ময়নাতদন্ত হল না গোপালগঞ্জে নিহত চারজনের – BanglaNewsBDHub.com |

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo



গোপালগঞ্জে হামলা-সংঘাতের পর পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত থাকলেও কারফিউর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এই সংঘাতের সময় গুলিতে নিহত চারজনের দাফন ও শেষকৃত্য বুধবার ও আজ বৃহস্পতিবার সম্পন্ন হয়েছে ময়নাতদন্ত ছাড়াই। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচি ঘিরে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘাত বাধে। এ সময় গুলিতে নিহত হন চার ব্যক্তি। নিহত এই চারজনের কারোরই সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত হয়নি।

সংঘাতে নিহত চার ব্যক্তি হলেন শহরের কোটালীপাড়ার হরিণাহাটি গ্রামের রাজমিস্ত্রি রমজান কাজী, শহরের পূর্ব মিয়াপাড়া এলাকার মোবাইল পার্টস ব্যবসায়ী সোহেল রানা, শহরের উদয়ন রোডের পোশাক ব্যবসায়ী দীপ্ত সাহা ও সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার এলাকার দোকান কর্মচারী ইমন তালুকদার। চারজনই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ইমন তালুকদারকে বৃহস্পতিবার সকাল সাতটায় গেটপাড়া পৌর কবরস্থানে, একই সময় সোহেল মোল্লাকে টুঙ্গিপাড়ায় পারিবারিক কবরস্থানে, রমজানকে বুধবার রাতে এশার নামাজের পর গেটপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়। পোশাক ব্যবসায়ী দীপ্ত সাহাকে বুধবার রাতে পৌর শ্মশানে সৎকার করা হয়।

গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, চারজনের মৃতদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছিল। ময়নাতদন্ত করা হয়নি। এ ছাড়া অনেকেই আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিয়েছেন।

পুলিশও নিহত ব্যক্তিদের সুরতহাল করেনি। হাসপাতাল থেকে মৃত্যুসনদ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে।

নিহত রমজানের মামা কলিম মুন্সি গণমাধ্যমকে বলেন, ভিডিওতে দেখলাম, আমার ভাগনেকে গুলি করে মেরেছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলাম, কিন্তু বাবাটাকে বাঁচানো গেল না। হাসপাতাল থেকে থানায় নিয়ে গেলে থানার গেট বন্ধ পাই। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ আবার হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। কিন্তু হাসপাতালের লোকেরা বলল, “আপনারা এখন বাসায় নিয়ে যান। এখানে সমস্যা হতে পারে। লাশ ময়নাতদন্ত করাতে পারলাম না।

নিহত সোহেল মোল্লার মামা জাহিদুল ইসলাম তালুকদার বলেন, গতকাল (বুধবার) বিকেলে মোবাইলে জানতে পারি, আমার ভাগনে সোহেল গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে। আমি আসতে আসতে হাসপাতাল থেকে লাশ বাড়ি নিয়ে আসছে। তবে লাশের কোনো ময়নাতদন্ত করা হয় নাই বা ডেথ সার্টিফিকেট হাসপাতাল থেকে দেওয়া হয় নাই।

রমজানের চাচা মনিরুজ্জামান বুধবার রাতে বলেছিলেন, ঘটনার সময় রমজান শহর দিয়ে হেঁটে কাজে যাচ্ছিল। এ সময় সে গুলিবিদ্ধ হয়। সে ছিল টাইলস মিস্ত্রি।

পরিবার কোটালীপাড়ার হলেও রমজানের জন্ম-কর্ম শহরেই বলে জানান তার চাচা। তিনি বলেন, রাতে মরদেহ হাসপাতাল থেকে স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়। পরে শহরের কবরস্থান মসজিদে রমজানের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই রাতে তাকে দাফন করা হয়েছে।

দীপ্ত সাহার বাবা সন্তোষ সাহা মারা গেছেন। দুই ভাই শহরের চৌরঙ্গী এলাকায় একটি তৈরি পোশাকের দোকান চালান। সংঘর্ষের মধ্যে দোকান থেকে বাসায় যাওয়ার পথে তিনি গুলিবিদ্ধ হন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে গোপালগঞ্জের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফ করা হয়। সেখানে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিকের কাছে সাংবাদিকরা সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের বিষয়ে জানতে চান।তখন তিনি বলেন, বিষয়টি আইন প্রক্রিয়ায় পরবর্তীতে দেখা হবে।

  • গোপালগঞ্জ
  • নিহত
  • ময়নাতদন্ত
  • মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।