যুক্তরাষ্ট্রের ১১০ পণ্যে শুল্ক সুবিধা দিলে অন্যান্য দেশকেও দিতে হবে : সিপিডি – BanglaNewsBDHub.com |

Featured Image
PC Timer Logo
Main Logo



২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১১০টি মার্কিন পণ্যের আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি ৬৫টি পণ্যে আমদানি শুল্ক হ্রাস,৯টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার এবং ৪৪২টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ধরনের সুযোগ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম অনুযায়ী অন্যান্য দেশকেও দিতে হবে। তা করতে না পারলে বৈষম্য হবে। আবার সবাইকে সুযোগ দিলে বিশাল রাজস্ব হারাবে সরকার। এ জন্য রাজস্ব আদায়ে দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। এ জন্য অনেক ভালোভাবে বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬: সিপিডির পর্যালোচনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

প্রস্তাবিত তালিকায় যেসব পণ্য রয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ, তৈরি পোশাক শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল, ম্যান মেড ফাইবার, উল, বর্জ্যপানি শোধনাগার (ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট), ডায়ালাইসিস ফিল্টার, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র এবং কিছু নির্দিষ্ট ধরনের অস্ত্র।

এর বাইরে আগামী অর্থবছরে বিদ্যমান ছয় স্তর বিশিষ্ট শুল্ক কাঠামো পুনর্বিন্যাস করে ৩ শতাংশের নতুন একটি স্তর যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে আমদানি পর্যায়ে শূন্য, ১ শতাংশ, ৫ শতাংশ, ১০ শতাংশ, ১৫ শতাংশ ও ২৫ শতাংশ–শুল্কের এই ছয়টি স্তর রয়েছে। একই সঙ্গে আমদানি পর্যায়ে ১২ স্তর বিশিষ্ট সম্পূরক শুল্কহারের সঙ্গে ৪০ শতাংশের নতুন আরও একটি সম্পূরক শুল্কহার তৈরি করা প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিদ্যমান সব ট্যারিফ মূল্য প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা। একই সঙ্গে ৮৪টি পণ্যের ন্যূনতম মূল্য প্রত্যাহার এবং ২৩টি পণ্যের ন্যূনতম মূল্য বৃদ্ধি করে শুল্ক মূল্য যৌক্তিক করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

দেশে এই মুহূর্তে রপ্তানির জন্য বড় চ্যালেঞ্জর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপকে অন্যতম বলছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদেরা। যদিও এই পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছে মার্কিন প্রশাসন। কিন্তু স্থায়ীভাবে এই শুল্ক মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার পথ তৈরি করতে চাচ্ছে সরকার। এ জন্য বাজেটে বিদ্যমান শুল্ক-কর কাঠামো পুনর্বিন্যাস, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করতে হয় এমন ৬২৬টি পণ্যের শুল্ক যৌক্তিক করা ও ট্যারিফ ও ন্যূনতম মূল্য যৌক্তিক করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) মনে করছে, এই পদক্ষেপগুলো আমাদের এলডিসি থেকে উত্তরণের পর আমদানি রপ্তানির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়ও কাজে লাগবে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপরও ৩৭ শতাংশ পালটা শুল্ক আরোপ করে। এরপর শুল্ক ইস্যুতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। চিঠিতে তিন মাসের জন্য বাংলাদেশের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক স্থগিত রাখার আহ্বান জানান তিনি। এরপর চীন বাদে সব দেশের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বাংলাদেশকে আলোচনার পথ তৈরি করতে বন্ড সুবিধা, আমদানি রপ্তানির পার্থক্য কমানোসহ বিভিন্ন শর্ত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই পদক্ষেপগুলো জনসাধারণের ওপর করের ভার কিছুটা কমাবে। এ ছাড়া পণ্য রপ্তানিতে এন্ডি এক্সপোর্ট বেইজ কমাবে। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমদানি পণ্যের শুল্ক-কর হার পর্যায়ক্রমে হ্রাস করা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সংলাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে।’

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মোট ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার, যা জিডিপির ৯ শতাংশ। এর মধ্যে এনবিআরের মাধ্যমে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য উৎস থেকে ৬৫ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করার চিন্তা রয়েছে সরকারের।

  • পণ্য
  • যুক্তরাষ্ট্র
  • শুল্ক সুবিধা
  • সিপিডি
  • মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।