
বকেয়া বেতন-বোনাস ও অন্যান্য পাওনার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে তৈরি পোশাকশ্রমিকদের ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পুলিশের বাধার মুখে পড়েছে। ফলে আজ মঙ্গলবার বেলা ৩টা থেকে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা।
গাজীপুরের টিএনজেড গ্রুপের ৮টি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান এবং আশুলিয়ায় অবস্থিত ছেইন অ্যাপারেলস লিমিটেড গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীরা এই কর্মসূচিতে নেমেছেন। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী রাত ৮টা পর্যন্ত যমুনা অভিমুখী সড়ক অবরোধ করে তাঁরা সেখানে অবস্থান করছিলেন।
১১ মে থেকে গাজীপুরের টিএনজেড গ্রুপের ৮টি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান এবং আশুলিয়ায় অবস্থিত ছেইন অ্যাপারেলস লিমিটেড গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীরা শ্রম ভবনের সামনে বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাস, নোটিশ পে, সার্ভিস বেনিফিটসহ সব পাওনার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। বেতন-বোনাস না পাওয়ায় গতকাল ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচির ঘোষণা দেন তাঁরা।
মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনের সামনে থেকে শ্রমিকেরা মিছিল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে যান। কাকরাইল মসজিদের সামনের মোড়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তাঁরা। শ্রমিকেরা সেখানে রাস্তাতেই বসে পড়েন। এ সময় বেতনের দাবিতে শ্রমিকেরা ‘যাব না রে, যাব না, বেতন ছাড়া যাব না’, ‘দুনিয়ার মজদুর, এক হও’, ‘বাঁচার মতো বাঁচতে দাও, নইলে গদি ছাইড়া দাও’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
শ্রমিকেরা জানান, টিএনজেড গ্রুপের কাছে তাঁদের পাওনা ৫৪ কোটি টাকা। ঈদুল ফিতরের আগে শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে ৩ কোটি টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও ২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা দেওয়া হয়। প্রত্যেক শ্রমিক ৯ হাজার ১০০ টাকা পান। বাকি টাকা গত মাসের ৮ তারিখ দেওয়ার কথা ছিল; কিন্তু তাঁরা টাকা পাননি।
শ্রমিকদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে কাকরাইলে অবস্থান নিয়েছেন বামপন্থি কয়েকটি ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরাও। সেখানে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘পাওনা পরিশোধে মিটিংয়ের পর তারিখ দেওয়া হয়; কিন্তু শ্রমিকেরা বেতন পান না। তাঁদের পাওনা পরিশোধে মালিক, শ্রমিক ও সরকারের যে ত্রিপক্ষীয় কমিটি হয়েছে, সেই কমিটি বারবার সিদ্ধান্ত নিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তাই শ্রমিকেরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছেন। আমরা কোনো আশ্বাস চাই না। যতক্ষণ শ্রমিকেরা তাঁদের শ্রম-ঘামের পাওনা পাবেন না, ততক্ষণ আন্দোলন চলবে।’