বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত গ্রেফতার

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo

বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলি রুবাইয়াত। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘বিএসইসির সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামকে ধানমন্ডি এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে দুদকের একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।’

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ২৪ আগস্ট শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম ও তার ছেলে জুহায়ের সারার ইসলামসহ আট ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়। সরকারি আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ব্যাংকগুলোকে এ নির্দেশ দেয়।

গত মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের পাসপোর্ট বাতিল করে বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ও পাসপোর্ট অধিদফতরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়।

গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত এবং তার সহযোগী আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। প্রাথমিক তথ্যে উল্লেখ করা হয়, ওই ব্যক্তিরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।

আয়বহির্ভূত এক হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ স্থাবর ও অস্থাবর অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন তারা। এছাড়া এই ব্যক্তিরা আইন ও বিধিমালা লঙ্ঘন করে নিজ নামে ও তাদের পরিবার-পরিজনের নামে-বেনামে বিদেশে অর্থপাচার করেছেন। যেসব দেশে অর্থ পাচার করা হয় সেগুলো হলো- সংযুক্ত আরব আমিরাত, কানাডা, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।

বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসাবে শিবলী রুবাইয়াতের দ্বিতীয় দফা নিয়োগ নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের বিরোধিতা ছিল। কিন্তু ওই সময়ে ব্যাপক ক্ষমতাধর ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমানের তদবিরে নিয়োগ পান শিবলী। এক্ষেত্রে সালমান এফ রহমানকে শেয়ারবাজার থেকে ৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকার সুবিধা দেওয়া হয়। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার শীর্ষ পদে বসে বেআইনিভাবে শেয়ার ব্যবসা করেছেন শিবলী রুবাইয়াত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত ২০২০ সালের ১৭ মে প্রথম দফায় বিএসইসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন। পুনর্নিয়োগ পেয়ে গত বছরের ১৬ মে তিনি আবার বিএসইসি চেয়ারম্যানের দায়িত্বে বসেন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ১০ আগস্ট বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন শিবলী রুবাইয়াত। এর পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ বিভাগে ফিরে যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শিবলী রুবাইয়াত সশরীর না গিয়ে এক ব্যক্তিকে পাঠিয়ে বিভাগে যোগদানপত্র জমা দেন। তবে তিনি ক্লাস নেন না।

শিবলী রুবাইয়াতের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে অনিয়ম-দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ আছে। কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারের দাম বাড়াতে তিনি কারসাজিতে জড়িতদের নানাভাবে সহায়তা করতেন। তার প্রশ্রয়ে শেয়ারবাজারে একটি চক্র গড়ে ওঠে। এই চক্র শেয়ারবাজার থেকে অর্থ লোপাটে নানাভাবে তার কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা পেত।

এসব অভিযোগের পাশাপাশি বিনিয়োগ আকর্ষণের নামে বিদেশি রোড শো করার কারণে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিলেন শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম।

বাংলানিউজবিডিহাব/ইউজে/পিটিএম

গ্রেফতার
বিএসইসি
শিবলি রুবাইয়াত
সাবেক চেয়ারম্যান

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।