বরখাস্ত হলেন এনবিআরের আরও ৮ কর্মকর্তা – BanglaNewsBDHub.com |

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo



আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের কোনো সাজার মুখে পড়তে হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও একের পর এক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার। মঙ্গলবার এনবিআরের আট কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এতে সই করেছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন। তাই বিভাগীয় ব্যবস্থা হিসেবে তাঁদের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে এনবিআরে সংযুক্ত করে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ সময় তাঁরা নিয়ম অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন।

বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন কর অঞ্চল-২, ঢাকার বিভাগীয় প্রতিনিধি (যুগ্ম কর কমিশনার) মাসুমা খাতুন; কর অঞ্চল-১৫, ঢাকার যুগ্ম কর কমিশনার মুরাদ আহমেদ; কর অঞ্চল, কুষ্টিয়ার যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান; কর অঞ্চল-নোয়াখালীর যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা; কর অঞ্চল কক্সবাজারের যুগ্ম কর কমিশনার মো. আশরাফুল আলম প্রধান; কর অঞ্চল খুলনার উপ-কর কমিশনার মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলাম; কর অঞ্চল রংপুরের উপ-কর কমিশনার মোসা. নুশরাত জাহান শমী এবং কর অঞ্চল-কুমিল্লার উপ-কর কমিশনার ইমাম তৌহিদ হাসান শাকিল।

পৃথক আটটি আদেশে বলা হয়েছে, যেহেতু তাঁরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গত ২২ জুনের জারি করা বদলির আদেশ অবজ্ঞাপূর্বক প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করায় এবং এর মাধ্যমে বদলি আদেশ অমান্যকারীকে সমর্থন করায় তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং সেহেতু সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৩৯(১) ধারা অনুযায়ী তাঁদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগপূর্বক চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

আদেশে আরও বলা হয়, তাঁরা সাময়িক বরখাস্তকালে বিধিমোতাবেক খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে জারি করা এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

গত ১২ মে সরকার এনবিআর পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে এনবিআর ভেঙে দুটি বিভাগ রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা গঠনের অধ্যাদেশ জারি করে। এতে অসন্তোষ দেখা দিলে কর্মকর্তারা কলমবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করেন। সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার আশ্বাসের পর আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হয়। তবে স্বার্থ সংরক্ষণে অসহযোগিতার অভিযোগ এনে চেয়ারম্যানের পদত্যাগ বা অপসারণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যান কর্মকর্তারা।

২২ জুন কয়েকজন কর্মকর্তাকে বদলি করে আদেশ জারি করে এনবিআর। তাঁদের ২৪ জুন বা তার আগে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয়। তবে সেই বদলি আদেশ প্রত্যাখ্যান করে ২৪ জুন এনবিআর ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে বদলির আদেশ ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানান কর্মকর্তারা।

আন্দোলনের কারণে কাস্টমসের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত হয়। এই অবস্থায় ২৯ জুন ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় কোনো সাজা দেওয়া হবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন কর্মকর্তারা।

তবে এরপর এনবিআরের তিন সদস্য ও এক কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

৯ জুলাই আন্দোলনকারী কর্মকর্তাদের বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, ‘চেয়ারম্যান হিসেবে আমার বিরুদ্ধে যাঁরা আন্দোলন করেছেন, আমি তাঁদের ক্ষমা করে দিয়েছি। কিন্তু যাঁরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন, রাষ্ট্র তাঁদের ক্ষমা করবে কি না, তা আমি জানি না।’

  • এনবিআর
  • কর্মকর্তা
  • বরখাস্ত
  • মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।