জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন আগস্ট বিপ্লবে দলমত, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, শ্রেণি ও পেশা নির্বিশেষে সবাই আন্দোলনে নামলেও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল শুধুমাত্র জামায়াতকে। আর আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলার সঙ্গে সঙ্গে চলমান আন্দোলন অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই আওয়ামী-বাকশালীদের তখতে তাউসের পতন এবং তাদের খুনি নেত্রীসহ সব মন্ত্রী-এমপিরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। মূলত যারাই জামায়াত নির্মূল করার ষড়যন্ত্র করেছে তারাই ইতিহাসের পাতা থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
শুক্রবার বিকাল ৩টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর ঈদগাহ ময়দানে থানা জামায়াত আয়োজিত এক সহযোগী সদস্য সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, জামায়াতের ওপর রয়েছে আল্লাহর রহমত। জামায়াতে ইসলামী আল্লাহভীরু লোকদের পার্লামেন্টে পাঠিয়ে দেশকে একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। তিনি সে স্বপ্নের পার্লামেন্ট গঠনের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির বলেন, কোনো অপরাধ ছাড়াই শুধুমাত্র জামায়াত করার কারণেই তখনকার (২০১১) ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে আটক করে সাজানো মামলায় প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করে দীর্ঘদিন ধরে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তিনি আগামী ৭ দিনের মধ্যেই মজলুম এটিএম আজহারকে মুক্তি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।অন্যথায় দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের নেতাকে জনগণই মুক্ত করে ছাড়বে ইনশাআল্লাহ।
শেরেবাংলা নগর উত্তর থানার আমির মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল আজমের সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি মঞ্জুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মুহাম্মদ মোবারক হোসেন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মুসা, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য ডা.শফিউর রহমান, মশিউর রহমান, থানা নায়েবে আমির শাহ আজিজুর রহমান তরুণ, অর্থ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম, অফিস সম্পাদক তৌহিদুর রহমান প্রমুখ।
তিনি বলেন, মানুষের তৈরি আইন দিয়ে মানুষের কল্যাণ সম্ভব নয়। আগামী দিনে যারা সে বৃত্তে আটকে থাকবে জনগণ তাদেরকে আর কোনোভাবেই গ্রহণ করবে না। যারা ধর্মনিরপেক্ষতার প্রবক্তা তাদের দিনও শেষ হয়ে গেছে। এদেশের সিংহভাগ মানুষ মুসলমান। তাই এদেশে রাজনীতি করতে হলে, কুরআন, সুন্নাহ ও ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতেই রাজনীতি করতে হবে। যারা দুর্নীতি, লুটপাট, অবক্ষয়ের বৃত্তে থাকবে এবং যৌনতা ও পৌত্তলিকতাকে উৎসাহিত করবে তাদেরকে জনগণ কোনোভাবেই ভোট দেবে না। মূলত এদেশে রাজনীতি করতে হলে সুদভিত্তিক অর্থনীতির পরিবর্তে ইসলামী অর্থনীতি চালুর অঙ্গীকার করতে হবে।
তিনি ৪ দলীয় জোট সরকারে জামায়াতের মন্ত্রীদের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমাদের ২ জন মন্ত্রী ৩ টি মন্ত্রণালয় চালিয়ে ২ টাকার দুর্নীতি করেননি। মন্ত্রী সভার সব সদস্য জামায়াতের মন্ত্রীদের মত আদর্শবান হলে দেশও আদর্শে রাষ্ট্রে পরিণত করা সম্ভব। তিনি দেশকে একটি ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বেকারত্বমুক্ত আদর্শ রাষ্ট্রে পরিণত করতে আদর্শবান লোকদের নির্বাচিত করার আহবান জানান। তাহলেই দেশকে অপশাসন-দুঃশাসন মুক্ত করা সম্ভব।