
বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক জিতু ইসলামের (৪৫) বিরুদ্ধে এক রিকশাচালককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের নাম শাকিল। তিনি বগুড়া শহরের শিববাটী এলাকার বাসিন্দা। শনিবার (১৪ জুন) দুপুর ২টার পর বগুড়া শহরের ফুলবাড়ী জোড়াঘাট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত শাকিলের পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, শাকিলের মেয়েকে উত্ত্যক্ত করেছিলেন জিতু। এর প্রতিবাদ করায় তাকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত শাকিলের বোন মনীষা ও আশা খাতুন জানান, সকালে মেয়েকে উত্ত্যক্ত করায় ক্ষুব্ধ হয়ে শাকিল জিতুকে একটা চড় মেরেছিলেন। তখনই জিতু ও তার লোকজন শাকিলকে অনেক মারধর করেন। শাকিল বাড়িতে এলে চার-পাঁচটা মোটরসাইকেলে জিতু ও তার সহযোগীরা এসে শাকিলকে তুলে নিয়ে যায় এবং ফুলবাড়ী এলাকায় নদীর পাশে পিটিয়ে হত্যা করে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোস্তফা মঞ্জুর বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি জিতু শাকিলের ১৪-১৫ বছর বয়সি মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এতে শাকিল ক্ষুব্ধ হয়ে জানতে চান, মেয়ের বয়সি একজনকে কীভাবে বিয়ে করতে চায় জিতু! এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। দুপুর ২টার পরে চার-পাঁচটা মোটরসাইকেল নিয়ে গিয়ে শাকিলকে বাড়ি থেকে তুলে এনে মারধর করেন জিতু।
সূত্র জানিয়েছে, মারধরের পর শাকিলকে মাদক চোরাকারবারি অপবাদ দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন জিতু ও তার সহযোগীরা।
এই বিষয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) বলেন, কেউ একজন পুলিশকে ফোন করে অভিযোগ করেছিলেন, শাকিল ছুরি নিয়ে জিতুকে মারতে গিয়েছিলেন। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায় শাকিল গুরুতর আহত। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেয় পুলিশ। হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এসব অভিযোগ ওঠার পর জিতুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সরকার মুকুল। তিনি বলেন, এই ঘটনার পরপরই আমরা কেন্দ্রকে বিষয়টি জানিয়েছি। ইতোমধ্যে জিতুকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সে যদি এই ঘটনার সঙ্গে সত্যি জড়িত থাকে, তাহলে আমরা তার বিচার চাই।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান বাসির বলেন, এই ঘটনার পরেই পুলিশ জিতুকে আটক করা হয়েছে। এখনো মামলা দায়ের হয়নি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।