যুবদল নেতার নেতৃত্ব জেলেদের চাল ছিনিয়ে নেওয়াসহ চাঁদাবাজি ও হামলার অভিযোগ – BanglaNewsBDHub.com |




যুবদল নেতার নেতৃত্ব জেলেদের চাল ছিনিয়ে নেওয়াসহ চাঁদাবাজি ও হামলার অভিযোগ

বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি

 

বরিশালে বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠী ইউপিতে জেলেদের সরকারি চাল বরাদ্দ নিয়ে যুবদল নেতার নেতৃত্বে চাঁদাবাজি, গরিব মানুষের চাল ছিনিয়ে নেওয়াসহ হামলার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। সৈয়দকাঠী ইউপির আউয়ার বাজারে গত বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ঘটে।

 

জানা যায়, সৈয়দকাঠী ইউপির ৬নং ওয়ার্ডের জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল বিতরণকালে ইউপি যুবদলের সদস্য সচিব মো. মহসিন (স্থানীয় ফার্মেসি দোকানদার) উক্ত ওয়ার্ডের জেলেদের কাছে প্রতিটি কার্ডের বিনিময়ে চাঁদা দাবি করে। এ সময় সাধারণ জেলেদের হুমকি-ধমকি দিয়ে কিছু জেলের কাছ থেকে চাল কেড়ে নেয় এবং সাধারণ জেলেদের মারধরের করে।

 

বানারীপাড়া উপজেলাধীন ৩নং সৈয়দকাঠী ইউনিয়নে  মোট জেলে ৮৩০ জন। তার মধ্যে সরকার ৫১৯ জন মানুষকে ৪০ কেজি করেচাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। জেলে কার্ড অনুসারে ৬নং ওয়ার্ডে (মসজিদ বাড়ি) ১৬৮ জন চাল পায়। সেভাবেই দেয়া হইছিল কিন্তু সন্ত্রাসী মহসিন এসে ইউপি সদস্য পনিরুজ্জামান হুমকি-ধমকি দিয়ে বলে এত চাল মসজিদবাড়ি দেয়া যাবে না। এ বিষয় নিয়ে ৬ নং ইউপি সদস্য পনিরুজ্জামানকে চাপ সৃষ্টি করে বলে ‘এত চাল মসজিদবাড়ি দেয়া যাবে না। চাল আমাকে দিতে হবে।’ এ সময় স্থানীয় বিএনপি ত্যাগী কর্মী বলে ইলিয়াস বলে, ‘জেলে মসজিদবাড়ি বেশি, সেই অনুসারে ১৬৮ জন চাল পাচ্ছে।’

এর পরে মহসিনের নেতৃত্বে সাগর, বাবু, আরিফ আরো না চেনা ২০-২৫ সন্ত্রাসী তাদের হাতে চাকু, হাতুরি ও শিকলসহ নিয়ে ইলিয়াসসহ সাধারণ জেলেদের ওপর হামলা চালায়। এতে ইলিয়াসের মাথা ও কানের নিচে কেটে যায়। এ সময় সাধারণ লোকজন এসে অনেক চেষ্টার পরে ইলিয়াসকে ছাড়িয়ে নিয়ে পরিষদের রুমের ভিতরে নিয়ে যায়।

 

অপরদিকে, সরকারি বরাদ্দকৃত চাল নিয়ে যাবার সময় স্থানীয় নুর হোসেন, মনির বেপারি, সাইদুল ফকিরের স্ত্রী, নুরুদ্দিন, আবুবকরসহ ১৪-২৫ জনের চাল ছিনিয়ে নিয়ে যায় মহসিনের সন্ত্রাসী বাহিনী। চাল ছিনিয়ে নেওয়ার সময় আবুবকরকে রড দিয়ে বাড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। পল্লী চিকিৎসক সমিরন হালদার তার হাতে তিনটি সেলাই দিয়ে চিকিৎসা করেন। এই ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিক যুবদল নেতা রহমান হাওলাদর ছুটে এসে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হবে বলে আশ্বাস দেন। স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপি ফোনে ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের হবে আশ্বস্ত করেন।

