
প্রতীকী ছবি
পৌরসভা থেকে ভিজিএফের চাল দেওয়া হবে। তাই সেই চাল নিতে ছুটে যান শহিমা বেগম (৫০)। রোজা থাকা অবস্থায় প্রচণ্ড রোদের মধ্যে দীর্ঘ সময় লাইনের চাপ সামলাতে নাজেহাল হয়ে পড়েন দরিদ্র এই নারী। ১০ কেজি চাল মিললেও প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে তার নাতির সহযোগিতায় এক প্রতিবেশীর বাড়িতে ফিরেন। সেখানে তার মাথায় পানি দেওয়া হয়।
তারপরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। চাল নিয়ে বাড়ি ফিরে আর রান্না করে খাওয়ার সুযোগ হয়নি শহিমার। শেষ দিন পর্যন্ত চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে যুদ্ধ করে ত্যাগ করলেন ইহধাম। বৃহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চগড় পৌরসভায় এ ঘটনা।
পৌরসভা থেকে ঈদ উপলক্ষে দেওয়া ভিজিএফের চাল সংগ্রহ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে মারা যান বলে দাবি ওই নারীর পরিবারের। তাদের ধারণা, প্রচণ্ড রোদ আর ভিড়ে হিটস্টকে মারা যেতে পারেন তিনি। শহিমা বেগমের বাড়ি পঞ্চগড় পৌরসভার মোলানি এলাকার শফিয়ার রহমানের স্ত্রী। চার মেয়ের মধ্যে ১ জন মারা গেছেন। বাকি ৩ জনকে বিয়ে দিয়েছেন।
তার স্বামী শফিয়ার রহমানও অসুস্থ, তেমন কাজকর্ম করতে পারেন না। নিজেই মানুষের কাজ করে কোনোমতে সংসার চালাতেন। বাদ এশা তার জানাজা শেষে মোনালি কবরস্থানে দাফন করা হবে।
শহিমা বেগমের জামাতা শাহিন ইসলাম বলেন, আমার শাশুড়ি রোজা রেখে ভিজিএফের ১০ কেজি চাল তুলতে যান। সেদিন পৌরসভায় প্রচণ্ড ভিড় ছিল। সেই সঙ্গে ঠেলাঠেলি আর প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে কোনোমতে চাল তুলতে পারলেও মাথা ঘুরে পড়ে যান এবং বমি করেন। পরে তাকে আমার ছেলে এক প্রতিবেশীর বাসায় নিয়ে গিয়ে মাথায় পানি ঢালে। কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় তাকে হাসপাতালে নেয়ার পথেই মারা যান। আসলে পৌরসভা বিশৃঙ্খলভাবে চাল বিতরণের কারণেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রহিমুল ইসলাম বলেন, ওই নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মারা গেছেন। তবে তার মৃত্যুর কারণ জানাতে পারেননি তিনি।
পঞ্চগড় পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুর রহমান বলেন, আজ চাল বিতরণের সময় অনেক ভিড় ছিল। তবে এমন ঘটনা আমার জানা নেই।