বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত এসেছে। উপদেষ্টা পরিষদের সভায় গত বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হয়, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সীমা বাড়িয়ে তিনবারের পরিবর্তে চারবার করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ অধ্যাদেশ, ২০২৪’ অনুযায়ী নতুন বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এখন একজন চাকরিপ্রার্থী চারবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। এটি সরকারের একটি বড় পদক্ষেপ, কারণ অনেক চাকরিপ্রার্থী বয়সসীমার কারণে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছিলেন না।

এর আগে, ২৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে ৩২ বছর করা হয়। সেই সময়েই বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য তিনবারের সীমা নির্ধারণ করা হয়। তবে, আন্দোলনকারীরা এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং তারা তাদের দাবি ৩৫ বছর বয়সসীমা করার জন্য পুনরায় আন্দোলনে নামে।

আন্দোলনকারীদের মধ্যে একজন নেতা, হারুন অর রশিদ বলেন, “আমরা আমাদের দাবি আদায় করেই ছাড়ব। আমাদের ওপর আক্রমণ হলেও আমরা পিছপা হব না।” তিনি আরও জানান, আন্দোলনের মধ্য দিয়েই তারা নিজেদের দাবি বাস্তবায়ন করতে চাইছেন।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই নতুন বিধিমালা বিভিন্ন ফিন্যান্সিয়াল ইমপ্লিকেশন্স এবং জনস্বার্থের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে। সরকার বলছে, ৩২ বছর বয়স পর্যন্ত চাকরি পাওয়া সম্ভব হওয়া উচিত, এবং তারা মনে করছেন এটি বাস্তবসম্মত।

আন্দোলন চলাকালীন গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষও ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হন। আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি আদায়ে একত্রিত হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, এবং তারা নিশ্চিত যে তাদের দাবি অবশেষে মানা হবে।

এই পরিস্থিতিতে, দেশের যুব সমাজ সরকারের কাছে আরো সহানুভূতির প্রত্যাশা করছে। তারা চান, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা দ্রুত ৩৫ বছর করা হোক, যাতে দেশের আরো বেশি তরুণ সুযোগ পায়।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা এবং বিসিএস পরীক্ষার বিষয়টি এখন দেশব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। প্রত্যাশা করা হচ্ছে, এ বিষয়ে আগামী দিনে আরও সিদ্ধান্ত আসবে।