পরে সন্ধ্যায় যে জেলেদের চাল মারধর করে রাখা হয় তারাসহ মসজিদ বাড়ির লোকজন আউয়ারে আসেন। কিন্তু ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম আসতে দেরি হবার কারণে এবং নামাজের সময় হওয়ার জন্য পরে বসে সমাধান করে দিবে বলে সবাইকে চলে যেতে বলেন। সবাই চলে যাবার পথে মহসিনের সঙ্গে ভুক্তভোগী জেলেদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়।

বানারীপাড়ার অভিবাবক সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুকে নিয়ে ফেসবুকে বাজে মন্তব্য করা করফাকরের সালাম ও ছোট মহসিন বসেছিলেন।

তারাসহ মহসিন তার দোকানে থাকা রড দিয়ে আবারও আঘাত করলে উত্তেজিত জনতা তার ওপর চড়াও হয়। ধাক্কাধাক্কিতে ওর ফার্মেসির ওষুধপত্র ফ্লোরে পরে যায়। পরে ইলিয়াস শুনতে পেরে উত্তেজিত জনতাকে থামাতে চেষ্টান করেন। এ সময় মহসিন ইলিয়াসকে বড় মাথায় বাড়ি মারেন, বাড়ি লক্ষভ্রষ্ট হয়ে কানের নিচে পরে কান কেটে যায়। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও যুবদলের সভাপতি ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

 

পরে ইলিয়াস বানারীপাড়া মেডিকেলে ভর্তি হলে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ মৃধা ও যুবদলের সদস্য সচিব মিজান ফকির, সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাইদুল ইসলামসহ বিএনপির নেতাকর্মী এসে শুক্রবার তিনটার সময় আউয়ার বসে মীমাংসা করার কথা বলে বাড়ি চলে যেতে বলে।

 

কিন্তু শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকালে মহসিন বিগত সরকারের আমলে পুরোনো কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ গুজব ছড়িয়ে দেয়।  উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব রিয়াজ আহমেদ মৃধা ও যুবদলের সদস্য সচিব মিজান ফকির, সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাইদুল ইসলামের কথা অমান্য করে মামলা করে ইলিয়াসসহ সাধারণ জেলেদের নামে মামলা করেন।

 

ভুক্তভোগী ৬নং ওয়ার্ডের জেলে স্থানীয় নুর হোসেন, মনির বেপারি, সাইদুল ফকিরের স্ত্রী, নুরুদ্দিন ও আবুবকর জানান, আমরা গরিব মানুষ। সরকারি বরাদ্দকৃত চাল নিয়ে বাড়ি যাওয়ার সময় মহসিনের নেতৃত্বে ১২-১৫ জনের একটি বাহিনী দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা করে চাল ছিনিয়ে নেয়।

 

স্থানীয় ইউপি স্বেচ্ছাসেবক নেতা ইলিয়াস জানান, তিনি ৬ নং ওয়ার্ডের লোক হওয়ায় প্রকৃত কার্ডধারী জেলরা যাতে চাল পায় সে জন্য তাকে দলীয় প্রতিনিধিত্ব করতে বলা হয়। মহসিন অন্য ওয়ার্ডের লোক, সে চাল বিতরণকালে সাধারণ জেলেদের কাছে চাঁদা দাবি করে। এ সময় ইলিয়াস  প্রতিবাদ জানালে মহসিন তার দলবলসহ তার ওপর হামলা চালান বলে জানান তিনি।

 

৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য পনিরুজ্জামান জানান, ৬ নং ওয়ার্ডের চাল বিতরণকালে তার সঙ্গে ইলিয়াস সহায়তা করছিলেন। এ সময় ইউপি যুবদলের সদস্য সচিব এসে খবরদারি করেন। তিনি কোন ৬নং ওয়ার্ডের লোক কি না জানতে চাইলে তিনি জানান, মহসিন ৬নং ওয়ার্ডের লোক নয়। তবে মহসিনের নেতৃত্বে ১২-১৫ জন এ সময় ইলিয়াসের ওপর হামলা করেন বলেন জানান তিনি।

স্থানীয় ইউপি যুবদলের সভাপতি রহমান জানান,

৬ নং ওয়ার্ডের চাল বিতরণকালে যে হামলা হয়েছে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। গরিব জেলেদের চাল বিতরণে দলীয় কোনো নেতাদের যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তবে প্রকৃতি জেলেরা যাতে সুবিধারভোগী হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের একজন প্রতিনিধি থাকার কথা। সেক্ষেত্রে ইলিয়াস  ওখানে ছিল। আপনার কমিটিসদস্য সচিব মহসিন কেন ওখানে গেছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, সেটা মহসিনই ভালো বলতে পারবেন। তবে মহসিনের যাওয়ার কথা নয়। মহসিন যাওয়ার কারণে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে এবং দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

