পাকিস্তানি বিনোদন অঙ্গনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের মৃত্যু। নয় মাস আগে করাচির এক ভাড়া করা ফ্ল্যাটে মৃত্যু হয় এ অভিনেত্রীর। তখন থেকে তার অর্ধগলিত মরদেহ পড়ে ছিল ফ্লোরে। বিষয়টি এতদিন চাপা থাকলেও সম্প্রতি তদন্তে নতুন মোড় নেয়ায় তা আবারো সামনে এসেছে। ঘটনায় রহস্যের ধোঁয়া এমনভাবে জড়িয়েছে যে, এখন তদন্তে নামতে হয়েছে পাকিস্তানের কাউন্টার টেররিজম ডিপার্টমেন্ট (সিটিডি)-কে।
২০২৫ সালের জুলাইয়ে পুলিশ উদ্ধার করে হুমাইরার অর্ধগলিত মরদেহ। জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে ক্লিফটনে দেখা গিয়েছিল তাকে। সেদিনই তিনি বাসায় ফিরে নিখোঁজ হন। এরপর দীর্ঘ নয় মাস তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। আশ্চর্য হলেও সত্য, তার ফ্ল্যাটটি ভেতর থেকে তালাবদ্ধ ছিল। বন্ধ ছিল দরজা-জানালাও, শুধু বারান্দার একটি দরজা খোলা ছিল।
দারোয়ান স্বীকার করেছেন, কয়েক মাস আগে দুর্গন্ধ টের পেলেও গুরুত্ব দেননি। সময়ক্ষেপণের ফলে ফরেনসিক রিপোর্ট থেকেও খুব বেশি তথ্য মিলছে না।
তদন্তে উঠে এসেছে, হুমাইরা ব্যবহার করতেন তিনটি সিম। মৃত্যুর আগে তার সবই সচল ছিল। শেষ সময়ে তিনি অন্তত ১০ জনকে ফোন করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সফল হননি। তার ভাই নাভিদ আসগরও এই তালিকায় ছিলেন।
সিটিডি জানিয়েছে, তারা এখন হুমাইরার মোবাইল ফোনের ডিলিট হওয়া মেসেজ ও কল হিস্টোরি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে। এই তথ্য থেকে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যেতে পারে।
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, হুমাইরার অ্যাকাউন্টে এখনো প্রায় ৪ লাখ রুপি রয়েছে—যা অর্থকষ্টের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়। কিন্তু তার ফ্ল্যাটে কোনো গয়না ছিল না, যা পুলিশকে ভাবাচ্ছে।
প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী, তিনি হয়তো বাথরুম থেকে বের হয়ে কোনো কিছুতে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যান এবং তার মৃত্যু হয়। তবে এমন একটি সম্ভাবনার পাশাপাশি পুলিশ পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের দিকেও নজর দিচ্ছে।
তদন্তকারীদের ভাষ্যে, ঘটনাস্থল, মোবাইল ডেটা, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, এবং ফ্ল্যাটে গয়নার অনুপস্থিতি—সবকিছু মিলিয়ে এটি নিছক দুর্ঘটনা নয় বলেই সন্দেহ করছেন তারা।
পাকিস্তানি মিডিয়ায় একসময় নিয়মিত কাজ করতেন হুমায়রা আসগর। কিন্তু শেষ দিকে কাজ পেতে সমস্যায় পড়েছিলেন।
সিটিডি ও করাচি পুলিশ এখন মৃত্যুর সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছে। মোবাইলের তথ্য, অডিও ক্লিপ এবং প্রাপ্ত অন্যান্য প্রমাণ বিশ্লেষণের পরেই নিশ্চিত হওয়া যাবে, এটি আত্মহত্যা, দুর্ঘটনা না পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।