বেক্সিমকোর ১৪ কারখানার ৩৩২৩৪ কর্মী ছাঁটাই, পাওনা পরিশোধে ঋণ দেবে সরকার – BanglaNewsBDHub.com |

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo



বেক্সিমকোর ১৪ কারখানার ৩৩২৩৪ কর্মী ছাঁটাই, পাওনা পরিশোধে ৫২৫ কোটি টাকা ঋণ দেবে সরকার
বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেল বিভাগের ১৪টি কারখানা আজ শুক্রবার থেকে বন্ধ এবং সব শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বেক্সিমকো কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানিয়ে নোটিশ দিয়েছে।

এদিকে এই ১৪টি কারখানার ৩৩ হাজার ২৩৪ কর্মচারীর বকেয়া বেতন বাবদ ৫২৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা পরিশোধ করবে সরকার। আগামী ৯ মার্চ এই অর্থ বিতরণ শুরু করে রমজান মাসের মাঝামাঝি শেষ করা হবে। এসব কারখানা নিয়ে করণীয় ঠিক করতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীকে প্রধান করে একটি কমিটি করা হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম ও নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ওই ১৪ কারখানার শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ ও করণীয় নির্ধারণে কমিটি করার বিষয়টি জানান। গত বুধবার উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত হয়েছে এসব কারখানা পুরোপুরি বন্ধ থাকবে, এগুলো ইতিমধ্যে বন্ধ। এসব কারখানার ৩১ হাজার ৬৬৯ জন শ্রমিক এবং ১ হাজার ৫৬৫ জন কর্মকর্তাকে ৫২৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা পরিশোধ করা হবে। এ জন্য অর্থ বিভাগ তাদের পরিচালন ব্যয় থেকে ৩২৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা এবং শ্রম মন্ত্রণালয় ঋণ হিসেবে ২০০ কোটি টাকা দেবে।

বেক্সিমকোর এই ১৪টি কারখানা নিয়ে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে ছয় সদস্যের একটি কমিটি করেছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে লুৎফে সিদ্দিকীকে। কমিটিতে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের একজন করে প্রতিনিধি এবং বেক্সিমকোর রিসিভারকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। কমিটির সদস্যসচিব বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান।

শ্রমিক অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সুপারিশ দিতে গত বছরের ২৪ নভেম্বর সাখাওয়াত হোসেনকে আহ্বায়ক করে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। এই কমিটি আটটি বৈঠক করে বেক্সিমকোর ১৪টি কারখানার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিল। গাজীপুরের সারাব এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক অবস্থিত।

এখন দুই পরাশক্তির মধ্যে টানাপোড়েন চলছে উল্লেখ করে শ্রম উপদেষ্টা বলেন, অতিসত্বর আমরা বিদেশের বিনিয়োগকারী পাব। কাজেই আপনারা (কর্মচারী) হতাশ হবেন না। যারা থেকে যাবে, তাদের কিছু না কিছু একটা গতি হবেই ইনশা আল্লাহ। আমি এবং আমরা কোনো শ্রমিকের বিরুদ্ধে নই। কোনো শ্রমিকের চাকরি যাক, এটা আমরা চাইনি।’ শ্রমিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দয়া করে আপনারা এমন কিছু করবেন না, যে কারণে আমাদের কঠোর হতে হয়। এমন কিছু করতে দেবেন না, যার কারণে আবার সমস্যার সৃষ্টি হয়।

এদিকে বেক্সিমকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সই করা এক নোটিশে জানানো হয়েছে, কাজ না থাকায় গত ১৬ ডিসেম্বর এবং ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শ্রম আইন অনুযায়ী বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের টেক্সটাইলস ও অ্যাপারেল বিভাগের ১৪টি কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হয়। কোনোভাবে কাজের সংস্থান না থাকায় কারখানার সব শ্রমিককে ২৮ ফেব্রুয়ারি (আজ) থেকে ছাঁটাই করা হলো। কারখানাগুলোর সব কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ ঘোষণা করা হলো। ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের আইন ও বিধি অনুযায়ী ৯ মার্চ থেকে পর্যায়ক্রমে পাওনা পরিশোধ করা হবে।

বিদেশে পলাতকদের প্রয়োজনে পাসপোর্ট বাতিল: বেক্সিমকোর নামে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে লোপাটের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান শ্রম উপদেষ্টা।

বেক্সিমকো নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটিতথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিপুল ঋণ নিয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপ। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানের নামেই ১১টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ২৮ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নেওয়া হয়েছে। অস্তিত্ববিহীন ১৬টি প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া হয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ। সব মিলিয়ে নামে-বেনামে ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে বেক্সিমকো।

  • কর্মী ছাঁটাই
  • কারখানা
  • বেক্সিমকো
  • মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।