পরবর্তী মহসিনের ওষুধের দোকানে ভাঙচুরের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, মহসিনের ওষুধের দোকানে বিএনপির বানারীপাড়ার অভিবাবক সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুকে নিয়ে ফেসবুকে বাজে মন্তব্য করা করফাকরের সালাম ও ছোট মহসিন বসেছিলেন। তাদের সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীদের সংঘাতের কারণে দোকানটির মালামাল তছনয় হয়।

 

স্থানীয় ইউপি বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিক খান জানান,  ৬ নং ওয়ার্ডের চাল বিতরণকালে হামলার ঘটনা ঘটেছে। মহসিন ৬ নং ওয়ার্ডের লোক কিনা কিংবা তিনি কেন ওখানে গেছেন জানতে চাইলে রফিক খান জানান, তিনি ওই ওয়ার্ডের লোক নন। মহসিন ওখানে কেন গেছেন,  সে নিজেই ভালো বলতে পারবেন। তবে তার ওখানে যাওয়ার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এবং এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

 

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মহসিনের মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোনে বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

 

এসব বিষয় জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব রিয়াজ মৃধা বলেন, সৈয়দকাঠী ইউনিয়নে যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে স্থানীয় ইউপি যুবদলের সদস্য সচিব কেন হামলা করেছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের লোক ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদে কোনো দলীয় নেতাকর্মীর যাওয়ার কথা নয়। তবে মহসীন কেনইবা ওখানে গেল এবং কেন দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করল, তা সে-ই ভালো বলতে পারবে। তবে ইলিয়াস সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের বলে তার থাকার বিষয়টি খারাপভাবে দেখার কোনো কারণ দেখছি না। এ বিষয়ে আপনাদের দলীয় সিদ্ধান্ত কী জী জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টির প্রকৃত কারণ উদঘাটন করে দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বানারীপাড়া বিএনপির অভিভাবক সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুকে বিষয় অবগত করা হয়েছে।

যুবদল নেতার নেতৃত্ব জেলেদের চাল ছিনিয়ে নেওয়াসহ চাঁদাবাজি ও হামলার অভিযোগ
বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি

বরিশালে বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠী ইউপিতে জেলেদের সরকারি চাল বরাদ্দ নিয়ে যুবদল নেতার নেতৃত্বে চাঁদাবাজি, গরিব মানুষের চাল ছিনিয়ে নেওয়াসহ হামলার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। সৈয়দকাঠী ইউপির আউয়ার বাজারে গত বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ঘটে।

জানা যায়, সৈয়দকাঠী ইউপির ৬নং ওয়ার্ডের জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল বিতরণকালে ইউপি যুবদলের সদস্য সচিব মো. মহসিন (স্থানীয় ফার্মেসি দোকানদার) উক্ত ওয়ার্ডের জেলেদের কাছে প্রতিটি কার্ডের বিনিময়ে চাঁদা দাবি করে। এ সময় সাধারণ জেলেদের হুমকি-ধমকি দিয়ে কিছু জেলের কাছ থেকে চাল কেড়ে নেয় এবং সাধারণ জেলেদের মারধরের করে।

