বিজিবি-বিএসএফ বৈঠকে ১২ বিষয়ে আলোচনার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo

ছবি কোলাজ: বাংলানিউজবিডিহাব

ঢাকা: আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি ভারতের দিল্লিতে দুই দেশের সীমান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ সংক্রান্ত যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। গত বছরের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর এই প্রথম দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হতে যাচ্ছে।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বাংলানিউজবিডিহাবকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনুষ্ঠেয় সীমান্ত বৈঠকে যোগ দিতে আগামী  ১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাড়াও প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের একজন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন করে প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশ নেবেন। মোট ১২ জন সদস্য বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে থাকার কথা রয়েছে।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মহাপরিচালক (ডিজি) পর্যায়ে চার দিনব্যাপী ৫৫তম বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত বৈঠকে ১২টি বিষয়ে আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। দেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এবং দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো সমুন্নত রেখে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বৈঠকে যোগ দিতে ভারতে যাচ্ছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ১২ জন কর্মকর্তা।

অন্যান্যরা হলেন— বিজিবির এডিজি মো. সোহরাব হোসেন ভুইয়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এম জসীম উদ্দিন খান, বিজিবির সেক্টর কমান্ডার মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল মো. রেজাউল করিম, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের যুগ্ম সচিব (পরিচালক) মোহাম্মদ আব্দুল কাদের শেখ।

এ ছাড়াও বিজিবির পরিচালক (স্টাফ অফিসার) মাসুদ পারভেজ রানা, বিজিবির পরিচালক (স্টাফ অফিসার) আব্দুল্লাহ আল মাশরুকি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মো. মনোয়াত মোকাররম, যৌথ নদী কমিশনের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সাঈদ, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের যুগ্ম পরিচালক মুহাম্মদ জিল্লুর রহমান এবং বিজিবি ডিজির এডিসি সাকিব হাসান সম্মেলনে যোগ দেবেন।

এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়াদি যেমন- সীমান্ত হত্যা, ভারতের শূণ্যরেখার ১৫০ গজের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ, চোরাচালান, অবৈধ অনুপ্রবেশ, মানবপাচার, নদীগুলোর পানির সুষম বণ্টনসহ ১২টি বিষয়ে সীমান্ত সম্মেলনে আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিষয়গুলো হলো—

  • বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিক/ভারতীয় দুষ্কৃতকারীদের সীমান্ত হত্যা/সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর গুলি চালানো/আহত করা বন্ধ করা।
  • বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশি নাগরিকদের ধরে নিয়ে যাওয়া/আটক করা বন্ধ করা।
  • বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিকদের সীমানা লঙ্ঘন/অবৈধ পারাপার/অনুপ্রবেশ বন্ধ।
  • ভারত থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা ও ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ মাদকদ্রব্য, অস্ত্র ও গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরকদ্রব্য চোরাচালান প্রতিরোধ।
  • সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে ভারতের অনুমোদনহীন উন্নয়নমূলক অবকাঠামো নির্মাণকাজ এবং বিএসএফের বাধায় বন্ধ থাকা বাংলাদেশ পার্শ্বের উন্নয়নমূলক কাজ নিষ্পত্তি করা।
  • আগরতলা থেকে আখাউড়ার দিকে বর্জ্য পানি প্রবাহিত হয়, এমন চারটি খালে পানি শোধনাগার স্থাপন।
  • বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী নদীগুলোর পানির সুষম বণ্টন, নদী থেকে পানি উত্তোলন, পানি চুক্তি বাস্তবায়ন এবং রহিমপুর খালের মুখ পুনরায় উন্মুক্ত করা।
  • বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিক/ভারতীয় দুষ্কৃতকারী/অপরাধীদের আন্তর্জাতিক সীমানা লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ রোধ।
  • বিতর্কিত মুহুরির চর এলাকায় সীমানা নির্ধারণ ও বিভিন্ন এলাকায় বর্ডার পিলার স্থাপনের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ করা।
  • বাংলাদেশের বর্তমান বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গুজব’ ছড়ানো বন্ধ করা।
  • সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানের জন্য ‘কার্যকর সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (কো-অর্ডিনেটেড বর্ডার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান সিবিএমপি)’ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন।
  • পারস্পরিক আস্থা ও সৌহার্দ্য বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ।

বাংলানিউজবিডিহাব/ইউজে/এইচআই

বাংলাদেশ
বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক
ভারত

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।