বৈষম্যবিহীন সমাজের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়নি বাজেট : সিপিডি – BanglaNewsBDHub.com |

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo



সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, মূল যে দর্শন বাজেটের- যে বৈষম্যবিহীন সমাজের কথা বলা হয়েছে, সেই প্রেক্ষিতে সেই উদ্দেশ্যের সঙ্গে বাস্তবে যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে- সবক্ষেত্রে সেটা সাদৃশ্যপূর্ণ হয়নি। সোমবার (২ জুন) সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) কার্যালয়ে জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬ নিয়ে সিপিডি’র তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে বলতে চাই, কিছু কিছু পদক্ষেপ ভালো নেওয়া হয়েছে বিচ্ছিন্নভাবে। কিন্তু পুরো একটা বলিষ্ঠভাবে কাঠামোগত যে একটা পরিবর্তন, সেটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে যে, একই কাঠামোর মধ্যে এখানে একটু বেশি একটু কম এরকম করে দেওয়া হয়েছে। এবং যে মূল দর্শন বাজেটের, যে বৈষম্যবিহীন সমাজের কথা বলা হয়েছে— সেটার প্রেক্ষিতে সেটার উদ্দেশ্যের সঙ্গে বাস্তবে যে পদক্ষেপ গুলো নেওয়া হয়েছে, সবক্ষেত্রে সেটা সাদৃশ্যপূর্ণ হয়নি।

তিনি বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এক হাজার কোটি টাকার যে ফান্ড করা হয়েছে, সেটাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। তবে একটা বিষয় যেটা খুবই আলোচিত এবং বিতর্কিত সেটা হচ্ছে কালো টাকা। কালো টাকার সুযোগটা এখানে রয়ে গেছে। যদিও এখানে রেট বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু আমরা আগেও বলেছি— কালোটাকার বিষয়ে আমাদের অবস্থানটা হচ্ছে, এই কালোটাকা সুযোগ নিয়ে। কিন্তু যারা নৈতিকভাবে প্রতি বছর স্বচ্ছ আয় করেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে কর দিয়ে থাকেন, তাদের প্রতি একটা নৈতিক আঘাতের মতো। তাদেরকে মোরালি ডিসকারেজ করা হয়, ডিমোরালাইজড করা হয়।

তিনি আরও বলেন, বাজেটের আকার সামান্য ছোট করা হয়েছে। তার পাশাপাশি যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি, সেটাতে কিছুটা কাটছাট করা হয়েছে। আমাদের বাজেটের আকার নিয়ে যে আলাপ হয়েছে, তার অন্যতম কারণ হচ্ছে— আমাদের যে চলমান অর্থনৈতিক সংকট, অর্থাৎ উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগে স্থবিরতা বা কর্মকর্তাদের সমস্যা এবং সর্বোপরি রাজস্ব আহরণের সমস্যা— এগুলো বিবেচনায় নিয়েই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা বাজেটটা উপস্থাপন করেছে হলেই আমাদের মনে হয়।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, এখানে উল্লেখযোগ্য তিনটি খাত— শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং কৃষিতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে টাকার অঙ্কে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এটা আমাদের কাছে উদ্বেগজনক মনে হয়।

তিনি বলেন, যেটা সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, সেটা হচ্ছে— করের ক্ষেত্রে করের আয়ের সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। এটা একটা ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু প্রায় তিন বছরের মতো সময় ধরে মূল্যস্ফীতি কিন্তু ৯ শতাংশের বেশি রয়েছে। সেদিক থেকে খুব একটা ভালো হয়েছে সেটা না। তবে এটাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। একইসঙ্গে তালিকাভুক্ত জুলাইযোদ্ধাদের নামে যে করমুক্ত আয়সীমা করা হয়েছে, সেটাকেও আমরা ভালো পদক্ষেপ মনে করি।

আমাদের কাছে আশ্চর্য লাগছে যে, মিডিয়াম টার্ম ম্যাক্রো ইকনোমি পলিসি স্টেটমেন্ট— সেখানে দেওেয়া আছে রাজস্ব জিডিপি রেশিও, এটা ২০৩৫ সালে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়বে, এই লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। এটা অত্যন্ত কম। এখানে আমরা দেখছি আকাঙ্ক্ষার নিন্মগামীতা রয়েছে। এত কম আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা কীভাবে প্রবৃদ্ধি অর্জন করবো বলে বলেন তিনি।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিডির সন্মানিত ফেলো প্রফেসর মুস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, রিসার্চ ফেলো মুনতাসির কামাল, সৈয়দ ইউসুফ সাদাত।

প্রসঙ্গত, সোমবার (২ জুন) বিকাল ৩টায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা— যা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম।

  • বাজেট
  • সিপিডি
  • মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।