বানারীপাড়া উপজেলাধীন ৩নং সৈয়দকাঠী ইউনিয়নে মোট জেলে ৮৩০ জন। তার মধ্যে সরকার ৫১৯ জন মানুষকে ৪০ কেজি করেচাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। জেলে কার্ড অনুসারে ৬নং ওয়ার্ডে (মসজিদ বাড়ি) ১৬৮ জন চাল পায়। সেভাবেই দেয়া হইছিল কিন্তু সন্ত্রাসী মহসিন এসে ইউপি সদস্য পনিরুজ্জামান হুমকি-ধমকি দিয়ে বলে এত চাল মসজিদবাড়ি দেয়া যাবে না। এ বিষয় নিয়ে ৬ নং ইউপি সদস্য পনিরুজ্জামানকে চাপ সৃষ্টি করে বলে ‘এত চাল মসজিদবাড়ি দেয়া যাবে না। চাল আমাকে দিতে হবে।’ এ সময় স্থানীয় বিএনপি ত্যাগী কর্মী বলে ইলিয়াস বলে, ‘জেলে মসজিদবাড়ি বেশি, সেই অনুসারে ১৬৮ জন চাল পাচ্ছে।’
এর পরে মহসিনের নেতৃত্বে সাগর, বাবু, আরিফ আরো না চেনা ২০-২৫ সন্ত্রাসী তাদের হাতে চাকু, হাতুরি ও শিকলসহ নিয়ে ইলিয়াসসহ সাধারণ জেলেদের ওপর হামলা চালায়। এতে ইলিয়াসের মাথা ও কানের নিচে কেটে যায়। এ সময় সাধারণ লোকজন এসে অনেক চেষ্টার পরে ইলিয়াসকে ছাড়িয়ে নিয়ে পরিষদের রুমের ভিতরে নিয়ে যায়।

অপরদিকে, সরকারি বরাদ্দকৃত চাল নিয়ে যাবার সময় স্থানীয় নুর হোসেন, মনির বেপারি, সাইদুল ফকিরের স্ত্রী, নুরুদ্দিন, আবুবকরসহ ১৪-২৫ জনের চাল ছিনিয়ে নিয়ে যায় মহসিনের সন্ত্রাসী বাহিনী। চাল ছিনিয়ে নেওয়ার সময় আবুবকরকে রড দিয়ে বাড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। পল্লী চিকিৎসক সমিরন হালদার তার হাতে তিনটি সেলাই দিয়ে চিকিৎসা করেন। এই ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিক যুবদল নেতা রহমান হাওলাদর ছুটে এসে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হবে বলে আশ্বাস দেন। স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপি ফোনে ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের হবে আশ্বস্ত করেন।
পরে সন্ধ্যায় যে জেলেদের চাল মারধর করে রাখা হয় তারাসহ মসজিদ বাড়ির লোকজন আউয়ারে আসেন। কিন্তু ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম আসতে দেরি হবার কারণে এবং নামাজের সময় হওয়ার জন্য পরে বসে সমাধান করে দিবে বলে সবাইকে চলে যেতে বলেন। সবাই চলে যাবার পথে মহসিনের সঙ্গে ভুক্তভোগী জেলেদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়।
বানারীপাড়ার অভিবাবক সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুকে নিয়ে ফেসবুকে বাজে মন্তব্য করা করফাকরের সালাম ও ছোট মহসিন বসেছিলেন।
তারাসহ মহসিন তার দোকানে থাকা রড দিয়ে আবারও আঘাত করলে উত্তেজিত জনতা তার ওপর চড়াও হয়। ধাক্কাধাক্কিতে ওর ফার্মেসির ওষুধপত্র ফ্লোরে পরে যায়। পরে ইলিয়াস শুনতে পেরে উত্তেজিত জনতাকে থামাতে চেষ্টান করেন। এ সময় মহসিন ইলিয়াসকে বড় মাথায় বাড়ি মারেন, বাড়ি লক্ষভ্রষ্ট হয়ে কানের নিচে পরে কান কেটে যায়। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও যুবদলের সভাপতি ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

পরে ইলিয়াস বানারীপাড়া মেডিকেলে ভর্তি হলে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ মৃধা ও যুবদলের সদস্য সচিব মিজান ফকির, সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাইদুল ইসলামসহ বিএনপির নেতাকর্মী এসে শুক্রবার তিনটার সময় আউয়ার বসে মীমাংসা করার কথা বলে বাড়ি চলে যেতে বলে।

কিন্তু শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকালে মহসিন বিগত সরকারের আমলে পুরোনো কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ গুজব ছড়িয়ে দেয়। উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব রিয়াজ আহমেদ মৃধা ও যুবদলের সদস্য সচিব মিজান ফকির, সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাইদুল ইসলামের কথা অমান্য করে মামলা করে ইলিয়াসসহ সাধারণ জেলেদের নামে মামলা করেন।

