ভোলায় বাস শ্রমিক ও সিএনজি চালকদের মধ্য সংঘর্ষ, আহত ৮০

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo

ভোলায় বাসা শ্রমিক ও সিএনজি চালকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ছবি: সংগৃহীত

ভোলা: ভোলায় বাসা শ্রমিক ও সিএনজি চালকদের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দু’টি যাত্রীবাহী বাস ও চারটি সিএনজিতে আগুন দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে প্রায় ১৫টির অধিক বাস। সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ৮০জন আহত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারী) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ভোলার বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস স্ট্যান্ডে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে রাত ১০টা পর্যন্ত উভয়পক্ষকে বাস স্ট্যান্ডের দুই পাশে অবস্থান করতে দেখা গেছে। এ ঘটনায় রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ১২ জন ভর্তি হয়েছেন এবং তিন জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশার শের-ই বাংলা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে ভোলা পৌরসভা থেকে বাস স্ট্যান্ডটি ইজারা নিয়েছে বাস মালিক সমিতি। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ভোলা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বাস স্ট্যান্ড থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালায়। এ সময় সিএনজি চালকদের বাস ডিপো থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু সিএনজি চালকরা সেখান থেকে বেরিয়ে যায়নি। বিষয়টি নিয়েই সন্ধ্যার দিকে বাস মালিক সমিতির সঙ্গে সিএনজি চালকদের বাকবিতণ্ডা হয়। এ নিয়েই দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পালটাধাওয়া হয়। এ সময় যাত্রীবাহী ‍দুটি বাস ও চারটি সিএনজিতে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া, ভাঙচুর করা হয় প্রায় ১৫টি বাস। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৮০জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে বেশ ১২ জন ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে রাত ১০টা পর্যন্ত বাস স্ট্যান্ড এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল।

ভোলা বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির জানান, ছয় মাস আগে ভোলা পৌরসভা থেকে বাস স্ট্যান্ডটি ইজারা নেয় মালিক সমিতি। এর পর থেকে সিএনজি চালকরা বিভিন্ন সময়ে বাস শ্রমিকদের ওপর হামলা ও মারধর করে আসছে। মঙ্গলবার ভোলা পৌরসভার লোকজন এসে বাস স্ট্যান্ডের ভিতর থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। একইসঙ্গে সিএনজি চালকদের স্ট্যান্ডের ভেতর থেকে বের হয়ে পাশের হেলিপ্যাডে যেতে বলে। এ ঘটনার পর সন্ধ্যার দিকে সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি ও সেক্রেটারির ইন্ধনে সিএনজি চালকরা দু’টি বাসে আগুন ও প্রায় ১৫ বাস এবং মালিক সমিতির অফিস ভাঙচুর করে। এ সময় সিএনজি চালকদের হামলায় প্রায় ৫০ জন বাস শ্রমিক আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে অনেকে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। সিএনজি চালকরা বহিরাগত লোকজন নিয়ে এ হামলা করেছে।’ এ ঘটনায় তারা সিএনজি চালকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান জানান, ‘পৌরসভার প্রশাসক বাস স্ট্যান্ড থেকে অবৈধ স্থাপনা ও সিএনজি বের বের করে দেয়। সিএনজি চালকরা না গিয়ে বাস ডিপোতে হামলা করে। সিএনজি চালকরা বহিরাগত লোকজন নিয়ে পরিকল্পিতভাবে বাস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন এবং প্রায় ৫০ জনের অধিক বাস শ্রমিককে আহত করেন।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সিএনজি চালক মো. ছালাউদ্দিন ও মো. আক্তার জানান, ২০০০ সাল থেকে সিএনজি চালকরা ভোলা বাস স্ট্যান্ডের ডিপোর মধ্যেই আছে। কিন্তু আজ বাস মালিক সমিতির লোকজন তাদের ডিপো থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। এটি নিয়ে বাস মালিক সমিতির লোকজন ডিপোর মধ্যে বাস দিয়ে ৪-৫টি সিএনজিকে চাপা দেয় এবং সিএনজিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে বাসের শ্রমিকরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে ইটের আঘাতে চালক নুর ইসলাম, ছালাউদ্দিন, গিয়াসউদ্দিনসহ প্রায় ৩০-৩৫জন চালক আহত হয়েছে।

ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রিপন চন্দ্র সরকার জানান, ভোলা বাস স্ট্যান্ডে সন্ধ্যার দিকে সিএনজি চালক ও বাস শ্রমিকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি এক পর্যায়ে এটি সংঘর্ষের রূপ নেয়। দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে ধাওয়া-পালটাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় বাস-সিএনজিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন। এক পর্যায়ে পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও নৌবহিনীর সদস্য মিলে দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করেছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

বাংলানিউজবিডিহাব/পিটিএম

বাস শ্রমিক
ভোলা
সংঘর্ষ
সিএনজি চালক

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।