের জন্য চাপ দিয়ে আসছে। প্রধান শিক্ষক পারভীন বেগম পদত্যাগ না করায় ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেয়। যথারীতি মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে গেলে অভিযুক্তরা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। একপর্যায়ে তাকে জোর করে টেনে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়।
এর আগে ১৯ আগস্ট অভিযুক্ত শিব শঙ্কর, মুশফিকা জাহান ১৫-২০ জন নিয়ে প্রধান শিক্ষক পারভীন বেগমের অফিস কক্ষে গিয়ে বলপ্রয়োগ করে পদত্যাগ করেন। এ সময় তারা তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে এবং বেশ কয়েকটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। পরে প্রধান শিক্ষককে বের করে দিয়ে অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর থেকে প্রধান শিক্ষককে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিদিনই স্কুলে যাওয়ার পথ অবরুদ্ধ।
বাউফল বাজেমহল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভীন বেগম বলেন, আমি কিছুটা মানসিকভাবে অসুস্থ। আমি আমার স্কুলের দায়িত্ব সততার সাথে পালন করে যাচ্ছি। বিদ্যালয়ের উন্নয়নে অনেক কাজ করেছি। আমি কখনো কোনো দুর্নীতি বা অনিয়ম করিনি। দেশের পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে কয়েকজন সহকারী শিক্ষক আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। আমাকে পদত্যাগের জন্য চাপ দিয়েছেন। আমি পদত্যাগ না করায় তারা আমাকে বারবার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক শিব শংকর বলেন, সব অভিযোগই মিথ্যা ও বানোয়াট। আমরা তাকে মারধর করিনি। তিনি (প্রধান শিক্ষক) আমদেনের বিরুদ্ধে হয়রানির মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। একই কথা বলেন আরেক অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মুশফিকা জাহান নূপুর।
এ ব্যাপারে বাউফল থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।