ভুক্তভোগী ৬নং ওয়ার্ডের জেলে স্থানীয় নুর হোসেন, মনির বেপারি, সাইদুল ফকিরের স্ত্রী, নুরুদ্দিন ও আবুবকর জানান, আমরা গরিব মানুষ। সরকারি বরাদ্দকৃত চাল নিয়ে বাড়ি যাওয়ার সময় মহসিনের নেতৃত্বে ১২-১৫ জনের একটি বাহিনী দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা করে চাল ছিনিয়ে নেয়।

স্থানীয় ইউপি স্বেচ্ছাসেবক নেতা ইলিয়াস জানান, তিনি ৬ নং ওয়ার্ডের লোক হওয়ায় প্রকৃত কার্ডধারী জেলরা যাতে চাল পায় সে জন্য তাকে দলীয় প্রতিনিধিত্ব করতে বলা হয়। মহসিন অন্য ওয়ার্ডের লোক, সে চাল বিতরণকালে সাধারণ জেলেদের কাছে চাঁদা দাবি করে। এ সময় ইলিয়াস প্রতিবাদ জানালে মহসিন তার দলবলসহ তার ওপর হামলা চালান বলে জানান তিনি।

৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য পনিরুজ্জামান জানান, ৬ নং ওয়ার্ডের চাল বিতরণকালে তার সঙ্গে ইলিয়াস সহায়তা করছিলেন। এ সময় ইউপি যুবদলের সদস্য সচিব এসে খবরদারি করেন। তিনি কোন ৬নং ওয়ার্ডের লোক কি না জানতে চাইলে তিনি জানান, মহসিন ৬নং ওয়ার্ডের লোক নয়। তবে মহসিনের নেতৃত্বে ১২-১৫ জন এ সময় ইলিয়াসের ওপর হামলা করেন বলেন জানান তিনি।
স্থানীয় ইউপি যুবদলের সভাপতি রহমান জানান,
৬ নং ওয়ার্ডের চাল বিতরণকালে যে হামলা হয়েছে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। গরিব জেলেদের চাল বিতরণে দলীয় কোনো নেতাদের যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তবে প্রকৃতি জেলেরা যাতে সুবিধারভোগী হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের একজন প্রতিনিধি থাকার কথা। সেক্ষেত্রে ইলিয়াস ওখানে ছিল। আপনার কমিটিসদস্য সচিব মহসিন কেন ওখানে গেছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, সেটা মহসিনই ভালো বলতে পারবেন। তবে মহসিনের যাওয়ার কথা নয়। মহসিন যাওয়ার কারণে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে এবং দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।
পরবর্তী মহসিনের ওষুধের দোকানে ভাঙচুরের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, মহসিনের ওষুধের দোকানে বিএনপির বানারীপাড়ার অভিবাবক সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুকে নিয়ে ফেসবুকে বাজে মন্তব্য করা করফাকরের সালাম ও ছোট মহসিন বসেছিলেন। তাদের সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীদের সংঘাতের কারণে দোকানটির মালামাল তছনয় হয়।

স্থানীয় ইউপি বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিক খান জানান, ৬ নং ওয়ার্ডের চাল বিতরণকালে হামলার ঘটনা ঘটেছে। মহসিন ৬ নং ওয়ার্ডের লোক কিনা কিংবা তিনি কেন ওখানে গেছেন জানতে চাইলে রফিক খান জানান, তিনি ওই ওয়ার্ডের লোক নন। মহসিন ওখানে কেন গেছেন, সে নিজেই ভালো বলতে পারবেন। তবে তার ওখানে যাওয়ার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এবং এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মহসিনের মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোনে বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এসব বিষয় জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব রিয়াজ মৃধা বলেন, সৈয়দকাঠী ইউনিয়নে যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে স্থানীয় ইউপি যুবদলের সদস্য সচিব কেন হামলা করেছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের লোক ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদে কোনো দলীয় নেতাকর্মীর যাওয়ার কথা নয়। তবে মহসীন কেনইবা ওখানে গেল এবং কেন দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করল, তা সে-ই ভালো বলতে পারবে। তবে ইলিয়াস সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের বলে তার থাকার বিষয়টি খারাপভাবে দেখার কোনো কারণ দেখছি না। এ বিষয়ে আপনাদের দলীয় সিদ্ধান্ত কী জী জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টির প্রকৃত কারণ উদঘাটন করে দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বানারীপাড়া বিএনপির অভিভাবক সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুকে বিষয় অবগত করা হয়েছে।



মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।