
সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার গদিয়াচর গ্রামের কিশোর রবিউল ইসলাম নাঈম। কাজ করত রেস্তোরাঁয়। মালিকের বিরুদ্ধে খারাপ আচরণের কথা জানিয়ে চাকরি ছেড়ে দিতে চেয়েছিল সে। কিন্তু এর এক সপ্তাহ পর গত রোববার তাঁর লাশ পাওয়া যায়। এর আগে নিখোঁজের বিষয়ে তার পরিবারের সদস্যরা ওসমানীনগর থানায় জিডি করেছিলেন।
গতকাল মঙ্গলবার ওসমানীনগর থানায় মামলা করতে গেলে ঘটনাস্থল কুলাউড়ায় থানা এলাকায় হওয়ার কথা বলে মামলা নিতে অপরাগতা প্রকাশ করে পুলিশ। আবার কুলাউড়ার পুলিশ ওসমানীনগর থানায় জিডি থাকার কারণে সেখানে মামলা করার কথা বলে। দুই থানার টানাটানির মধ্যে এদিন বিকেলে লাশ নিয়ে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে স্থানীয় লোকজন। বিক্ষোভকালে স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। রাজনৈতিক নেতাদের আশ্বাসের কারণে সন্ধ্যা ৬টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন এলাকার বাসিন্দারা। এর আগেই রেস্তোরাঁ মালিক বুলবুল আহমদকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। গত শনিবার রাতে তাঁকে জিডির ভিত্তিতে আটক করে কুলাউড়া থানায় সোপর্দ করা হয়। তিনি ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন ব্রাহ্মণগ্রাম সুপ্রিম ফিলিং স্টেশনের পার্শ্ববর্তী বগুড়া রেস্টুরেন্টের মালিক।
জানা গেছে, ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের গদিয়ারচর গ্রামের কনা মিয়ার ছেলে রবিউল ইসলাম নাঈম (১৪) রেস্তোরাঁয় কাজ করত। মালিক নির্যাতন করে বলে সম্প্রতি সে তার পরিবারকে জানায়। এ সময় পরিবারের সদস্যরা তাকে চাকরি ছেড়ে আসার জন্য বলে।
গত ২৬ জুলাই নাঈম কাপড় ও পাওনা টাকা নেওয়ার জন্য রেস্তোরাঁয় যায়। কিন্তু এরপর আর তার খোঁজ মিলেনি। শনিবার ওসমানীনগর থানায় জিডি করে পরিবার। মালিকের কাছে তারা গেলে টাকা নিয়ে সে চলে গেছে বলে দাবি করেন। এরই মধ্যে রোববার কুলাউড়ার বরমচাল রেলস্টেশন এলাকা থেকে অজ্ঞাত একটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশটি নাঈমের বলে শনাক্ত হয়।
মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যরা লাশ নিয়ে আসেন ওসমানীনগর থানায়। কিন্তু ঘটনাস্থল কুলাউড়া থানায় হওয়ায় পুলিশ সেখানে মামলার পরামর্শ দেয়। এ অবস্থায় এলাকার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা বিকেলে থানার সামনে সিলেট-মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।
ওসমানীনগর থানার ওসি মোনায়েম মিয়া বলেন, ঘটনাস্থল অন্য থানায় হওয়ায় পুলিশ সেখানে মামলার পরামর্শ দিয়েছিল। প্রতিবাদে লোকজন সড়ক অবরোধ করে রাখে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। লাশ উদ্ধারের আগের দিন জিডির ভিত্তিতে পুলিশ রেস্তোরাঁ মালিক বুলবুলকে আটক করেছে। তাঁর বাড়ি বগুড়া জেলায়।
সূত্র : সমকাল