
প্রতীকী ছবি
ফরিদপুরের নগরকান্দায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগঠক বৈশাখী ইসলাম বর্ষার ওপর হামলার ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার (স্ট্যান্ড রিলিজ) করা হয়েছে থানার ওসি মো. সফর আলীকে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬ জনকে আটক করা হয়েছে।শনিবার (৩১ মে) বিকালে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার এ আদেশ দেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. শামসুল আজম।
তিনি বলেন, জনস্বার্থে ও প্রশাসনিক কারণে নগরকান্দা থানার ওসি মো. সফর আলীকে থানা থেকে ফরিদপুর পুলিশ লাইনস-এ সংযুক্ত করা হয়েছে।
এসব ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেলের অতিরিক্ত দায়িত্বরত) আসিফ ইকবাল। তিনি বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ও ঘরবাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দুটি মামলায় বাদী হয়েছেন বৈশাখী ইসলাম বর্ষা। এছাড়া পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে থানা পুলিশ বাদি হয়ে আরেকটি মামলা করেছেন। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে, শুক্রবার (৩০ মে) বিকালে নগরকান্দা উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের ভবুকদিয়া গ্রামে বৈশাখী ইসলাম বর্ষা নামে এক বৈষম্যবিরোধী নেত্রীকে মারধরের ঘটনা ঘটে। সে ওই গ্রামের সাবু শেখের মেয়ে এবং জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক। এ ঘটনার পরবর্তী ঘটনার প্রেক্ষাপটে তাকে নগরকান্দা থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বৈশাখী জানান, গত কয়েকদিন যাবৎ বৈশাখীর ছোট বোনকে উক্ত্যাক্ত করে আসছিল স্থানীয় জালাল বেপারীর ছেলে শরিফ বেপারী। এ ঘটনার বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় উক্ত্যক্তকারী যুবককে পুলিশ আটক করলে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন স্থানীয়রা। তখন পুলিশের উপস্থিতিতে তাকে স্থানীয় সেকেন কাজী ও তার ছেলে সাগরকাজীসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা বৈশাখী ও তার ছোট বোনকে মারধর করেন বলে অভিযোগ করেন বৈশাখী।
হামলার ঘটনার পরে বৈশাখী ফেসবুক লাইভে এসে পুরো ঘটনার বর্ণনা দিলে ফরিদপুর থেকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র নেতারা ঘটনাস্থল বৈশাখীর বাড়িতে যান। এ সময় তাদের উপর চড়াও হয় স্থানীয় একদল সন্ত্রাসী। তারা বৈশাখীর বাড়িতেও হামলা চালায়।
অভিযুক্ত সেকেন কাজী ও সাগর কাজীর কোন পদ পদবি না থাকলেও বিএনপির উপজেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবি দিয়ে ব্যানার ফেস্টুন বানিয়ে এলাকায় টাঙিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং ৫ তারিখের পর থেকে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
তবে বিএনপির সাথে এই ঘটনার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত শরীফ। তিনি বলেন, বিএনপিকে দায়ী করার জন্য মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে। বিএনপির কেউ এঘটনার সাথে জড়িত নয়। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।