ডিস্ট্রিক্ট করেসপনডেন্ট
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:৫৫
যশোর: ফ্যাসিবাদ মুক্ত আবহে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) যশোর জেলা বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা, রাষ্ট্রে পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবিলাসহ বিভিন্ন জনদাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা ৩টায় টাউন হল ময়দানে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভাপতিত্ব করবেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম। সমাবেশকে সামনে রেখে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠন ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে। জেলাজুড়ে চলছে প্রচারপত্র বিলি ও প্রচার মিছিল। দলের পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে আজ বিকেলে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার বক্তব্য রাখবেন।
এদিকে, টাউন হল তথা মুন্সি মেহের উল্লাহ ময়দানে বিএনপির এই সমাবেশের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ময়দানটি সাজানো হয়েছে। গতরাত থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা মাঠ প্রস্তুতে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনামুক্ত পরিবেশে যশোর জেলা বিএনপির এটি হবে প্রথম সমাবেশ। তারা বলছেন সমাবেশকে ঘিরে জেলাজুড়ে সাজ সাজ রব বইছে। সর্বত্র দলীয় নেতা-কর্মীরা দারুণভাবে উজ্জীবিত। গতকালও বিভিন্ন স্থানে প্রচারপত্র বিলি ও প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান খান বলেন, ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এই প্রথম সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই সমাবেশটি যশোরের ইতিহাসে স্মরণকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘ ১৭ বছর বিএনপির জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্য আন্দোলন করেছে। এখানে কোন দল ক্ষমতায় যাবে এটা বড় কথা নয়। জনগণের রায়ে একটি সরকার ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্র পরিচালনা করুক। যাতে করে দেশের গণতন্ত্র টেকসই থাকে। সেই প্রত্যাশা নিয়ে আমাদের এই সমাবেশ। জেলার প্রতিটি উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। সর্বস্তরের দলীয় নেতাকর্মীরা সমাবেশ সফলে প্রস্তুতি সভা করছেন। সেখানে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের অংশ গ্রহণ বেড়েছে।
তিনি বলেন, যশোরবাসীর গর্ব বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। তার প্রতি কেবল দলীয় নেতাকর্মী নয়, সাধারণ মানুষের অন্য রকম এক আবেগ ও অনুভুতি আছে। সেই নেতার নিজের জেলায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে উপস্থিতির কারণে এটা মহাসমাবেশে রূপ নেবে।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সাল বলেন, ‘জনদাবি নিয়ে বিএনপি সমাবেশে আহ্বান করেছে। বিগত ১৭ বছর বিএনপির নেতৃত্বে জনগণের ভোটাধিকার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখাসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে লড়াই করেছি। আমরা ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করেছি এবং আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছি। সমাবেশকে ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীরা দারুণভাবে উজ্জীবিত।’
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর বলেন, ‘বিগত দিনে ফ্যাসিস্টের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা এবং প্রশাসনের সর্বোচ্চ প্রতিবন্ধকতা পেছনে ফেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নেতৃত্বে আন্দোলন সংগ্রামের পাশাপাশি বিভিন্ন সভা সমাবেশ করেছি। মাফিয়া হাসিনার পতনের এই উন্মুক্ত বাতাসে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশকে ঘিরে আমার ইউনিটের প্রতিটি নেতাকর্মী দারুণভাবে উজ্জীবীত। পূর্বের যেকোন সমাবেশের চেয়ে এই সমাবেশে আমাদের প্রস্তুতি অনেক ভালো। সমাবেশে ছাত্রদল তার সর্বোচ্চ সংখ্যাক নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হবে।’
এদিকে, সমাবেশ সফলে প্রতিদিন বিএনপির কোনো না কোনো অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন শহর ও উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও প্রচারপত্র বিলি ও গণসংযোগ করছে। এ ছাড়া জেলা বিএনপি কার্যালয় থেকেও প্রচার মিছিল বের হয়েছে।
বাংলানিউজবিডিহাব/এসডব্লিউ